নয়াদিল্লি: ইজরায়েলি সংস্থাকে দিয়ে বিশ্বে ট্যাপ করা হয়েছে ৫০ হাজারের বেশি ফোন। পেগাসাস স্পাইওয়্যারকে হাতিয়ার করে আড়ি পাতা হয়েছে ১৮০ জন সাংবাদিকের ফোনে। চাঞ্চল্যকর এই রিপোর্ট গতকাল প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ সংবাদপত্র ‘দ্য গার্ডিয়ান’। 


কীভাবে কাজ করে এই স্পাইওয়্যার, সেই সম্পর্কে জানিয়েছেন সাইবার বিশেষজ্ঞরা। ‘দ্য গার্ডিয়ান’-এর রিপোর্টে বলা হয়েছে, পেগাসাস স্পাইওয়্যার এক ধরনের ম্যালওয়্যার। 


যা যে কোনও আইফোন বা অ্যান্ড্রয়েড ফোন থেকে মেসেজ, ফোটো, ইমেল, কল রেকর্ড, চ্যাট হাতিয়ে নিতে পারে। এমনকী গোপনে চালু করে দিতে পারে ফোনের মাইক্রোফোন ও ক্যামেরা। একসঙ্গে একাধিক ব্যক্তির ফোনে নজরদারি চালাতে পারে এটি।  


ইজরায়েলি সংস্থা এনএসও গ্রুপের দাবি, মূলত জঙ্গি ও অপরাধীদের ওপর নজরদারিতে ব্যবহৃত হয় পেগাসাস স্পাইওয়্যার। সেই উদ্দেশ্যেই তা বিক্রি করা হয় সরককারকে। 


‘দ্য গার্ডিয়ান’-এর চাঞ্চল্যকর রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, ইজরায়েলি সংস্থা এনএসও গ্রুপ অন্তত ৪০টি দেশের সরকারকে পেগাসাস স্পাইওয়্যার বিক্রি করেছে। যে সব ফোনে আড়ি পাতা হয়েছে, তাদের মধ্যে সব থেকে বেশি নম্বর রয়েছে ভারত, হাঙ্গেরি, সংযুক্ত আরব আমিরশাহী সহ ১০টি দেশের। 


ওই সব ফোনের তালিকা প্রথমে হাতে আসে একটি ফরাসি সংস্থা এবং অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের। পরে দেওয়া হয় ‘দ্য ওয়্যার’, ‘দ্য গার্ডিয়ান’, ‘দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট’-এর মতো ১৬টি সংবাদ প্রতিষ্ঠানের হাতে। শুরু হয় কোলাবোরেটিভ ইনভেস্টিগেশন। 


হাতে আসা ১ হাজার ৫৭১টি ফোন নম্বরের মধ্যে পেগাসাস স্পাইওয়্যার আছে কিনা তার ফরেন্সিক পরীক্ষা করা হয়।  ভারতে যে ১৩টি আইফোন পরীক্ষা করা হয়, তার ৯টিতে আড়িপাতার প্রমাণ মেলে। ৭টির মধ্যে স্পাইওয়্যারের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। 


অন্যদিকে, নিউজ ওয়েবসাইট ‘দ্য ওয়্যার’ লিখেছে, ২০১৮ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে ভারতের ৩০০-র বেশি ভেরিফায়েড ফোন নম্বর ট্যাপ করা হয়েছে। আড়ি পাতা হয়েছে ৪০ জনেরও বেশি সাংবাদিকের ফোনে। 


পাশাপাশি, ২০১৭ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে ভারতের বিভিন্ন চর্চিত মামলার সঙ্গে যুক্ত আইনজীবী, তাঁদের পরিচিত ও আত্মীয়দের নম্বরেও আড়ি পাতা হয়। 


রিপোর্টে প্রকাশ, কয়েকটি ক্ষেত্রে ফোনে আড়ি পাতার জন্য পেগাসাস পাঠানো হয়েছে এসএমএস , হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ বা অন্যান্য লিঙ্কের মাধ্যমে। শুধু মোবাইল ফোন নয়, পেগাসাস ঢোকানো হয়েছে অনেক ল্যাপটপেও।