নয়াদিল্লি : বছরের পর বছর ধরে ইজরায়েলে (Israel) মৃতদেহ সরানোর কাজ করেন। কিন্তু, গাজার হামলায় (Gaza Attack) নিহতদের সরাতে গিয়ে শিহরিত হয়ে উঠছেন ইয়োসি ল্যান্ডাও। একের পর এক অভিজ্ঞতার কথা শোনাতে গিয়ে কার্যত কেঁপে উঠছেন তিনি। 


শনিবার সাইরেনের আওয়াজে জেগে ওঠেন। তাতে অবশ্য প্রাথমিকভাবে আতঙ্কিত হয়ে পড়েননি। কারণ, এই আওয়াজে আর পাঁচটা ইজরায়েলির মতোই অভ্যস্ত তিনি। আসন্ন রকেট ফায়ারের জন্য প্রায়ই শেল্টারে আশ্রয় নিতে হয় তাঁদের। কিন্তু, এবারের আওয়াজের ভয়াবহতা বুঝতে তাঁর দেরি হয়নি। খুব শীঘ্রই তিনি জানতে পারেন, হামাস সশস্ত্র গোষ্ঠীর আক্রমণ চাপা দেওয়ার জন্য পাল্টা জবাব দেওয়ার চেষ্টা করছে ইজরায়েল।


গাজার উত্তর দিকে বন্দর শহর (Port Town) আশদোড়ে তাঁর বাড়ি। সেখান থেকে ঘটনাস্থলে ছুটে যান তিনি। দেখতে পান সেখানকার ভয়াবহ দৃশ্য। সীমান্ত-ঘেঁষা একটি শহরের চিত্র তুলে ধরতে গিয়ে তিনি বলেন, দেখলাম, "গাড়িগুলো সব ওল্টানো, রাস্তায় মানুষের মৃতদেহের সার।"  


অস্বাভাবিকভাবে মৃত্যু হয়েছে এমন দেহ সংগ্রহকারী একটি সংস্থা জাকা। তাদের হয়ে দীর্ঘদিন স্বেচ্ছাসেবক হিসাবে কাজ করছেন ইয়োসি ল্যান্ডাও। প্রায় ৩৩ বছর ধরে একাজ করে চলেছেন তিনি। কিন্তু, প্যালেস্তিয়ানের সশস্ত্র গোষ্ঠী ও ইজরায়েল বাহিনীর মধ্যে যুদ্ধের যে ভয়াবহতা দেখা গেছে, তা তিনি এর আগে কখনোও দেখেননি বলে জানান ইয়োসি। তিনি বলেন, "যে রাস্তা পেরোতে ১৫ মিনিট সময় লাগার কথা, সেটাই ১১ ঘণ্টা সময় লেগে গিয়েছিল। কারণ, আমরা একের পর এক মৃতদেহ সংগ্রহ করে তা ব্যাগে ভরছিলাম।"


শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ট্রাকে ডজন ডজন মৃতদেহ তোলার পর, ল্যান্ডাও ও তাঁর সঙ্গী-স্বেচ্ছাসেবকরা গাজা থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত বিরিতে পৌঁছন। এখানকার ভয়াবহতার ছবি তিনি ভুলতে পারেননি এখনও। প্রথম একটা বাড়িতে ঢুকেই এক মহিলার মৃতদেহ দেখতে পান তাঁরা। ল্যান্ডাও বলেন, "মনে হচ্ছিল, আমি ছিন্নভিন্ন হয়ে যাব। শুধু আমি-ই নয়, আমার সঙ্গীরাও। ওই মহিলার পেট ছিন্নভিন্ন হয়ে গিয়েছিল, সেখানে ছিল এক শিশু। তখনও পর্যন্ত নাড়ির সঙ্গে যুক্ত এবং ছুরিকাঘাত করা হয়েছিল।" তাঁর সংযোজন, "দেখলাম, কয়েকজনকে বিষ দেওয়া হয়েছে এবং যৌন হেনস্থা করা হয়েছে।"


আরও পড়ুন ; সৌজন্যে 'অপারেশন অজয়', যুদ্ধবিধ্বস্ত ইজরায়েল থেকে প্রথম ধাপে ফিরলেন ২১২ জন ভারতীয়