বিয়ে বাড়ি। হইচই। বহু মানুষের সমাগম। সবাই ছিলেন আনন্দের মেজাজে। কেউ ব্যস্ত হাসি - ঠাট্টায়। কেউ ছবি তোলায়। কেউ আবার খাবারের প্লেটে মগ্ন। এমন সময় বিয়ে বাড়ির মধ্যে হুড়মুড়িয়ে ঢুকে পড়ল একটি মিনিবাস। কিছু বুঝে ওঠার আগেই পরপর ধাক্কা মারতে শুরু করে । বাসের ধাক্কায় রক্তাক্ত হয়ে ছিটকে ছিটকে পড়তে থাকেন একের পর এক। দুমড়ে মুচড়ে যায় বিয়েবাড়ির মণ্ডপ, তোরণ, সাজসজ্জা, সবকিছু। না কোনও অনিচ্ছাকৃত দুর্ঘটনা নয় এটা, একেবারে পরিকল্পিত হামলা। তাও আবার এক আমন্ত্রিতেরই।
উত্তর প্রদেশের চান্দৌলি জেলায় একটি বিয়ে বাড়িতে ঘটনাটি ঘটে। এক ব্যক্তি ওই বিয়েবাড়িতে আমন্ত্রিত ছিলেন। তিনিই মিনিবাস চালিয়ে ধাক্কা দিয়ে ছয়জনকে ভয়াবহ ভাবে আহত করে। তছনছ করে ফেলে সমস্তকিছু। যার আর্থিক মূল্য প্রায় ৩ লক্ষ টাকা। অবাক হচ্ছেন, কেমন একজন নিমন্ত্রিত এটা ঘটালেন ? অবাক করবে এর পিছনের কারণটিও। ওই ব্যক্তি বিয়েবাড়িতে পনির খেতে চেয়েও পাননি ! আর এটাই এই ভয়াবহ হামলার কারণ।
পনির না পেয়ে তছনছ
NDTV-তে প্রকাশিত খবর অনুসারে, মুঘলসরাই কোতোয়ালি এলাকার হামিদপুর গ্রামে রাজনাথ যাদব নামে এক ব্যক্তির মেয়ের বিয়ে ছিল। শনিবার সন্ধ্যায় বরযাত্রী এসে পৌঁছলে অনুষ্ঠানস্থল জমজমাট হয়ে ওঠে। সবকিছুই ঠিকঠাক চলছিল। এমন সময়, একজন খাবার জায়গায় ঢুকে খাবারের স্টলের দিকে যান। ধর্মেন্দ্র যাদব নামে ওই ব্যক্তি সার্ভিস বয়কে পনির দিতে বলেন। কিন্তু তিনি জানান সেখানে পনির নেই। ধর্মেন্দ্র পনির না পেয়ে প্রচণ্ড চটে যান। চোটপাট শুরু করেন।
এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ধর্মেন্দ্র যাদব বিয়ে বাড়িতে খাওয়া শুরু করেছিলেন। তারপর তিনি পনির চান। তা না পেয়েই,তিনি মারাত্মক রেগে যান। বিয়ের অনুষ্ঠানের মাঝখানে একটি বাস চালিয়ে দেন তিনি। সেখানে আটজন আহত হন । ৩ লক্ষ টাকারও বেশি মূল্যের জিনিসপত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরপরই সে এই ভয়ানক কাজটি করে বসে। একটি টেম্পো ট্রাভেলার যান চালিয়ে তিনি বিয়ে বাড়িতে ঢুকিয়ে দেন। একের পর এক অতিথিকে ধাক্কা মেরে উড়িয়ে দেন। বিশৃঙ্খলা শুরু হলে, সেই বাস নিয়েই চম্পট দেয় সে।
আহতদের কী অবস্থা
সূত্রের খবর, বরের বাবা এবং কনের কাকা সহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। তারা বারাণসীর একটি ট্রমা সেন্টারে চিকিৎসাধীন। ঘটনার পর, বরপক্ষ স্পষ্ট জানিয়েছে, যতক্ষণ না পর্যন্ত ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত বিয়ে হবে না। কনের পক্ষ অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার পর, পরের দিন দুপুর ১২টা নাগাদ বিয়ের অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়।