কানপুর: আলমারিতে থরে থরে সাজিয়ে রাখা বান্ডিল। নোটের পাহাড় সাজানো ঘরের মেঝেতেও। তার মাঝে তাদর বিছিয়ে বসে রয়েছেন তিন-চার জন। সাতসকালে এমন ছবি দেখে চমকে উঠেছিল নেটদুনিয়া। তবে শুধু সাধারণ মানুষই নন, পাহাড়প্রমাণ টাকা দেখে তাজ্জব আয়কর দফতরের আধিকারিকরাও (Income Tax Raid)। পাঁচ-দশ কোটি নয়, উত্তরপ্রদেশে এক সুগন্ধী ব্যবসায়ীর বাড়িতে হানা দিয়ে নগদে ১৫০ কোটি টাকা উদ্ধার করেছেন তাঁরা। তবে এই হিসেব বেলা ১১টা পর্যন্তর।


বছর ঘুরতেই বিধানসভা নির্বাচন উত্তরপ্রদেশে (Uttar Pradesh Assembly Election 2022)। তার আগে রাজ্যে সক্রিয়তা বাডি়য়েছে আয়কর দফতর (Income Tax Department)। যদিও বিরোধীদের অভিযোগ, বেছে বেছে বিরোধী শিবির, বিশেষ করে সমাজবাদী পার্টির (Samajwadi Party/SP) নেতাদের বাড়িতে হানা দেওয়া হচ্ছে। তার মধ্যেই শুক্রবার ভোরে কানপুরের সুগন্ধী ব্যবসায়ী পীয়ূস জৈনর বাড়িতে হানা দেয় আয়কর দফতর। সেখান থেকেই এই বিপুল পরিমাণ টাকা উদ্ধার হয়।


অখিলেশ যাদবের (Akhilesh Yadav) ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত পীযূস সম্প্রতি এসপি-র প্রচারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন। দলের নামে তৈরি সুগন্ধী তৈরির বরাত তাঁর কাঁধেই সঁপে দেন অখিলেশ। এর পর বৃহস্পতিবার প্রথম মুম্বই, কনৌজ এবং কানপুরে তাঁর দফতরে হানা দেয় আয়কর বিভাগ। শুক্রবার ভোরে তাঁর বাড়িতে পৌঁছয়। সেখানেই নোটের সাম্রাজ্যের হদিশ মেলে।


আয়কর বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, এত নোট জমা ছিল যে বাড়তি লোক নিয়ে গিয়েও হাতে গুনে উঠতে পারছিলেন না আয়কর আধিকারিকরা। তাই নোট গোনার যন্ত্র আনা হয়। তাতেই সকাল ১১টা পর্যন্ত ১৫০ কোটি টাকার বেশি নোট উদ্ধার হয়েছে বলে হিসেব মেলে। তবে এখনও নোট গোনা চলছে। তাই দিনের শেষে বাজেয়াপ্ত টাকার অঙ্ক আরও বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।


এ ছাড়াও, আগামী দু’দিন উত্তরপ্রদেশে পীযূসের একাধিক দফতর এবং ঠিকানায় তল্লাশি চালানোর পরিকল্পনা রয়েছে আয়কর দফতরের। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত যা নথি হাতে এসেছে তাঁদের, তাতে কোটি কোটি টাকার করফাঁকি দেওয়ার প্রমাণ মিলেছে পীযূসের বিরুদ্ধে। এ ছাড়ও ভুয়ো সংস্থার মাধ্যমে বিপুল টাকা তিনি এদিক ওদিক করেছেন বলে অভিযোগ।  




আরও পড়ুন: Uttar Pradesh: ৩৫ বছর ধরে মামলা, ৪০০ শুনানির পর বেকসুর খালাস ৮৫ বছরের বৃদ্ধ


পীযূসের বিরুদ্ধে প্রথম তদন্তে নামে জিএসটি (Goods and Services Tax/GSt) বিভাগই। তার পর যৌথ ভাবে তল্লাশিতে নামে আয়কর বিভাগ। জিএসটি আধিকারিকদের দাবি, ভুয়ো সংস্থার নামে রসিদ তৈরি করে যে লেনদেন হয়েছে, উদ্ধার হওয়া বিপুল পরিমাণ টাকা সেখান থেকেই এসেছে। ৫০ হাজার টাকা করে এমন ২০০-র বেশি ভুয়ো রসিদ উদ্ধার হয়েছে বলে জানিয়েছেন জিএসটি আধিকারিকরা। পীযূসের বাড়িতে হানা দেওয়ার সময় চারটি ট্রাক ছিল তাঁর গুদামে। তার মধ্য থেকেই রসিদগুলি হাতে পেয়েছেন তদন্তকারীরা।