দেহরাদুন: কুলগামে শহিদ হয়েছিলেন স্বামী। তাঁর শেষ ইচ্ছা পূরণ করতে এবার সেনাবাহিনীতে যোগ দিচ্ছেন স্ত্রী। ২০১৮ সালের এপ্রিলে সন্ত্রাসবাদী হামলায় আহত হয়েছিলেন সেনা জওয়ান দীপক নেয়নওয়াল। প্রায় ৪০ দিন হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়েন তিনি। শেষ পর্যন্ত মৃত্যুর কাছে হার মানেন দীপক। মে মাসে মৃত্যু হয় দীপকের। কিন্তু বিশ্ব সংসারে পথ চলার সঙ্গীকে চিরতরে হারিয়ে দমে না গিয়ে নিজেকে দেশের জন্য সঁপে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দীপকের স্ত্রী জ্যোতি নেয়নওয়াল। এক্ষেত্রে প্রয়াত স্বামীই তাঁর অনুপ্রেরণা হয়ে ওঠেন।
স্বামীর শেষ ইচ্ছা পূরণ করতে সেনাবাহিনীতে যোগ দিচ্ছেন দীপকের স্ত্রী ৩২ বছর বয়সি, দুই সন্তানের মা জ্যোতি। সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, চেন্নাইয়ের অফিসার্স ট্রেনিং অ্যাকাডেমিতে প্রায় এক বছর প্রশিক্ষণ নেন তিনি।
জ্যোতি জানিয়েছেন, বুকে এবং মেরুদণ্ডে মারাত্মক আঘাত ছিল স্বামীর। দেহের নিচের অংশ অসাড় হয়ে গিয়েছিল। দিল্লির হাসপাতালে ৪০ দিন চিকিৎসা হয়। সেই সময় দীপক আমাকে বলেছিল, ওঁ যদি আর না বাঁচে তাহলে আমি যেন সেনাবাহিনীতে যোগ দিই। ওটাই ওঁর শেষ ইচ্ছা ছিল। আমি ভারতীয় সেনাবাহিনীর কাছে কৃতজ্ঞ যে ওরা আমাকে এই সুযোগ দিয়েছে।
তবে এই পথ খুব একটা সহজ ছিল না। চতুর্থবারের চেষ্টায় এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন তিনি। পাশাপাশি মা হিসেবেও নিজের কর্তব্য পালন করতেন তিনি। দীপকের বাবা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, প্রতিদিন ভোর সাড়ে ৩টে নাগাদ ঘুম থেকে উঠে শরীরচর্চা করতে যেত জ্যোতি। ইংরাজি বলার দক্ষতা বাড়ানোর জন্যও অনেক পরিশ্রম করেছে।
জ্যোতি সংবাদমাধ্যমে বলেন, সেনাবাহিনী এবং আমার পরিবার পাশে দাঁড়িয়েছে। আমি তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞ। ৪০ দিন ভারতীয় সেনা আমাকে হাসপাতালে স্বামীর কাছে থাকা অনুমতি দিয়েছিল। সেদিন বুঝেছিলাম ওরা সেনার পাশাপাশি তাঁদের পরিবারের পাশেও দাঁড়ায়। দীপক বলেছিল. সেনায় যোগ দেওয়ার ক্ষমতা আমার আছে।