নয়াদিল্লি: তৃণমূল সাংসদদের (TMC MPs) সময় দিলেন না কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ  (Union Home Minister Amit Shah)। ত্রিপুরার (Tripura) ঘটনায় দিল্লিতে অমিত শাহর সঙ্গে দেখা করার জন্য সময় চাইলেও সময় দিলেন না কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। ‘আপনার সাক্ষাতের জন্য অপেক্ষা করছি’, জানিয়ে সকালে ট্যুইট করেছিলেন ডেরেক ও ব্রায়েন। সাক্ষাতের সময় না দেওয়ায় ক্ষুব্ধ তৃণমূল কংগ্রেস । নর্থ ব্লকের সামনে তৃণমূল সাংসদদের বিক্ষোভ।


বিক্ষোভ প্রদর্শনকারী তৃণমূল সাংসদদের অভিযোগ, ত্রিপুরায় গুণ্ডারাজ চলছে। তৃণমূল নেতা-কর্মীদের মারধর করছে বিজেপি। এর প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তিনি সময় দেননি। এ জন্য তাঁর দফতরের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করছি। আমাদের দাবি, অমিত শাহ এসে আমাদের সঙ্গে দেখা করুন।


তাঁদের অভিযোগ, ত্রিপুরায় তৃণমূলের ওপর হামলার ঘটনায় সায় রয়েছে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের। এ জন্যই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তাঁদের প্রতিনিধি দলকে সময় দেননি। 






বৃহস্পতিবার ত্রিপুরায় পুরভোট। তার আগে  রবিবার ত্রিপুরায় তুলকালাম ঘটে যায়। আগরতলায় থানা চত্বরে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগ। গ্রেফতার করা হয় যুব তৃণমূলের রাজ্য সভানেত্রী সায়নী ঘোষ। থানায় দীর্ঘক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদের পর খুনের চেষ্টার অভিযোগে সায়নীকে গ্রেফতার করে আগরতলা পূর্ব মহিলা থানার পুলিশ।


গ্রেফতার হওয়ার পর, ফেসবুক পোস্টে বিজেপিকে আক্রমণ করেন সায়নী ঘোষ। কুণাল ঘোষও বলেন, সোমবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা, সেটা বানচাল করার জন্য বিজেপি এভাবে মরিয়া হয়ে উঠেছে।  ত্রিপুরার মানুষ তৃণমূলকে ভোট দেবেন, বিজেপি হারার জায়গায় আছে। সেই জন্য সর্বশক্তি দিয়ে সন্ত্রাস করছে...যারা তাণ্ডব করেছে, তাদের গ্রেফতার করেনি। সায়নীকে তুলে এনে গ্রেফতার করা হয়েছে।


রাজ্যে বিজেপির মুখপাত্র নবেন্দু ভট্টাচার্য অবশ্য বলেন, তৃণমূল বিজেপির হারের স্বপ্ন দেখতেই পারেন। কিন্তু তা বাস্তব হবে না।


শনিবার সন্ধেয় প্রচার সেরে আমবাসা থেকে আগরতলায় ফিরছিলেন সায়নী ঘোষরা। সেই সময় আগরতলার আশ্রম চৌমহনীতে সভা করছিলেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব। সভাস্থলের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময়, সায়নী ঘোষ গাড়ি থেকে ‘খেলা হবে’ বলে স্লোগান দেন।


বিজেপি কর্মীরা সায়নীর গাড়ি ধাওয়া করেন। অভিযোগ, গাড়ি লক্ষ্য করে ইটবৃষ্টিও করা হয়। রাতেই সায়নীর বিরুদ্ধে আগরতলা পূর্ব মহিলা থানায় অভিযোগ করে বিজেপি। তার ভিত্তিতে, সায়নী ঘোষকে থানায় তলব করা হয়।


রবিবার সকালে সায়নীকে সঙ্গে নিয়ে আগরতলা পূর্ব মহিলা থানায় যান সুস্মিতা দেব, কুণাল ঘোষ, অর্পিতা ঘোষ-সহ তৃণমূলের নেতা-নেত্রীরা।কী কারণে সায়নীকে তলব, তা নিয়ে থানার মধ্যেই বাদানুবাদ শুরু হয়।


এদিকে, সায়নী ঘোষকে যখন থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে, তখন হঠাৎ থানার সামনে তৃণমূল কর্মীদের ওপর চড়াও হয় একদল দুষ্কৃতী। প্রত্যেকেরই মুখ ঢাকা ছিল হেলমেটে। হাতে ছিল লাঠি...রড। থানা লক্ষ্য করে তারা ইট ছোড়ে।মারধর করা হয় তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের।গাড়ি ভাঙচুর করা হয়।রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় গোটা এলাকা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে, লাঠিচার্জ করে পুলিশ। মোতায়েন হয় CRPF।


ত্রিপুরায় হামলার নিন্দা করে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ট্যুইটারে লেখেন,বিপ্লব দেব সরকার এতটাই নির্লজ্জ যে, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশকেও আমল দিচ্ছে না।নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত না করে, বারবার দুষ্কৃতী পাঠিয়ে আমাদের কর্মী এমনকী মহিলা প্রার্থীদের ওপর হামলা করাচ্ছে। ত্রিপুরায় গণতন্ত্রকে হাস্যকর পর্যায়ে নিয়ে গেছে বিজেপি।


গতকালই জানানো হয় ত্রিপুরার ঘটনার প্রতিবাদে, সোমবার সকালে দিল্লিতে ধর্নায় বসবেন তৃণমূলের সাংসদরা। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সময়ও চাওয়া হয়েছে।