চেন্নাই: তামিলনাড়ু এম কে স্ট্যালিন সরকার বিভিন্ন মন্দিরের প্রায় ২১৩৮ কেজি সোনা গলানোর প্রস্তুতি শুরু করেছে। এ ব্যাপারে জারি করা রাজ্য সরকারের নির্দেশিকাকে চ্যালেঞ্জ করে মাদ্রাজ হাইকোর্টে আর্জি জানানো হয়েছে। আবেদনকারী তামিলনাড়ু সরকারের এই নির্দেশিকাকে অবৈধ বলে দাবি করেছেন। মন্দিরগুলিতে ভক্তদের পক্ষ থেকে দান করা সোনার সঠিক অডিট ছাড়াই তড়িঘড়ি পদক্ষেপ নিয়ে রাজ্য সরকারের মনোভাব সম্পর্কেও আবেদনে প্রশ্ন তোলা হয়েছে।
তামিলনাড়ুর ডিএমকে নেতৃত্বাধীন সরকারের দাবি, মন্দিরে জমা সোনা গলিয়ে গোল্ড বারে বদলানোর অধিকার রাজ্যের রয়েছে। বিগত ৫০ বছর ধরে এই প্রক্রিয়া চলছে। যদিও সরকারের এই সিদ্ধান্ত তামিলনাড়ুতে বড়সড় বিতর্কেরও কারণ হয়ে উঠেছে। মন্দিরগুলির প্রতি আস্থা রাখেন, এমন লোকজনের একটা বড় অংশ রাজ্য সরকারের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। এবি গোপালা কৃষ্ণন ও এমকে সর্বানন নামে দুই পিটিশনকারী আদালতকে বলেছেন, সরকারের এই নির্দেশিকা হিন্দু রিলিজিয়াস অ্যান্ড চ্যারিটিবেল এনডাওমেন্ট অ্যাক্ট, অ্যানসিয়েন্ট মনুমেন্টস অ্যাক্ট, জুয়েল রুলসের লঙ্ঘনের সামিল। সেই সঙ্গে তা হাইকোর্টের নির্দেশেও পরিপন্থী।
চলতি বছরের ৭ জুনই হাইকোর্ট মন্দিরগুলির সম্পত্তির মূল্যায়ন ও তার রেকর্ড পেশের নির্দেশ দিয়েছিল। হাইকোর্ট বলেছিল যে, গত ৬০ বছর রাজ্যে এমনটা করা হয়নি।
রাজ্য সরকার জানিয়েছে যে, মন্দিরগুলিতে বিগ্রহের সজ্জার জন্য গহনা বাদ দিয়ে বাকি গয়না ও অন্যান্য সামগ্রী গলিয়ে ফেলার ঘোষণা করে। এগুলির ওজন ২১৩৮ কেজি বলে ঘোষণা করা হয়।
রাজ্য সরকারের বক্তব্য, ২৪ ক্যারেট সোনার বার ব্যাঙ্কে রেখে যে অর্থ পাওয়া যাবে, তা মন্দিরগুলির উন্নয়নের জন্য ব্যয় করা হবে। কিন্তু বিভিন্ন সংগঠন গহনা গলিয়ে ফেলার ক্ষেত্রে সরকারের এই সিদ্ধান্ত সন্দেহজনক বলে অভিযোগ করেছে। আইনত, সোনা গলানোর সিদ্ধান্ত ট্রাস্টি করে থাকে। এই সিদ্ধান্ত সরকার সহমত দেয়। কিন্তু তামিলনাড়ুতে অধিকাংশ মন্দিরে গত ১০ বছরের বেশি সময় থেকে ট্রাস্টি নিযুক্ত করা হয়নি।
পিটিশনকারীদের দাবি, সরকার মানুষকে ভুল বোঝাতে সোনার অডিট করার কথা বলছে। কিন্তু তারা যে লক্ষ্য স্থির করেছে, তাতে একদিনে ২ মন্দিরে অডিট করার কথা। বহু বছর ধরে জমা হওয়া সম্পত্তির এত তাড়াতাড়ি মূল্যায়ন সম্ভব নয়। পিটিশনকারীরা অবিলম্বে সরকারের নির্দেশে স্থগিতাদেশের দাবি জানিয়েছেন। ২১ অক্টোবর মামলার শুনানি হবে।