নয়া দিল্লি : হিন্দুদের বিশ্বাস অনুযায়ী, ভগবান বিষ্ণুর মানব অবতার কৃষ্ণ। মথুরার রাজা কংসকে বধ করার জন্য তাঁর জন্ম হয়েছিল। কৃষ্ণর মা দেবকীর ভাই- কংস।


জন্মাষ্টমীর ইতিহাস 


দেবকী ও বাসুদেবের সন্তান কৃষ্ণ। ভাদ্রমাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে মথুরায় জন্ম হয় তাঁর। সেই সময় মথুরার রাজা ছিলেন দেবকীর ভাই কংস। তাঁকে ভবিষ্যবাণী করা হয়েছিল, দেবকী ও বাসুদেবের অষ্টম পুত্র তাঁকে হত্যা করবে।


কথিত আছে, কংস তাঁর বোন ও ভগ্নি-পতীকে ভালোবাসতেন। কিন্তু, তাঁদের অষ্টম পুত্র তাঁকে হত্যা করবে, এই ভবিষ্যবাণী শোনার পর তাঁদের সব সন্তানকে হত্যা করার সিদ্ধান্ত নেন কংস। প্রথম ছয় সন্তানকে হত্যা করতে সক্ষমও হন। সপ্তম সন্তানের হদিশ পাননি কংস। অষ্টম সন্তান, অর্থাৎ কৃষ্ণের জন্মের সময় গোটা রাজ্য ঘুমিয়ে পড়েছিল। বাসুদেব গোপনে সেই সন্তানকে বৃন্দাবনের নন্দ বাবা ও যশোধাকে হস্তান্তরিত করেন।


তার পরিবর্তে এক কন্যাসন্তানকে নিয়ে আসনে বাসুদেব ও দেবকী। যাতে তাঁদের অষ্টম সন্তান কৃষ্ণের কোনও খোঁজ না পান কংস। ওই কন্যাসন্তানকে নিয়ে এসে অসুরের হাতে তুলে দেওয়া হয়। কিন্তু, তিনি যখন তাকে হত্যা করতে উদ্যত হন, সেই সময় ওই কন্যাসন্তান দেবী দুর্গায় রূপ ধারণ করেন। তিনি কংসকে সব কুকর্মের জন্য সতর্ক করে দেন।


এদিকে বৃন্দাবনে বেড়ে ওঠে কৃষ্ণ। সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে তাঁর কোনও ধারণা ছিল না। যখন আরও বড় হয়ে ওঠেন, গোটা বিষয়টি তিনি শোনেন। তার পর সোজা মথুরা চলে আসেন। এখানে এসে কংসকে হত্যা করেন। দেখা হয় মা-বাবা দেবকী ও বাসুদেবের সঙ্গে।


জন্মাষ্টমীর তাৎপর্য


ভগবান কৃষ্ণের জন্মতিথিতে মথুরা ও বৃন্দাবনের বিভিন্ন মন্দির ফুল, মালা ও অন্যান্য সামগ্রীতে সাজিয়ে তোলা হয়। বিশ্বাস অনুযায়ী, মথুরায় মধ্যরাতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন কৃষ্ণ। বেড়ে ওঠেন বৃন্দাবনে। যেহেতু, মধ্যরাতে তাঁর জন্ম,তাই শিশু কৃষ্ণর মূর্তি স্নানের পর দোলনায় স্থাপন করা হয়। কৃষ্ণর জীবন-কথা নিয়ে বিভিন্ন রকম প্রদর্শনীতে যোগ দেন ভক্তরা। তুলে ধরা হয় তাঁর সাহসিকতা, বন্ধুত্ব এবং রাধার সঙ্গে বিশেষ সম্পর্কের কথা। এই প্রদর্শনীকে বলা হয়, রাসলীলা।


জন্মাষ্টমী ২০২১


এবছর ৩০ অগাস্ট জন্মাষ্টমী পালন করা হবে। এই দিনে ভগবান কৃষ্ণের আরাধনা করা হয়। বিশেষ এই দিনটিতে প্রদীপ, ফুল দিয়ে সাজিয়ে তোলা হয় মন্দির।