নয়াদিল্লি: ইয়াহিয়া সিনওয়ার! 'হামাস'-র অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, ৭ অক্টোবরের হামলার মূল চক্রী। ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানইয়াহুর দাবি সত্যি হলে, এই মুহূর্তে প্রাণ হাতে নিয়ে বাড়িতে কোথাও লুকিয়ে রয়েছেন সিনওয়ার। তবে বেশিক্ষণ পারবেন না, হুঙ্কার নেতানইয়াহুর। গাজার খান ইউনিসে তাঁর বাড়ির চারদিক ঘিরে ফেলেছএ ইজরায়েলি সেনা। সিনওয়ারকে খুঁজে খতম করা এখন স্রেফ সময়ের অপেক্ষা, দাবি তেল আভিভের। মাসদুয়েক আগে যে সংঘর্ষ শুরু হয়েছিল, তার গোড়াতেই নেতানইয়াহু জানিয়েছিলেন, এবার হামাসের মেরুদণ্ড না ভেঙে ক্ষান্ত দেবেন না। কিন্তু সন্ত্রাসদমনের জন্য যে ভাবে নাগাড়ে গাজায় বোমাবর্ষণ করছে আইডিএফ, তার পর সেখানে মানুষের চিহ্ন বলতেই কিছু থাকবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। সংঘর্ষবিরতির জন্য বার বার আর্জি জানিয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জ। এবার সেই লক্ষ্যে রাষ্ট্রপুঞ্জের সনদের ৯৯ নম্বর অনুচ্ছেদ প্রয়োগ করলেন মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেজ যা কিনা বিরল ঘটনা।


ছবি...
সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেলে গুতেরেজ লেখেন, 'মহাসচিব হিসেবে আমার মেয়াদে এই প্রথম রাষ্ট্রপুঞ্জের সনদের ৯৯ নম্বর অনুচ্ছেদ প্রয়োগ করলাম। গাজার মানবিক পরিকাঠামো পুরোপুরি ভেঙে যাওয়ার মুখে। নিরাপত্তা পরিষদের কাছে এই ভয়ঙ্কর মানবিক বিপর্যয় এড়াতে সাহায্যের আর্জি জানাচ্ছি। দয়া করে মানবিকতার খাতিরে সংঘর্ষবিরতি ঘোষণা করুন।' ৯৯ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক শান্তি বিঘ্নিত করে এমন কোনও বিষয় সম্পর্কে নিরাপত্তা পরিষদকে জানাতে পারেন মহাসচিব। প্রয়োজনে সংঘর্যবিরতির জন্য চাপও দিতে পারেন। বস্তুত, এই মুহূর্তে গাজার যা পরিস্থিতি তাতে এই ধরনের সংঘর্ষবিরতি না হলে বাঁচানোর মতো খুব কিছু থাকবে কিনা, সেটা নিয়েই সন্দেহ থাকছে।
গত দুদিন ধরে তুমুল সংঘর্ষ চলছে মূলত দুটি জায়গায়। উত্তর গাজার জাবালিয়া উদ্বাস্তু শিবিরে, আর দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে। বোমাবর্ষণে তীব্র ক্ষতিগ্রস্ত শহর এলাকার অলিগলি দিয়ে ঢুকে পড়েছে আইডিএফ। এখন তাঁদের লক্ষ্য, হামাস সদস্যদের গুলির লড়াইয়ে শেষ করা। অন্য দিকে, হামাসের চেষ্টা, ইমপ্রোভাইসড বোমা তৈরি করে যতটা সম্ভব আইডিএফ সদস্যদের নিধন এবং আত্মরক্ষা। আর এর ফাঁকে পড়ে ভয়ঙ্কর দশা সাধারণ বাসিন্দাদের। গাজার স্বাস্থ্যমন্ত্রকের হিসেব অনুযায়ী, এবারের যুদ্ধ শুরুর পর এখনও পর্যন্ত অন্তত ১৬ হাজার ২৪৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। সাড়ে ৭ হাজারেরও বেশি মিসিং। অন্যদিকে, ৭ অক্টোবরের হামলায় ১২০০-র বেশি ইজরায়েলি মারা যান। তার পর থেকে হামাসকে নির্মূল করতে একবগ্গা ইজরায়েল।


নজরে সিনওয়ার...
আইডিএফের মুখপাত্র জানাচ্ছেন, তাঁদের কাছে হামাসের এই প্রতিষ্ঠাতা সদস্যের বর্তমান সাকিন-ঠিকানা নিয়ে সুনির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্য রয়েছে। তবে এখনও তা নিয়ে মুখ খোলার সময় আসেনি। আপাতত তাঁদের লক্ষ্য একটাই। ৭ অক্টোবরের হামলার মাস্টারমাইন্ডকে খুঁজে শেষ করা। খান ইউনিস শরণার্থী শিবিরে জন্মানো এই ৬১ বছরের নেতা ২০১৭ সালে হামাসের অন্যতম প্রধান হিসেবে নির্বাচিত হন। এবার তাঁকেই শেষ করার টার্গেট আইডিএফের।


আরও পড়ুন:ফের বন্দুকবাজের হামলা আমেরিকায়, লাস ভেগাসে নিহত ৩ নাগরিক