নয়াদিল্লি: ভারতের সঙ্গে চিনের লাদাখ সীমান্ত সংঘাতের আবহে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য জানাল জাপান। ভারতে নিযুক্ত জাপানি রাষ্ট্রদূত সাতোশি সুজুকি নিজের সরকারি ট্যুইটার হ্যান্ডলে জানিয়েছেন, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় (এলএসি) একতরফা স্থিতাবস্থা বদলের যে কোনও প্রয়াসের বিরোধী তাঁর দেশ। ভারতের বিদেশ সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিঙ্গলার সঙ্গে আলোচনার পরই তিনি এই অভিমত জানান।
কয়েক মাস ধরে লাদাখ সীমান্ত ঘিরে ভারত ও চিনের মধ্যে সংঘাত-বিরোধ চলছে। এ নিয়ে দুদেশের মধ্যে কূটনৈতিক ও সামরিক স্তরে একাধিক বৈঠক হলেও বরফ গলেনি। এই প্রেক্ষাপটেই শুক্রবার আচমকা লাদাখ সেক্টর সফরে যান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, গত ১৫ জুন গালওয়ান সেক্টরে চিনা সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে জখম ভারতীয় জওয়ানদের সঙ্গে দেখা করেন, তাঁদের সাহসিকতার প্রশংসা করেন। সেদিনই জাপানের রাষ্ট্রদূত ভারতের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিলেন।


লাদাখকে কেন্দ্র করে ভারত, চিনের সংঘাতের শান্তিপূর্ণ সমাধানের লক্ষ্যে নয়াদিল্লির প্রয়াসকেও সমর্থন করেন সুজুকি। তিনি ট্যুইটে লেখেন, বিদেশ সচিব শ্রিঙ্গলার সঙ্গে বেশ ভাল কথাবার্তা হয়েছে। ভারত সরকারের শান্তিপূর্ণ সমাধানের উদ্যোগ বহাল রাখার নীতি সহ এলএসি বরাবর পরিস্থিতি নিয়ে তাঁর ব্রিফিংয়ের প্রশংসা করছি। জাপানও আলোচনার রাস্তায় শান্তিপূর্ণ মীমাংসার আশা করে। স্থিতাবস্থার বদল ঘটাতে যে কোনও একতরফা প্রয়াসের বিরোধিতা করে জাপান। গত ১৯ জানুয়ারি সুজুকি ট্যুইট করে ‘গালওয়ান উপত্যকায় কর্তব্য পালন করতে গিয়ে প্রাণ হারানো’ ২০ জন ভারতীয় জওয়ানের পরিবারবর্গ ও ভারতের জনগণের প্রতি জাপানের শোকবার্তা দেন।
প্রসঙ্গত, সীমান্তে উত্তেজনার মধ্যেই জাপানের নৌবাহিনীর সেলফ-ডিফেন্স ফোর্সের প্রশিক্ষণের ভেসেল বা নৌযান গত ২৭ জুন ভারত মহাসাগরে দুটি ভারতীয় যুদ্ধজাহাজের সঙ্গে ছোটখাট মহড়া দেয়। নয়াদিল্লির জাপানি মিশনের উপপ্রধান তোসিহিদে আন্ডো জানান, গত তিন বছরে এটা দুদেশের ১৫-তম যৌথ মহড়া। তিনি বলেন, ভারতীয় নৌবাহিনীর সঙ্গে পারস্পরিক বোঝাপড়া ও আস্থা গড়ার লক্ষ্যে এটা শুভেচ্ছা ট্রেনিং। এই মহড়ার বিষয়বস্তু হল কৌশলগত ও যোগাযোগ সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ।
অতীতে ২০১৭য় ডোকালামে সংঘাতের সময়ও সুজুকির পূর্বসূরী কেনজি হিরামাত্সু দৃঢ়ভাবে ভারতের পক্ষ সমর্থন করেন, বলেন, ভারত, ভুটান ও তিব্বতের সংযোগস্থলে অবস্থিত ডোকালামের অবস্থান বদলাতে কোনও দেশেরই বলপ্রয়োগ করা উচিত নয়। সেবার ৭৩দিন অচলাবস্থা বহাল ছিল। জাপানই প্রথম ভারতের অবস্থান সমর্থন করেছিল।
সম্প্রতি চিনের বিরুদ্ধে জাপান আরেকটি ক্ষেত্রেও সরব হয়েছে। পূর্ব চিন সাগর এলাকায় বিতর্কিত সেনকাকু দ্বীপপুঞ্জের কাছে তাদের জলসীমায় দুটি চিনা উপকূল রক্ষী জাহাজ ঢুকে পড়েছে বলে অভিযোগ তুলে চিনের কাছে তীব্র প্রতিবাদ জানায় জাপান।