কলকাতা : কয়লাকাণ্ডে সশরীরে হাজিরা দিতেই হবে রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। জানাল পাতিয়ালা হাউস কোর্ট। হাজিরাতে ছাড় চেয়েছিলেন রুজিরা, তাতে অনুমোদন দিল না আদালত। ১২ অক্টোবর সশরীরে হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
আজ ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে হাজিরা দেন রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়। কোভিড-আবহে ছোট বাচ্চাদের ছেড়ে আসতে পারবেন না দিল্লিতে, তাই ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে হাজিরা, আদালতে জানান রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়। জামিনযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির দাবি জানিয়েছেন ইডি-র আইনজীবী।
এর আগে গত মঙ্গলবার কয়লাকাণ্ডে দিল্লি হাইকোর্টে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর স্ত্রী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়ের করা মামলার শুনানি ছিল। আর এদিন সেই সমন খারিজ মামলাতেই ওঠে নারদকাণ্ডে কলকাতায় তৃণমূলের হেভিওয়েট নেতামন্ত্রীদের গ্রেফতারি প্রসঙ্গ। গ্রেফতারের পর CBI অফিসে মুখ্যমন্ত্রীর পৌঁছে যাওয়ার প্রসঙ্গও টেনে আনলেন সলিসিটার জেনারেল।
এর আগে এই মামলায় তদন্তে সহযোগিতার কথা জানিয়ে, অভিষেক ও রুজিরার আইনজীবী কপিল সিব্বল দাবি করেন, ' তাঁরা শুধুমাত্র জিজ্ঞাসাবাদের জায়গা নিয়ে আবেদন করছেন, অন্য কিছু নয়। ইডি চাইলে, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর স্ত্রীকে কলকাতায় কিংবা ভার্চুয়ালিও জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারেন। ' এদিন দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি যোগেশ খান্নার এজলাসে শুনানির শুরুতেই, এ প্রসঙ্গে ED-র বক্তব্য জানতে চান বিচারক। উত্তরে সলিসিটার জেনারেল বলেন, ' তাঁরা সমনকে চ্যালেঞ্জ করছেন, আবার বলছেন, তদন্ত থামাতে চাইছেন না? ' উত্তরে অভিষেক-রুজিরার আইনজীবী কপিল সিব্বল বলেন, ' অভিযুক্ত হিসেবে, না সাক্ষী হিসেবে সমন করা হচ্ছে, সেটাই তাঁর মক্কেলরা জানেন না। আপনারা বাড়িতে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারেন। আমরা আপনাদের তদন্তের অধিকারকে চ্যালেঞ্জ করছি না। এমনকি মক্কেলদের বিরুদ্ধে কোনও প্রমাণ থাকলে, আপনি গ্রেফতারও করতে পারেন। আমি গ্রেফতারি এড়াতে কোনও রক্ষাকবচ চাইছি না। '
আরও পড়ুন :
ভবানীপুরে ধাক্কাধাক্কি, উত্তেজনা ! বুথের মধ্যে ভুয়ো ভোটার, অভিযোগ বিজেপির
আদালতে এদিন নথি দেখিয়ে সিব্বল দাবি করেন, ' দেশজুড়েই ED-র অফিস রয়েছে। কলকাতাতেও অফিস রয়েছে। কাল ওরা আমার মক্কেলদের মুম্বই অথবা পাঞ্জাবেও ডেকে পাঠাতে পারে।' এর পাল্টা হিসেবে, গত ১৭মে, নারদকাণ্ডে কলকাতায় তৃণমূলের হেভিওয়েট নেতামন্ত্রী বিধায়কদের CBI-এর হাতে গ্রেফতারের প্রসঙ্গ টেনে আনেন সলিসিটার জেনারেল। দাবি করেন, সেদিন CBI অফিস ঘেরাও হয়েছিল। পাথর ছোড়াও হয়। মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীও সেখানে যান। অভিষেক-রুজিরার আইনজীবী তখন বলেন, 'একজনের একাধিক ঠিকানা থাকতে পারে। কিন্তু, স্থায়ী ঠিকানা একটাই। আমার মক্কেল কলকাতার স্থায়ী বাসিন্দা। সমন জারি করে তার দু’দিন পরই হাজিরা দিতে বলে চাপসৃষ্টি করা হচ্ছে। এমনকি সমন মক্কেলের কাছে পৌঁছনোর আগেই তা সংবাদমাধ্যমে ফাঁস হয়ে যাচ্ছে। '
এখানেই সেদিন, দু’পক্ষের সওয়াল-জবাব শেষ হয়।