নয়াদিল্লি: আমেরিকার কাছ থেকে কেনা হবে আরও প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফে বৃহস্পতিবার সিলমোহর পড়ল তাতে। এবার আমেরিকার কাছ থেকে শিকারি ড্রোন (Predator Drones) কেনায় সিলমোহর দিল প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংহের নেতৃত্বাধীন ডিফেন্স অ্যাকুইজিশন কাউন্সিল (DAC)। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার অনুমোদন পেলেই শিকারি ড্রোন কেনার প্রক্রিয়া শুরু হবে (US India Relations)। আপাতত ৩০টি শিকারি ড্রোন কেনার হবে বলে ঠিক হয়েছে, তাতে খরচ পড়বে ২৪ হাজার ৫৯৯ কোটি টাকা (Defence Purchase)।


ভারতের তরফে যে MQ-9B SeaGuardian শিকারি ড্রোন কেনার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে, তার নির্মাতা আমেরিকার জেনারেল অ্যাটমিকস। আফগানিস্তানে তালিবান এবং পশ্চিম এশিয়ায় আইসিস-এর বিরুদ্ধে যুদ্ধে তাদের তৈরি অস্ত্রশস্ত্র এবং সরঞ্জাম ব্যবহার করেই সফল হয় আমেরিকা। সন্ত্রাসের মোকাবিলায়, চিন সীমান্তে নজরদারিতে, সেই সংস্থার তৈরি শিকারি ড্রোনকেই এ বার ভরসা করছে ভারত (MQ-9B SeaGuardian Drones)। 


আমেরিকার ওই সংস্থার কাছ থেকে যে শিকারি ড্রোন কিনতে আগ্রহী ভারত, সেটি ভূপৃষ্ঠের অনেক উঁচু দিয়ে উড়তে সক্ষম। ফলে সহজে ঠাহর করা যায় না। একটানা দীর্ঘ পাথ পাড়ি দেওয়ার ক্ষমতাও রয়েছে এই শিকারি ড্রোনের। নির্ভুল লক্ষ্য়ে, একেবারে বিন্দুসমান অবস্থান হলেও, শত্রুপক্ষের উপর আঘাত হানতে সক্ষম। 


দিল্লি সূত্রে খবর, দেশের সীমান্ত এলাকায় শত্রুপক্ষের গতিবিধির উপর নজর রাখতে ব্যবহার করা হবে এই শিকারি ড্রোন। ভারতীয় জলসীমায় নজরদারি চালাতেও এই শিকারি ড্রোন উপকূলরক্ষী বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হবে। এমনকি নৌবাহিনীর উদ্যোগেই এই শিকারি ড্রোন কেনার তৎপরতা শুরু হয় বলে জানা গিয়েছে। 


আরও পড়ুন: Cyclone Biparjoy: আছড়ে পড়েছে ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়, তাণ্ডবলীলা চলবে মাঝরাত পর্যন্ত, জানিয়েছে মৌসম ভবন


এখনও পর্যন্ত যে খবর মিলেছে, সেই অনুযায়ী, ভারতীয় জলসীমায় বেশ কিছু এলাকায় নজরদারি চালানোর দায়িত্ব রয়েছে উপকূলরক্ষী বাহিনী। তাদের হাতে ১৫টি শিকারি ড্রোন তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। সীমান্ত এলাকায় মোতায়েন সশস্ত্রবাহিনী, বায়ুসেনার হাতেও ১৫টি করে ড্রোন তুলে দেওয়া হবে বলে দিল্লি সূত্রে জানা যাচ্ছে।


MQ-9B SeaGuardian শিকারি ড্রোন অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে তৈরি। এর সঙ্গে যুক্ত থাকে ক্ষেপণাস্ত্রও। শত্রুপক্ষের গতিবিধি লক্ষ্য করে একেবারে নির্ভুল আঘাত হানে এই MQ-9B SeaGuardian ড্রোন। এই মুহূর্তে ভারতের হাতে দু'টি শিকারি ড্রোন রয়েছে। সেগুলি আমেরিকারই একটি সংস্থার কাছ থেকে ইজারায় নেওয়া হয়। ভারত মহাসাগরে শত্রুপক্ষের গতিবিধির উপর নজর রাখতে সেগুলি ব্যবহার করে নৌবাহিনী। 


আগামী ২১ জুন আমেরিকা সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তার আগে এই ড্রোন কেনার চুক্তিতে সিলমোহর পেতে আমেরিকা সরকারের তরফে ভারতের উপর চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে বলে দু'দিন আগেই সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের একটি রিপোর্টে দাবি করা হয়। আমেরিকার বিদেশ বিভাগ, পেন্টাগন এবং হোয়াইট হাউসের তরফে চুক্তিস্বাক্ষরের গতিবৃদ্ধি করতে বলা হয় বলে দাবি করা হয় তাতে। আমেরিকায় হোয়াইট হাউসে মোদিকে স্বাগত জানাবেন সে দেশের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সেখানেই চুক্তিতে সিলমোহর পড়বে বলে জানা যাচ্ছে।