নয়া দিল্লি : ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় গতকাল রাহুল গাঁধীকে (Rahul Gandhi) ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদ করে ED (Enforcement Directorate)। দু’দফায় তাঁকে ১০ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করেন অফিসাররা। আজ ফের রাহুল গাঁধীকে তলব করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর।


প্রথম দফায় ৩ ঘণ্টা, দ্বিতীয় দফায় ৭ ঘণ্টা। ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধীকে দু’দফায় ১০ ঘণ্টার বেশি জিজ্ঞাসাবাদ করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। এদিকে সোমবার রাহুল গাঁধীর ইডি দফতরে হাজিরাকে হাতিয়ার করে পথে নামে কংগ্রেস। মোদি সরকারের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অভিযোগ তুলে চলে অবস্থান-বিক্ষোভ। পুলিশি ধরপাকড় ঘিরে রাজধানীর রাস্তায় রণক্ষেত্র পরিস্থিতি তৈরি হয়। সকাল থেকেই রাহুল গাঁধীর বাসভবন, কংগ্রেস দফতর এবং ইডি দফতরের বাইরে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়।


রাহুলকে তলব, কংগ্রেসের বিক্ষোভ-


সোমবার, সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ, রাহুল গাঁধীর বাসভবনে পৌঁছন প্রিয়ঙ্কা গান্ধী। সেখানে থেকে দু’জনে এসে পৌঁছন কংগ্রেসের দফতরে। কংগ্রেসের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে মিছিল করে, হেঁটে ED’র দফতরের দিকে রওনা দেন রাহুল। কিন্তু, কিছুটা দূরেই মিছিল আটকে দেয় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের অধীনস্থ দিল্লি পুলিশ। শুরু হয় ধস্তাধস্তি। কংগ্রেস কর্মীদের টেনে হিঁচড়ে পুলিশ ভ্যান ও বাসে তোলা হয়। পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে পি চিদম্বরমের পাঁজরের হাড়ে চিড় ধরেছে বলে কংগ্রেস নেতৃত্বের দাবি। কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক রণদীপ সুরজেওয়ালা বলেন, চিদম্বরমের হাড় ভেঙেছে। ২০১৫ সালে ইডি এই মামলা বন্ধ করেছিল। এখন বিজেপির কাছে কিছু না থাকায়, ভিতু মোদি সরকার এই ধরনের অঘোষিত জরুরি অবস্থা জারি করছে।


প্রিয়ঙ্কা গাঁধীর সঙ্গে গাড়িতে করে ED’র দফতরে পৌঁছন রাহুল গাঁধী। এরপর প্রথম দফায় জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়। মধ্যাহ্নভোজের বিরতিতে, ইডি অফিস থেকে বেরিয়ে, হাসপাতালে ভর্তি সনিয়া গাঁধীর সঙ্গে দেখা করতে যান রাহুল। তারপর আবার ইডি দফতরে ফিরে যান। শুরু হয় দ্বিতীয় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ।


সূত্রের খবর, ED’র অফিসাররা রাহুল গাঁধীর কাছে জানতে চান, ইয়ং ইন্ডিয়ান কোম্পানি তৈরির সিদ্ধান্ত কে নিয়েছিলেন ? কোম্পানি তৈরির বিষয়ে যে বৈঠক হয়েছিল, সেখানে কি রাহুল গাঁধী উপস্থিত ছিলেন ? ইয়ং ইন্ডিয়ান কোম্পানির ক’টি বৈঠকে তিনি উপস্থিত ছিলেন ? কোথায় কোথায় তাঁর সম্পত্তি রয়েছে ? বিদেশে তাঁর কোনও সম্পত্তি আছে কিনা। ইয়ং ইন্ডিয়ান কোম্পানিতে তিনি কীভাবে ডিরেক্টর হয়েছিলেন ? তিনি কীভাবে শেয়ার কিনেছিলেন ? শেয়ার কেনার জন্য টাকা দিয়ে থাকলে তা, কোন অ্যাকাউন্ট থেকে এবং কীভাবে দিয়েছিলেন ? 


এপ্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় মহিলা ও শিশু কল্যাণমন্ত্রী স্মৃতি ইরানি বলেন, কংগ্রেসের তরফে যে প্রতিরোধ করা হচ্ছে, এটা দেশের গণতন্ত্র নয়। কংগ্রেসের গাঁধী পরিবারের ২ হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি বাঁচানোর প্রয়াস।


এপ্রসঙ্গে তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেন, ইডি কেন্দ্রের হাতিয়ার। বিরোধীদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করার অস্ত্র। আগে আমাদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করেছে। এখন কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ব্যবহার করছে। রাহুল তো গেছেন। তবে সন্দেহ আছে, তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগের কোনও সারবত্তা আছে কি না।


১০ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রাতে ED’র অফিস থেকে বের হন রাহুল। সূত্রের খবর, মঙ্গলবার ফের তাঁকে ডেকে পাঠিয়েছে ইডি।