তিরুপতি: তিরুপতি মন্দিরের প্রসাদে বিতরণ করা লাড্ডুতে (Tirupati Laddu Controversy) গরু ও শুয়োরের চর্বি (Beef & Pig fat) এবং মাছের তেল (Fish oil) মেশানোর প্রমাণ পাওয়া গেছে পরীক্ষায়। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পরে তুমুল বিতর্ক দেখা দিয়েছে। এবার এই বিষয়ে রিপোর্ট তলব করলেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী (union health minister) মনসুখ মান্ডব্য। এর পাশাপাশি এই বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) হস্তক্ষেপ দাবি করে মামলাও দায়ের হয়েছে। 


জগনমোহন রেড্ডির ওয়াইএসআর কংগ্রেসের শাসনকালে তিরুপতি মন্দিরের প্রসাদে বিতরণ হওয়া লাড্ডুতে গরু ও শুয়োরের চর্বি এবং মাছের তেল মেশানো হত বলে সম্প্রতি অভিযোগ করেছিলেন অন্ধ্রপ্রদেশের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী ও টিডিপি প্রধান চন্দ্রবাবু নায়ডু। তারপর ওই লাড্ডু পরীক্ষা করে তার প্রমাণও পাওয়া যায়। যা নিয়ে শুরু হয়েছে তুমুল বিতর্ক। ইতিমধ্যেই এই বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকার ও মন্দির কর্তৃপক্ষের কাছে রিপোর্ট তলব করেছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী। অন্যদিকে এই বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপে চেয়ে দেশের সর্বোচ্চ আদালতে জমা পড়েছে হলফনামাও।


সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়কে একটি চিঠি লিখে অবিলম্বে তিরুমালার লাড্ডুতে ব্যবহাত ঘি-এর মধ্যে যে পশুর চর্বি পাওয়া গেছে সেই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার আবেদন জানানো হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টে জমা পড়া হলফনামায় উল্লেখ করা হয়েছে যে তিরুমালা তিরুপতি দেবাশ্রম ট্রাস্টের পূর্বতন কর্তপক্ষ তাদের আমলে ভক্তদের প্রসাদ হিসেবে যে লাড্ডু বিতরণ করত তাতে পশুর চর্বি মেশানোর বিষয়ে যেন অবিলম্বে হস্তক্ষেপ করে সুপ্রিম কোর্ট। যারা এর জন্য দায়ী তাদের বিরুদ্ধে যেন উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয় তারও অনুরোধ করা হয়েছে হলফনামায়।


এই বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করে আইনজীবী সত্যম সিং দাবি করেছেন, সম্প্রতি তদন্তে উঠে এসেছে যে তিরুমালা মন্দিরের প্রসাদে আমিষ ব্যবহার করা হয়েছে। বিশের করে পাখির মাংসও ব্যবহার হয়েছে ভক্তদের মধ্যে বিতরণ করা লাড্ডু প্রসাদে। আর এই কাজটি করেছে তিরুপতি তিরুমালা মন্দির ট্রাস্টের পূর্বতন কর্তপক্ষ। ওই আইনজীবীর দাবি, এই ঘটনা ঘটিয়ে হিন্দুদের ধর্মীয় সংস্কারে আঘাত করার পাশাপাশি আমাদের ধর্মীয় আচরণ ও বিশ্বাসের একদম গভীরে আঘাত হানা হয়েছে। এই বিষয়টি সম্পূর্ণ সংবিধানের পরিপন্থী। এই ঘটনা সংবিধানে উল্লেখিত ২৫ (১) ধারাটিকে সম্পূর্ণ অস্বীকার করা হয়েছে। যে ধারায় উল্লেখ্য করা হয়েছে যে ভারতে বসবাসকারী সমস্ত মানুষকে তাঁদের নিজের ধর্মীয় আচরণ পালন করতে দেওয়া হবে। তাঁদের ধর্মাচরণের অধিকারকে কোনও অবস্থাতেই লঙ্ঘন করা যাবে না।


সুপ্রিম কোর্টে জমা দেওয়া হলফনামায় আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে প্রসাদের প্রস্তুতি ও তার বিতরণ হিন্দু ধর্মীয় আচরণের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। প্রাচীনকাল থেকে এটা ভারতের ঐতিহ্য ও আধ্যাত্মিকতার সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে যুক্ত। সেখানে প্রসাদে আমিষ ব্যবহার করে মন্দির কর্তপক্ষ ভক্তদের ধর্মীয় অধিকার ও বিশ্বাসে চরম আঘাত এনেছে। সুপ্রিম কোর্টের উচিত অবিলম্বে এই বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করে এই ঘটনায় দায়ীদের কড়া শাস্তি দেওয়া।    


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।


আরও পড়ুন: Tirupati Laddu Controversy: তিরুপতির লাড্ডুতে গরু, শুয়োরের চর্বি ও মাছের তেল! কী জানাল মন্দির কর্তৃপক্ষ