সন্দীপ সরকার, আগরতলা: অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, ব্রাত্য বসু, দোলা সেন, কুণাল ঘোষের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করল খোয়াই থানার পুলিশ।


চার তৃণমূল নেতা ছাড়াও ত্রিপুরার তৃণমূল নেতা সুবল ভৌমিকের বিরুদ্ধে দায়ের হয়েছে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা। ত্রিপুরায় আমবাসায় আক্রান্ত দেবাংশু ভট্টাচার্য, সুদীপ রাহা, জয়া দত্ত-সহ ১৪ জনকে গ্রেফতার করে খোয়াই থানার পুলিশ।


ধৃতদের ছাড়াতে থানায় যান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, ব্রাত্য বসু, দোলা সেন, কুণাল ঘোষরা। পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ তাঁদের বাদানুবাদ চলে। 


এই প্রেক্ষিতে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের ট্যুইট, রবিবারের খোয়াই থানার ঘটনায় গতকাল গভীর রাতে সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, দোলা সেন, শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু, ত্রিপুরার তৃণমূল নেতা সুবল ভৌমিক-সহ ৫ জনের বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করল পুলিশ। ১৮৬/৩৪ ধারায় নিজের থেকে মামলা করল খোয়াই থানার পুলিশ। ভয় পেয়েছে বিজেপি। 


মহামারী আইন ভাঙা-সহ একাধিক অভিযোগে যুব তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক দেবাংশু ভট্টাচার্য, ত্রিপুরার দায়িত্বপ্রাপ্ত যুব তৃণমূল নেত্রী জয়া দত্ত ও সুদীপ রাহাকে রবিবার গ্রেফতার করে পুলিশ। 


এই খবর জানাজানি হতেই, নতুন করে তেতে ওঠে উত্তর-পূর্বের রাজ্য। ৬ দিনের ব্যবধানে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ফের ত্রিপুরা পৌঁছনোর পরেই উত্তেজনা চরমে পৌঁছয়। এদিন আগরতলা থেকে সটান খোয়াই থানায় যান তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক।  


সে সময় তাঁর সঙ্গেই ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু, রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ দোলা সেন ও তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। এরপর পুলিশের সঙ্গে শুরু হয়ে যায় কথা কাটাকাটি। 


বিজেপিশাসিত ত্রিপুরায় দলের ১৪ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতারির প্রতিবাদে গত রবিবার থানায় বসেই কর্তব্যরত পুলিশ অফিসারের উদ্দেশে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।


গ্রেফতারির প্রতিবাদে খোয়াই থানায় অফিসারদের সঙ্গে তুমুল তর্কবিতর্ক বেধে যায় তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের। কোন অভিযোগের ভিত্তিতে দলের নেতা-নেত্রীদের গ্রেফতার করা হয়েছে, থানায় তার নথি দেখতে চান অভিষেক।


এক নেতার সঙ্গে পুলিশ সুপারের কথোপকথনের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে ওসি-কে পাল্টা চ্যালেঞ্জও করেন।  গ্রেফতারির প্রসঙ্গ তুলে পুলিশের সঙ্গে তরজায় জড়ান কুণাল ঘোষ, দোলা সেনরাও।


থানার ভিতর পরিস্থিতি যখন ক্রমশ গরম হয়ে উঠছে, সেই সময় সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়েন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সহ সভাপতি সুদীপ রাহা। এর কিছুক্ষণ পর ধৃতদের আদালতে নিয়ে যায় পুলিশ। তখনও থানাতেই বসেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। 


শেষমেষ ধৃতদের সকলেরই জামিন মঞ্জুর করেন বিচারক। পাশাপাশি খারিজ করে দেন ধৃতদের বিরুদ্ধে করা অতিরিক্ত মামলাও। ১৪ জন নেতাকর্মী জামিন পাওয়ার পর খোয়াই আদালতে যান অভিষেক। পরে তাঁদের সঙ্গে নিয়ে কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা দেন তিনি।