নয়াদিল্লি: গত কয়েক সপ্তাহে দুই ভোজপুরী অভিনেত্রীর ব্যক্তিগত ও গোপন ভিডিও ইন্টারনেটে ফাঁস হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীরা শুধু যে অন্যদের দেখার জন্য ভিডিও লিঙ্কগুলি শেয়ার করেছে তাই নয়, দুই অভিনেত্রীকে প্রচণ্ড ট্রোলিংয়ের শিকার হতে হয়েছে। নেটিজেনরা এই দুই অভিনেত্রীর সম্পর্কে কুরুচিকর মন্তব্য করতেও ছাড়েনি।
নেটিজেনদের এই অমানবিক দিকের বিরুদ্ধে সরব হন এই দুই অভিনেত্রী। একজন তীব্র প্রতিক্রিয়ায় বলেন, "যদি আপনার বোনের বিয়ে হয় এবং পরের দিন কেউ তার ফুলশয্যার রাতের ভিডিও লিক করে, তাহলে কি ভালো হবে?"
ওই অভিনেত্রী দাবি করেন, সঙ্গীর সঙ্গে তাঁর গোপন মুহূর্তের ভিডিওগুলি তার সম্মতি ছাড়াই তোলা হয়েছে এবং পরে তা অনলাইনে শেয়ার করা হয়েছিল। তাঁর প্রশ্ন, সুনির্দিষ্ট সীমালঙ্ঘন করে কিছু মানুষ কী ধরনের আনন্দ পায়?
ভোজপুরী অভিনেত্রীর প্রশ্নর মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে আরেকটি প্রশ্ন। তা হল, কেন মানুষ এধরনের ভিডিও এত শেয়ার করেন? একটা বিষয় স্পষ্ট যে, যখন কোনও মহিলার ব্যক্তিগত ভিডিও অনলাইনে ফাঁস হতে শুরু করে, তখন থেকেই সেই মহিলাকেই জন্য দায়ী করা হয়।
বিভিন্ন জল্পনার মুখোমুখি হতে শুরু করেন তাঁরা।, যেমন, "তিনি নিজেই হয়ত ভিডিওটি ফাঁস করেছেন।" যদি এটি সত্যিও হয়, প্রশ্ন থেকে যায়, তাঁদের বিচার করার অধিকার কি রয়েছে অন্যদের?
যখন কোনও ভুল কাজ হয়ে যায়, তখন সবকিছুর জন্য মহিলাদের দোষারোপ করে, আমরা প্রায়ই তাদের মৌলিক সহায়তা কেড়ে নিই। এধরনের ঘটনার শিকার হওয়া মহিলাদের বারবার অগ্নিপরীক্ষার সম্মুখীন হতে হয়েছে।
এধরনের ঘটনা ঘটলে, মহিলাদের চরিত্রহননের বদলে উচিত যারা এই ঘৃন্য় অপরাধ করেছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার। কিন্তু, আদতে ঘটে ঠিক এর উল্টোটা।
নারীর বিরুদ্ধে সাইবার অপরাধ সর্বকালের সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। ইন্টারনেটে যদি একজন মহিলাকে অনলাইনে হয়রানি করা হয়, তাঁকে অনুসরণ করা হয়, হুমকি দেওয়া হয় সহ বিভিন্ন ধরনের নির্যাতন করা হয়, তাহলে তা সাইবার অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়।
সারা দেশে বহু নারীকে অপরাধীদের দ্বারা ব্ল্যাকমেল করা হয়, কখনও কখনও তাঁদের নিজেদের সঙ্গীরাই তাঁদের ব্যক্তিগত ছবি এবং ভিডিও ব্যবহার করে ব্ল্যাকমেল করে।
ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরো (এনসিআরবি) তথ্য অনুসারে প্রতি বছর সাইবার অপরাধের রিপোর্ট করা মামলার সংখ্যা বাড়ছে। ২০১৯ সালে সারা দেশে মোট ৪৪,৫৪৬ সাইবার অপরাধের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।