বেঙ্গালুরু: পাঠ্যবইয়ে ইতিহাস বিকৃত করার অভিযোগ উঠছে বেশ কয়েক বছর ধরেই। এ বার ইতিহাসকে অতিরঞ্জিত, এমনকি কল্পকথা করে তোলার অভিযোগ উঠল কর্নাটকে (Karnataka Text Book Row)। সেখানে অষ্টম শ্রেণির ইতিহাস বইটি সংশোধন করে তাতে বিনায়ক দামোদর সাভরকরকে (Vinayak Damodar Savarkar) নিয়ে লেখা ঢোকানো হয়েছে বলে অভিযোগ। শুধু তাই নয়, অভিযোগ উঠছে, আন্দামান জেল (Andaman Cellular Jail) থেকে পাখির ডানায় চেপে সাভারকর মাতৃভূমি দেখতে আসতেন বলেও দাবি করা হয়েছে ইতিহাসের বইয়ে।
ইতিহাস বইয়ের পাতায় সাভারকরকে নিয়ে অতিরঞ্জিত কাহিনি!
স্থানীয় ভাষায় লেখা ইতিহাসের (History Book) পাতা থেকে সাভারকরকে নিয়ে লেখার অংশটুকু সামনে এসেছে, বাংলায় যার তর্জমা করলে দাঁড়ায়, ‘জেলের যে কুঠুরিতে বন্দি কের রাখা হয়েছিল সাভারককে, তাতে চাবি ঢোকানোর ছিদ্রটুকুও ছিল না। কিন্তু বুলবুলি পাখির দল ওই কুঠুরিতে পৌঁছে যেত। তাদের ডানায় বসে প্রতিদিন জেল থেকে উড়ে যেতে সাভারকর। দেখতে আসতেন মাতৃভূমিকে।’’
বিষয়টি সামনে আসতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে চারিদিকে। বেঙ্গালুরু সরকারে পাঠ্যবই সংশোধন কমিটির মাথায় ছিলেন রোহিত চক্রতীর্থ। তাঁর নেতৃত্বাধীন কমিটিই অষ্টম শ্রেণির ইতিহাস বইয়ে সাভারকরকে নিয়ে লেখা অংশটুকু ঢুকিয়েছে এবং তার মধ্যেই বুলবুলি পাখির ডানায় চেপে সাভারকরের ওড়ার গল্প বর্ণিত হয়েছে বলে অভিযোগ।
এ নিয়ে ইতিমধ্যেই সরব হয়েছে বিভিন্ন মহল। কর্নাটক টেক্সবুক সোসাইটির কাছে ইতিমধ্যে অভিযোগও জমা পড়েছে। আন্দামানের সেলুলার জেলে সাভারকর কী অবস্থায় ছিলেন, লেখক কেটি গাট্টি তাঁকে কী অবস্থায় দেখেছিলেন, ভ্রমণকাহিনী হিসেবে তা তুলে ধরা হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে কর্নাটক টেক্সবুক সোসাইটি।
ভারতীয় স্বাধীনতার ইতিহাসে বিতর্কিত চরিত্র সাভারকর
ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে সাভারকরের ভূমিকা অত্যন্ত বিতর্কিত। জেলে বসে ইংরেজ সরকারের কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা, দাসত্বের অঙ্গীকার এবং স্বাধীনতা সংগ্রাম থেকে দূরে থাকার প্রতিশ্রুতিতে ভরা তাঁর চিঠি পাওয়া যায় ইতিহাসে। মহাত্মা গাঁধীর হত্যাকারী নাথুরাম গডসের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক নিয়েও বিস্তর কাটাছেঁড়া হয়েছে। এমনকি গাঁধী হত্যায় অন্যতম ষড়যন্ত্রকারী হিসেবেও নাম ওঠে সাভারকরের। প্রমাণের অভাবে যদিও পরে মুক্তি পান।