হায়দরাবাদ: বিজেপি, কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে তৃতীয় বিরোধী পক্ষ গড়ে তোলার চেষ্টা করেছিলেন তিনি। তাতে সফল না হলেও, ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে (Lok Sabha Election 2024) নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) এবং বিজেপি (BJP) সরকারকে ক্ষমতাচ্যূত করার লক্ষ্যে নামতে চান বলে জানালেন তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী তথা তেলেঙ্গানা রাষ্ট্রীয় সমিতি (TRS) –র প্রধান কে চন্দ্রশেখর রাও (K Chandrashekar Rao/ KCR)। তবে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার কোনও অভীপ্সা নেই তাঁর, বরং দেশে পরিবর্তন আনতে জাতীয় রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনে তিনি প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন কেসিআর।
মঙ্গলবার হায়দরাবাদের প্রগতিভবনে কেন্দ্রীয় বাজেট নিয়ে সংবাদিক বৈঠক করেন কেসিআর। সেখানেই ২০২৪-এ দিল্লির মসনদ থেকে বিজেপি-কে উচ্ছেদের ডাক দেন তিনি। বলেন, ‘‘জাতীয় নেতৃত্বে গুণগত পরিবর্তন জরুরি। তথাকথিত দুই রাজনৈতিক দলই ব্যর্থ। আমার তো নতুন সংবিধানের প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে হয়। কেন্দ্রীয় সরকার যে দেশর যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামো মেনে কাজ করতে ব্যর্থ, তা নিয়ে আলোচনা হওয়া উচিত। উত্তরপ্রদেশে জিতলেও বিজেপি-র প্রভাব কমবেই। ২০২৪-এর আগে সেমি ফাইনাল হতে চলেছে। এতে জিতলে ২০২৪-এ বিজেপি-র অহঙ্কার বাড়বে আরও। তাতেই মুখ থুবড়ে পড়বে।’’
এ বারের বাজেটকে ‘গোলমেলে বাজেট’ বলে উল্লেখ করেছেন কেসিআর। তাঁর কথায়, ‘‘বিজেপি একটা নির্লজ্জ দল। ওদের বঙ্গোপসাগরে ছুড়ে ফেলে দেওয়া উচিত। কেন্দ্রের এই আচরণ অত্যন্ত যন্ত্রাদায়ক। এমন অদূরদর্শী প্রধানমন্ত্রী দেখিনি। সঙ্কীর্ণ মানসিকতার এমন সরকারকে ক্ষমতায় দেখে খারাপ লাগে। সাধারণ মানুষের সঙ্গে বঞ্চনা হচ্ছে। সংসদ এমন অপপ্রচারকারীদের থাকা উচিত নয়। এই সরকার না কৃষককে সম্মান দেয়, না দরিদ্রকে।’’
আরও পড়ুন: Rahul Gandhi: বাজেট-পেগাসাস ইস্যুতে সংসদে আজ বক্তব্য রাখবেন রাহুল, রয়েছে বিক্ষোভ কর্মসূচিও
এর আগে, ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে বিজেপি এবং কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে তৃতীয় জোটের সপক্ষে সওয়াল করেছিলেন কেসিআর। বিরোধী ঐক্যকে (Opposition Alliance in 2024) দেশবাসীর সামনে তুলে ধরতে কলকাতায় যে ব্রিগেড সমাবেশ হয়েছিল, তাতে কেসিআর-কেও আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। ২০২৪-ের আগে নতুন করে বিরোধী শিবিরের নেতাদের মধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন কেসিআর। মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরের সঙ্গে মঙ্গলবারই কথা হয়েছে বলে জানান কেসিআর।
মমতা, ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক, তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিনের সঙ্গেও সাম্প্রতিক কালে কেসিআর-এর নতুন করে যোগাযোগ তৈরি হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। কেসিআর জানিয়েছেন, আইএএস, আইপিএস এবং আইএফএস অফিসারদের সঙ্গে নিয়ে নতুন ধরনের রাজনীতির সূচনা করতে চান তিনি। ঘটনাচক্রে বুধবার কলকাতায় মমতার গলাতেও একই সুর ধরা পড়েছে। কংগ্রেসকে অহঙ্কারী বেল কটাক্ষ করে একলা চলো নীতি নিয়ে বিজেপি-র বিরুদ্ধে নামবেন বলে ঘোষণা করেছেন তিনি, যা ২০২৪-এর নির্বাচনে কেন্দ্রে তৃতীয় জোটের সম্ভাবনাই নতুন করে উস্কে দিচ্ছে।