কলকাতা ও নয়াদিল্লি: দেশের স্বার্থবিরোধী কাজ করেছেন সলিসিটর জেনারেল। এই দাবি তুলে তুষার মেহতাকে অপসারণের দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর পর এবার রাষ্ট্রপতির দ্বারস্থ হলো তৃণমূল কংগ্রেস। 


সোমবার, এ’বিষয়ে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় ও কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। 


সাক্ষাতের পর রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে বেরিয়ে মহুয়া মৈত্র বলেন, আমরা রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করে স্মারকলিপি জমা দিয়েছি। আমাদের মনে হয়েছে, যা ঘটেছে তা ভারতের সলিসিটর জেনারেলের দফতরের মর্যাদাহানির সামিল। অসদাচরণ ও অবৈধ কাজের জন্য আমরা সলিসিটর জেনারেলের অপসারণের দাবি তুলেছি।


প্রতিনিধিদলের অপর সদস্য সুখেন্দুশেখর রায় বলেন, শুভেন্দুর সঙ্গে দেখা না করতে পারার জন্য তিনি ক্ষমাপ্রার্থী। তৃণমূল রাজ্যসভা সাংসদের প্রশ্ন, ওকে (শুভেন্দু) সলিসিটর জেনারেলের বাসভবনে প্রবেশের অনুমতি কে দিয়েছে? তিনি যোগ করেন, বার কাউন্সিলের নিয়ম, পেশাদারি সততা লঙ্ঘন করেছেন তুষার মেহতা। তাই তাঁকে অবিলম্বে সরিয়ে দেওয়া উচিত। 


রাষ্ট্রপতির দ্বারস্থ হওয়ার আগে, প্রধানমন্ত্রীর কাছেও একই দাবি তোলে তৃণমূল। সলিসিটার জেনারেলকে সরানোর দাবি তুলে তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন, রাজ্যসভার আরেক সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় এবং কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি লেখেন। 


চিঠিতে তিন তৃণমূল সাংসদ লিখেছেন, নারদ স্টিং-কাণ্ডে শুভেন্দু অধিকারীকে টাকা নিতে দেখা গিয়েছিল। তার তদন্ত করছে সিবিআই এবং ইডি। তুষার মেহতা সেই মামলায় সিবিআইয়ের হয়ে সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্টে সওয়াল করছেন।


তৃণমূলের চিঠিতে লেখা হয়েছে,  সিবিআই ও ইডি সারদা মামলার তদন্ত করছে। সুদীপ্ত সেন মূল অভিযুক্ত। যিনি একাধিকবার চিঠি দিয়ে শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন। সারদা-মামলাতেও সিবিআইকে পরামর্শ দেওয়ার পাশাপাশি মামলা লড়েছেন তুষার মেহতা।


এরপরই চিঠিতে তৃণমূলের দাবি, শুভেন্দু অধিকারী যে মামলায় অভিযুক্ত, তাতে সলিসিটার জেনারেলের অফিসকে ব্যবহার করে, মামলার ফলাফলকে প্রভাবিত করার উদ্দেশ্যেই, বৈঠকের আয়োজন হয়েছিল, এমন আশঙ্কার যথেষ্ট কারণ আছে। তাই স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতার স্বার্থে অবিলম্বে তুষার মেহতাকে তাঁর পদ থেকে সরাতে পদক্ষেপ নিন প্রধানমন্ত্রী।


সলিসিটার জেনারেল তথা নারদ মামলায় সিবিআই এর আইনজীবী তুষার মেহেতার সঙ্গে নারদ স্টিং অপারেশনে অভিযুক্ত শুভেন্দু অধিকারীর বৈঠকের অভিযোগে সরব হয়েছে তৃণমূল।  ট্যুইটে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, দেশের সম্মানীয় সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা, ৭২ ঘন্টা পেরিয়ে যাওয়ার পরেও নিজের কথার প্রমাণ হিসাবে, নিজের বাড়িরই ২০ মিনিটের সিসিটিভি ফুটেজ সামনে আনতে পারলেন না। সলিসিটর জেনারেল, এরকম দুর্বল যুক্তি দিয়ে আপনি দেশে বিজেপির সিক্রেট জেনারেল হিসাবে কাজ চালিয়ে যেতে পারবেন, সলিসিটর জেনারেল হিসাবে নয়।