লখনউ: আদ্যোপান্ত রাজনৈতিক পরিবারের ছেলে। নিজেও রাজনীতি করছেন দু’দশক ধরে। কিন্তু এত দিনে একবারও বিধানসভা নির্বাচনে নাম লেখাননি। উত্তরপ্রদেশে (UP Polls 2022) বিজেপি (BJP) এবং যোগী আদিত্যনাথের (Yogi Adityanath) মোকাবিলায় সেই অবস্থান থেকে এ বার সরছেন সমাজবাদী পার্টির (Samajwadi Party) প্রধান তথা উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব (Akhilesh Yadav)। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে যাদব পরিবারের দুর্গ বলে পরিচিত করহল থেকে ভোটে দাঁড়াচ্ছেন তিনি।

  


বিজেপি-র বিরুদ্ধে দলের নির্বাচনী বৈতরণী পারের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিলেও, ভোটের ময়দানে নাম লেখানোর কোনও পরিকল্পনা নেই বেল এ যাবৎ জানিয়ে আসছিলেন অখিলেশ। কিন্তু ভ্রাতুষ্পুত্র অপর্ণা যাদব (Aparna Yadav) বিজেপি-তে গিয়ে ওঠায় দলের অন্দরে খানিকটা হলেও উৎসাহে ছেদ পড়েছিল। তার উপর সে রকম কোনও প্রতিষ্ঠিত মুখও নেই। তাই রাজনৈতিক মহলে জল্পনা, দলের নেতা-কর্মীদের চাঙ্গা করতেই দু’দশকের রাজনৈতিক জীবনে এই প্রথম বিধানসভা নির্বাচনে অংশ নিতে চলেছেন অখিলেশ।


একমাত্র ২০০২ সালকে বাদ দিলে, ১৯৯৩ থেকে একটানা মইনপুরীর করহলে জয়ী হয়ে আসছে সমাজবাদী পার্টি। এত দিন ওই কেন্দ্র দলের নেতা সোবরন সিংহ যাদবের দখলে ছিল। এ বার সেখান থেকেই প্রার্থী হচ্ছেন অখিলেশ। কিন্তু মুলায়ম-পুত্রের জন্য আসন হাতছাড়া হওয়ার আক্ষেপ নেই সোবরনের। বরং সংবাদমাধ্যমে তিনি জানান, অখিলেশের জন্য স্বেচ্ছায় ওই আসন ছেড়ে দিয়েছেন তিনি। অখিলেশকে করহল থেকে ভোটে দাঁড়ানোর সুপারিশও তাঁরই বলে জানান সোবরন।


আরও পড়ুন: UP Poll 2022: উত্তরপ্রদেশে দ্বিতীয় দফায় বিজেপির ৮৫ জনের প্রার্থী তালিকায় রায়বরেলির প্রাক্তন কংগ্রেস বিধায়ক অদিতি


একসময় করহল সংলগ্ন সৈফইয়ের জন্য একাধিক উন্নয়নমূলক কর্মসূচি গ্রহ করেছিলেন অখিলেশ। সেখানকার মইনপুরী লোকসভা কেন্দ্র থেকে পাঁচ বার সাংসদ হয়েছেন মুলায়ম। তাই দলের তরফেও তাঁকে সেখানে দাঁড়ানোর অনুরোধ জানানো হয় বলে সূত্রের খবর। করহল থেকে রেকর্ড ভোটে অখিলেশ জয়ী হবেন বলে আশাবাদী সমাজবাদী পার্টির নেতা রামগোপাল যাদব।


এ বারে দলের প্রচারের রাশভার একা হাতে সামলালেও, ভোটে দাঁড়ানোর কোনও পরিকল্পনা নেই বলে শুরু থেকেই জানিয়ে আসছিলেন অখিলেশ। বরং সংগঠন মজবুত করায় নিজেকে ব্যস্ত রেখেছিলেন। কংগ্রেসের মতো বড় দলের হাত ছেড়ে ছোট আঞ্চলিক দলগুলিকে একছাতার নীচে নিয়ে আসার কাজে বেশ সফলও হয়েছেন তিনি। কিন্তু ভোটে দাঁড়ানোর প্রসঙ্গ উঠলে অখিলেশ জানিয়েছিলেন, দল চাইলে হয়ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতেই হবে তাঁকে। তার জন্য নিজের লোকসভা কেন্দ্র আজমগড়ের মানুষের অনুমতিও নিতে হবে। তবে ব্যক্তিগত ভাবে তিনি ভোটে দাঁড়াতে চান না। 


এর আগে, ২০১২ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন অখিলেশ। ৩৮ বছর বয়সে সেই সময় দেশের কনিষ্ঠতম মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন তিনিই। কিন্তু সে বারও বিধানসভা নির্বাচনে অংশ নেননি অখিলেশ। বরং নিজের তৎকালীন লোকসভা আসন কনৌজে স্ত্রী ডিম্পল যাদবকে প্রার্থী করে বিধান পরিষদের সদস্যপদ গ্রহণ করেন নিজে। কিন্তু এ বার শেষ পর্যন্ত বিধানসভা নির্বাচনের ময়দানে নামতেই হল তাঁকে।