নয়াদিল্লি: কেন্দ্রের ন্যাশনাল মনিটাইজেশন পাইপলাইন (এনএমপি) বা জাতীয় নগদিকরণ পরিকল্পনার তীব্র সমালোচনা করলেন রাহুল গাঁধী। কংগ্রেস সাংসদের অভিযোগ, দেশের সম্পত্তি বিক্রি করে ২-৩ জন বেসরকারি সংস্থাকে লাভ পাইয়ে দেওয়া হচ্ছে। তাঁর আরও অভিযোগ, দেশের অর্থনীতির অপশাসন ঢাকতেই এখন সরকারি সম্পত্তির বেসরকারিকরণ করা হচ্ছে। 


নগদীকরণের পরিকল্পনা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকারকে তীব্র আক্রমণ করে রাহুল বলেন, এর ফলে "মাত্র কয়েকটি ব্যবসা বাকি থাকবে" এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ কমে যাবে। কংগ্রেস সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমি তরুণদের বলতে চাই দেশ কী বিক্রি করছে এবং কোন সম্পদ কার কাছে যাচ্ছে। 


নগদীকরণের পথে যেতে চলা বিভিন্ন পরিকাঠামো দিকগুলির একটি তালিকা প্রকাশ করেন রাহুল। তিনি বলেন, ২-৩টি বেসরকারি সংস্থার কাছেই এগুলি বিক্রি করা হবে। আমি করোনা নিয়ে যখন বলেছিলাম, আপনারা তখন হাসাহাসি করেছিলেন। এখন আবারও বলছি, এর ফলে দেশের ভবিষ্যতের ওপর প্রচণ্ড প্রভাব পড়বে।


শুধু কংগ্রেস নয়, কেন্দ্রের তীব্র সমালোচনা করেছে তৃণমূলও। সাংসদ ও জাতীয় মুখপাত্র সুখেন্দুশেখর রায় বলেন, বিরোধিতা করছি, এই আর্থিক সংস্কার জনগনের কোনও সায় নেই, ইস্তাহারে কিছু উল্লেখ ছিল না। সংসদে আলোচনা হয়নি। অর্থমন্ত্রকের সংসদীয় পরামর্শদাতা কমিটিতে হয়নি। নীতি আয়োগ কোনও সংবিধানিক সংস্থা নয়। এটি একটি সরকার ঘোষিত সংস্থা। ১৪০ কোটি মানুষের দেশে, সমস্ত সম্পত্তি বেসরকারি হাতে চলে যাবে ক্রমশ, এটা প্রথম ধাপ বলা যেতে পারে। ২০২৪-এ শেষ হয়ে যাবে। জনগন ঠিক করবে কোন সরকার আসবে।


মালিক থাকবে কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু পরিচালনা করবে বেসরকারি সংস্থা। কার্যত এই পদ্ধতিতে অবলম্বন করেই সোমবার ‘ন্যাশনাল মনিটাইজেশন পাইপলাইন’ বা এনএমপি-র ঘোষণা করেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী বলেন, কেবলমাত্র অব্যবহৃত এবং কম ব্যবহৃত বৃহৎ সরকারি সম্পত্তি (ব্রাউন ফিল্ড)-কেই পাইপলাইনের আওতায় আনা হবে। এ জন্য বেসরকারি অংশগ্রহণের আহ্বান জানানো হয়েছে। নির্দিষ্ট সময় পর সরকারকে সম্পত্তি ফিরিয়ে দিতে হবে সংশ্লিষ্ট বেসরকারি সংস্থাকে।


মোদি সরকারের এই ঘোষণা নিয়ে তোলপাড় জাতীয় রাজনীতি। কেন্দ্রের ঘোষণা অনুযায়ী এনএমপি-র আওতায় পড়ছে -- রেল, জাতীয় সড়ক, বিদ্যুত্‍ উত্‍পাদন, টেলিকম-সহ একাধিক ক্ষেত্র। ২৫টি বিমানবন্দর, ৪০টি রেলওয়ে স্টেশন এবং ১৫টি রেলওয়ে স্টেডিয়াম-- সহ একাধিক প্রতিষ্ঠানকে বেসরকারি বিনিয়োগ পেতে চিহ্নিত করা হয়েছে। সরকারি সম্পদকে বেসরকারি ভাবে ব্যবহারের এই রাস্তা খুলে দিয়ে, ৪ বছরে প্রায় ৬ লক্ষ কোটি টাকা আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করেছে মোদি সরকার।