নয়াদিল্লি: যৌনপেশা নিয়ে যুগান্তকারী রায় দেশের শীর্ষ আদালতের। যাঁরা এই পেশায় রয়েছেন। তাঁদের কোনওভাবেই গ্রেফতার, জরিমানা বা হেনস্থা করতে পারবে না পুলিশ। শুধুমাত্র এই পেশায় জড়িত বলে যৌনপল্লিতে হানা দিয়ে ধরপাকড়ও করতে পারবে না পুলিশ। রায় দিল সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) তিন বিচারপতির বেঞ্চ। সম্মতি রয়েছে এমন যৌনকর্মীদের (sex worker) বিষয়ে নাক গলানো এবং ফৌজদারি মামলা করা নিয়েও বিরত থাকুক পুলিশ, এমনটাই রায় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। কারণ স্বেচ্ছায় যৌনপেশায় থাকা বেআইনি নয়, যৌনপল্লি চালানো বেআইনি এবং আইনের চোখে অপরাধ।
কী বলেছে সুপ্রিম কোর্ট?
সংবাদ সংস্থা সূত্রের খবর, সুপ্রিম কোর্ট তার রায়ে জানিয়েছে, যৌনপেশা একটি পেশা এবং যৌনকর্মীরা সম্মান এবং আইনের কবচ পাওয়ার অধিকারী।
বিচারপতি এল নাগেশ্বর রাওয়ের (Justice L Nageswara Rao) নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ এই রায় দিয়েছেন। তাঁরা আরও বলেছেন, বয়স এবং সম্মতি রয়েছে কিনা তার ভিত্তিতে ফৌজদারি আইন ব্যবহার করতে হবে। যখন দেখা যাবে যৌনকর্মী সাবালক এবং নিজের সম্মতিতে এই কাজ করছেন, তখন পুলিশ কোনওরকম ভাবে নাক গলাতে এবং ফৌজদারি আইন প্রয়োগ করতে পারবে না। এটা কোনওভাবে অস্বীকার করা যায় না যে, আর্টিকল ২১ অনুযায়ী শুধুমাত্র এই পেশাই নয়, ভারতের সব নাগরিক সম্মানীয় জীবন পাওয়ার অধিকারী। মা যৌনকর্মী বলে তাঁকে তাঁর সন্তানদের থেকে আলাদা করা যাবে না বলেও জানিয়েছে ওই বেঞ্চ।
আরও কী নির্দেশ:
কোনও যৌনকর্মী যৌনহেনস্থার অভিযোগ করলে সেক্ষেত্রে আইন মেনে দ্রুত পদক্ষেপ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পুলিশকে। প্রশাসনের তরফে যাবতীয় আইনি পদক্ষেপ নেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছে বেঞ্চ। যৌনকর্মীদের প্রতি পুলিশের ব্যবহারেরও সমালোচনা করেছে দেশের শীর্ষ আদালত।
আদালতের তরফে বলা হয়েছে, কোনওভাবেই কোনও যৌনকর্মীর পরিচয় যেন না প্রকাশ করে সংবাদমাধ্যম। ধরপাকড়ের সময় কোনও যৌনকর্মীকে ধরা হলে তাকে সংশোধনারে পাঠানো হবে। এর মধ্যে যদি বিচারক মনে করেন যে গোটা ঘটনায় ওই যৌনকর্মীর সম্মতি ছিল, তাহলে তাঁকে ছেড়ে গিতে হবে। সুপ্রিম কোর্ট যে পরামর্শগুলি দিয়েছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় সরকারের থেকে উত্তর চেয়েছে দেশএর শীর্ষ আদালত। আগামী ২৭ জুলাই শুনানি।