মুম্বই: শিবসেনার (Shiv Sena) হাতে মুখ্যমন্ত্রিত্ব থাকলেই হল। বিদ্রোহ যখন চরমে, সেই সময় সপ্তাহখানেক আগে এমন মন্তব্য করেছিলেন উদ্ধব ঠাকরে (Uddhav Thackeray)। তাঁর কথাই বজায় থাকল। দেবেন্দ্র ফড়ণবীস (Devendra Fadnavis) নন, মহারাষ্ট্রের নতুন মুখ্যমন্ত্রী হলেন উদ্ধবের বিরুদ্ধে বিদ্রোহে নেতৃত্ব দেওয়া একনাথ শিণ্ডে  (Eknath Shinde)। বৃহস্পতিবার রাজভবনে সরকার গঠনের প্রস্তাব জমা দেওয়ার পর নয়া মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তাঁর নাম ঘোষণা করলেন ফড়ণবীস। সন্ধে সাড়ে ৭টায় শপথ নেবেন শিণ্ডে।


শিন্ডে সরকারের মন্ত্রি হচ্ছেন না ফড়ণবীস


বৃহস্পতিবার বিকেলে শিণ্ডেকে সঙ্গে নিয়েই রাজভবনে যান ফড়ণবীস। সেখানে রাজ্যপাল ভগৎ সিংহ কোশিয়ারি তাঁদের মিষ্টিমুখও করান। এর পর সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন ফড়ণবীস এবং শিণ্ডে। সেখানে ফড়ণবীস বলেন, "বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি-শিবসেনা জোট ভোটে জিতেছিল। মানুষ চেয়েছিলেন শিবসেনা-বিজেপির সরকার। শিবসেনা বিজেপি-র সঙ্গে সরকার গঠনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। এমভিএ সরকার রাজ্যের উন্নয়নও করেনি।"


হিন্দুত্বের প্রশ্নে, বালাসাহেব ঠাকরের আদর্শের কথা মাথায় রেখেই শিণ্ডেকে বিজেপি সমর্থনের সিদ্ধান্ত নেয় বলেও জানান ফড়ণবীস। তিনি বলেন, "মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন একনাথ শিণ্ডে। একনাথ শিণ্ডেকে সমর্থন করবে বিজেপি। মহারাষ্ট্রকে নেতৃত্ব দেবেন একনাথ শিণ্ডে।" তবে শিবসেনার বিদ্রোহের নেপথ্য নায়ক হিসেবে ফড়ণবীসকে ধরা হলেও, শিণ্ডের মন্ত্রিসভায় যোগ দিচ্ছেন না তিনি। বৃহস্পতিবার শুধুমাত্র শিণ্ডেই শপথ নেবেন। 


মহারাষ্ট্রের মসনদে শিবসেনাই


এখনও পর্যন্ত যে খবর মিলেছে, সেই অনুযায়ী, মহারাষ্ট্রে বিজেপি-র সভাপতি চন্দ্রকান্ত দাদা পাটিল, দলের বর্ষীয়ান নেতা সুধীরমুঙ্গনতিওয়ার, গিরীশ মহাজন, প্রাক্তন মুম্বই মহাজন সভাপতি আশিস শেলার, প্রবীণ দারেকর, অনগ্রসর শ্রেণির নেতা চন্দ্রশেখর বাওয়ানকুলে, বিজয়কুমার দেশমুখ, গণেশ নায়েক, রাধাকৃষ্ণ ভিকে পাটিল, সম্ভাজী পাটিল নিলাঙ্গেকর, রবীন্দ্র চহ্বণ, অশোক উইকে, সুরেশ খাড়ে, জয়কুমার রওয়াল, অতুল দাভে, দেবযানী ফারান্ডে, রণধীর সাভারকর এবং মাধুরী মিসাল মন্ত্রিত্ব পেতে চলেছেন। বিজেপি-র ২৫, এবং শিন্ডে শিবিরের ১৩ জন বিধায়ক মন্ত্রিত্ব পেতে চলেছেন বলে খবর।



আরও পড়ুন: Shiv Sena Tussle: 'উদ্ধবই আমাদের নেতা', বিক্ষুব্ধ বিধায়কের গলায় উল্টো সুর, শিবসেনার নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে পারবেন বালাসাহেব-পুত্র!


এ দিন সন্ধেয় মহারাষ্ট্রে ফের বৈঠক রয়েছে বিজেপি-র। নয়া সরকার গড়ার আগে সেখানে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে একাধিক বিষয়ে। কাকে কোন দফতর দেওয়া হবে, সেই নিয়েও বিশদ আলোচনা হতে চলেছে ওই বৈঠকে। এ দিন রাজভবনে শিণ্ডেকে সঙ্গে করেই রাজ্যপালের কাছে গিয়েছিলেন ফড়ণবীস।সেখানে তাঁদের মিষ্টিমুখও করান রাজ্যপাল। 


উল্লেখ্য, প্রায় দু'সপ্তাহ ধরে টানাপোড়েনের পর বুধবার রাতে মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেন উদ্ধব। ছেড়ে দেন বিধান পরিষদের সদস্যতাও। সুপ্রিম কোর্টে আস্থাভোটের পক্ষে ভোট দেওয়ার কিছু ক্ষণের মধ্যে ফেসবুক লাইভে এসে পদত্যাগের ঘোষণা করেন উদ্ধব। জানিয়ে দেন, কার কাছে কত বিধায়ক রয়েছে, তা নিয়ে বিন্দুমাত্র উদ্বিগ্ন নন তিনি। কাউকে ভয় পান না। সারাজীবন মারাঠা আবেগ, শিব সৈনিকদের জন্য কাজ করে গিয়েছেন, পদের মোহ কোনও কালেই ছিল না। তাই মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিচ্ছেন। উদ্ধব ইস্তফা দেওয়ায় মহারাষ্ট্রে আর আস্থাভোট করানোর প্রয়োজন পড়েনি।