নয়াদিল্লি: মূল্যবৃদ্ধির জেরে দমবন্ধ হয়ে আসছে সাধারণ মানুষের। খাদ্যদ্রব্য থেকে নিত্য প্রয়োজনের সব পণ্য, রকেট গতিতে দাম বেড়ে চলেছে সবকিছুর। এমন পরিস্থিতিতে বিদেশ-বিভুঁইয়ে গম রফতানি নিষিদ্ধ করল কেন্দ্রীয় সরকার। জন সাধারণের খাদ্যের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতেই এমন সিদ্ধান্ত বলে জানানো হয়েছে। একমাত্র জরুরি পরিস্থিতি ছাড়া আপাতত গম রফতানি বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছে কেন্দ্র।


গম রফতানি নিষিদ্ধ করল কেন্দ্র


কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জানানো হয়েছে যে, অবিলম্বে গমের রফতানি বন্ধ করা হচ্ছে, যাতে দেশীয় বাজারে মূল্যবৃদ্ধিতে লাগাম টানা যায়। গতকালের বিজ্ঞপ্তির আগে যে সমস্ত লেটারস অফ ক্রেডিট ইস্যু করা হয়েছে, শুধুমাত্র তার ভিত্তিতে রফতানি অনুমোদন করা হবে। এর পাশাপাশি, পড়শি দেশে যদি আপদকালীন পরিস্থিতি দেখা দেয়, সেখানেও গম রফতানিতে সায় দেবে কেন্দ্র। 


বৈদেশিক বাণিজ্য বিভাগের তরফে প্রকাশিত ওই বিবিৃতিতে আরও জানানো হয় যে, মানুষের খাদ্যের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে, প্রতিবেশি তথা সঙ্কটাপন্ন দেশগুলির কথা ভেবেই এমন সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। 


উল্লেখ্য, ফেব্রুয়ারির শেষ থেকে রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ বাধলে চিনের পর বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম গম রফতানিকারক দেশ ভারতের উপরই নির্ভরশীল হয়ে ওঠে একাধিক দেশ। চিন তালিকায় শীর্ষে থাকলেও, কৃষ্ণসাগরের উপর দিয়ে বাণিজ্য পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ভারতের উপরই সিংহভাগ দায় বর্তায়।


আরও পড়ুন:  India Corona Update: দেশে ফের বাড়ল দৈনিক সংক্রমণ, একদিনে মৃত্যু ১১ জনের


কিন্তু সম্প্রতি তাপপ্রবাহের জেরে গমচাষে প্রভূত ক্ষতি হয়েছে। পাশাপাশি মূল্যবৃদ্ধি আকাশ ছুঁয়েছে। মূদ্রাস্ফীতির হারও বেড়ে এপ্রিলে ৭.৭৯ শতাংশে পৌঁছেছে। এমন পরিস্থিতিতে গম রফতানি আপাতত বন্ধ করল কেন্দ্র। যদিও  এমন কোনও চিন্তা-ভাবনা নেই বলে চলতি মাসের শুরুতেই আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে জানানো হয়েছিল। সেই সময় খাদ্যসচিব সুধাংশু পান্ডে জানিয়েছিলেন, ভারত যথেষ্ট পরিমাণ গম মজুত করে রেখেছে। তাই রফতানিতে কাটছাঁটের প্রশ্ন নেই। 


এমনকি সম্প্রতি জার্মানি সফরে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকেও বলতে শোনা যায় যে, "বর্তমান সঙ্কটের সময় ভারতীয় কৃষকরা গোটা বিশ্বের মুখে খাদ্যের জোগান দিতে এগিয়ে এসেছেন। মানসভ্যতা যখনই সঙ্কটে পড়েছে, ভারত বরাবরই সমাধান নিয়ে হাজির হয়েছে।"


রফতানিতে কাটছাঁট হবে না বলে সম্প্রতিই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল ভারত


পর পর পাঁচ বছর গম উৎপাদনে রেকর্ড গড়ার পর, এবছর ১১ কোটি ১৩ লক্ষ টন গম উৎপাদন হতে চলেছে বলে আন্দাজ করা হয়েছিল। কিন্তু তাপপ্রবাহে চাষের প্রভূত ক্ষতি হওয়ায় তা ১০ কোটি টনেও পৌঁছবে কিনা, সন্দেহ দেখা দিয়েছে। তবে দু'সপ্তাহ আগে গালভরা প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পর এমন সিদ্ধান্ত বদলে, আন্তর্জাতিক মহলে ভারতের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি বিদেশি ভারতীয় রাজকোষে বিদেশি মুদ্রা সঞ্চয়েও ঘাটতি দেখা দেবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।