বীরভূম: সিবিআইয়ের (CBI) বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ লালন শেখের স্ত্রীর ( Lalan Sheikh's Wife)। সিবিআই হেফাজতে বগটুইকাণ্ডের (Bogtui Case) মূল অভিযুক্তের মৃত্যু ঘিরে তুলকালাম। 'মামলা ধামাচাপা দিতে ৫০ লক্ষ টাকা চেয়েছিল সিবিআই', বিস্ফোরক দাবি লালনের স্ত্রীর। খুন করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে লালনকে, অভিযোগ লালনের স্ত্রীর।
সিবিআই হেফাজতে থাকাকালীন কীভাবে মৃত্য়ু? উঠছে প্রশ্ন
বগটুইকাণ্ডে মূল অভিযুক্ত লালন শেখের সিবিআই হেফাজতে মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর থেকেই থমথমে বগটুই গ্রাম। অশান্তির আশঙ্কায় আগে থেকেই প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। বগটুইকাণ্ডে যাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন, তাঁদের বাড়ির সামনেও সক্রিয় পুলিশি প্রহরা রয়েছে। রামপুরহাট হাসপাতালে হবে লালনের দেহের ময়নাতদন্ত। ইতিমধ্যেই হাসপাতালে পৌঁছে গিয়েছে সিবিআই ও সিআরপিএফ-এর টিম। লালন শেখ গ্রেফতার হওয়ার আগেই তার বাড়ি আগেই সিল করে দিয়েছিল সিবিআই। গতকাল সিবিআইয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পের শৌচাগার থেকে উদ্ধার হয় বগটুুইকাণ্ডে মূল অভিযুক্ত লালন শেখের ঝুলন্ত দেহ। সিবিআই সূত্রে দাবি করা হয়, লালন আত্মঘাতী হয়েছে। অন্যদিকে, সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে লালনকে পিটিয়ে মারার অভিযোগ করেছে তার পরিবার। কিন্তু সিবিআই হেফাজতে থাকাকালীন কীভাবে মৃত্য়ু? উঠছে প্রশ্ন!
সিবিআইয়ের একাধিক আধিকারিকের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের
উল্লেখ্য, সিবিআই হেফাজতে বগটুইকাণ্ডের মূল অভিযুক্তের মৃত্যু ঘিরে তুলকালাম। রামপুরহাটে সিবিআইয়ের অস্থায়ী ক্যাম্প ঘিরে লালন-ঘনিষ্ঠদের বিক্ষোভ। সিবিআইয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পে বিক্ষোভ, জাতীয় সড়ক অবরোধ। সিবিআইয়ের হেফাজতে খুনের অভিযোগে লালন-ঘনিষ্ঠদের বিক্ষোভ। সিবিআইয়ের একাধিক আধিকারিকের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগে মামলা। খুন ছাড়াও তোলাবাজি, হুমকি-সহ একাধিক ধারায় লালনের স্ত্রীর মামলা। সিবিআইয়ের একাধিক আধিকারিকের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের। খুন নয়, আত্মহত্যা, পুলিশের কাছে দাবি সিবিআইয়ের, খবর সূত্রের। ময়নাতদন্তের রিপোর্টের অপেক্ষায় রামপুরহাটের বগটুই গ্রাম। 'হেফাজতে লালনের মৃত্যু নিয়ে উত্তর দিতে হবে সিবিআইকে'। সিবিআইয়ের এত স্মার্ট হলে কীভাবে ঘটল এধরনের ঘটনা ? প্রশ্ন মুখ্যমন্ত্রীর (CM Mamata Banerjee)।
আরও পড়ুন, 'সামাজিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে অতুলনীয় পশ্চিমবঙ্গ', মেঘালয়ে মমতার মুখে বাংলার উন্নয়নের খতিয়ান
ঠিক কী হয়েছিল বগটুই গ্রামে ?
প্রসঙ্গত, চলতি বছরে ২১ মার্চ রাতে খুন হন রামপুরহাট বড়শাল গ্রাম পঞ্চায়েতে উপপ্রধান ভাদু শেখ। তার পর ওই গ্রামের একের পর বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। অগ্নি সংযোগের ওই ঘটনায় মৃত্যু হয় একাধিক জনের। ঘটনাস্থল থেকেই একাধিক জনের দগ্ধ দেহ উদ্ধার হয়েছিল। ওই ঘটনায় তীব্র শোরগোল পড়েছিল রাজ্য-রাজনীতিতে। প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে শাসক দলকে ক্রমাগত আক্রমণ করেছিল বিরোধীরা। পরে ঘটনাস্থলে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সাহায্য করা হয় সরকারের তরফে। বগটুইকাণ্ডের পরদিন অর্থাৎ ২২ মার্চ পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত এফআইআর দায়ের করে। পরে তদন্তভার হাতে নেয় সিবিআই। ভাদু শেখ খুন এবং বগটুইয়ে অগ্নিকাণ্ড-দুটিরই তদন্ত করছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। বগটুইয়ের ঘটনা নিয়ে এখনও শাসক-বিরোধী তরজা চলে। বীরভূমের গ্রামে এমন ঘটনা প্রশাসনের গাফিলতির দিকে অভিযোগের আঙুল তোলেন বিরোধীরা। রাজ্যের পুলিশ এই ঘটনায় তদন্ত করার সময়, তদন্তে গাফিলতির অভিযোগও তুলেছিলেন বিরোধীরা।