টোকিও: চাঁদের বুকে ইতিহাস গড়েছে ভারতের ‘চন্দ্রযান ৩’। এবার চাঁদে রকেট পাঠাল জাপানও। চাঁদের বুকে অনুসন্ধান চালাতে দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি H-IIA মহাকাশযানের উৎক্ষেপণ করল তারা (Lunar Mission)। বৃহস্পতিবার রওনা দিয়েছে জাপানের মহাকাশযান। মহাকাশে বেশ কিছুদিন রেখে, সেটিকে নিরাপদে চন্দ্রপৃষ্ঠে অবতরণ করানো হবে। তা সম্পন্ন হলে, চাঁদের মাটি ছোঁয়া পঞ্চম দেশ হিসেবে গন্য হবে জাপান। (Japan SLIM)


জাপানের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা, জাপান এ্যারোস্পেস এক্সপ্লোরেশন এজেন্সি (JAXA) জানিয়েছেন, দেশের দক্ষিণের তানেগাশিমা স্পেস সেন্টার থেকে সফল উৎক্ষেপণ হয়  ল্যান্ডার  Smart Lander for Investigation Moon (SLIm)-সহ তাদের মহাকাশযানটির।  গত মাসেই ওই মহাকাশযান উৎক্ষেপণের কথা ছিল। কিন্তু খারাপ আবহাওয়ার জন্য উৎক্ষেপণের দিন পিছিয়ে আনা হয়।


এই মহাকাশযানকে  Sniper অর্থাৎ শিকারি বলেও উল্লেখ করছেন জাপানের বিজ্ঞানীরা। অব্যর্থ নিশানার জন্যই এমন নাম। JAXA জানিয়েছে, চন্দ্রপৃষ্ঠে নিজের লক্ষ্যের ১০০ মিটারের মধ্যেই অবতরণ করবে SLIM. আগামী বছর ফেব্রুয়ারি মাসে চন্দ্রপৃষ্ঠে অবতরণ করবে জাপানের মহাকাশযানটি। এই অভিযানে খরচ পড়েছে ১০০ মিলিয়ন ডলার, ভারতীয় মুদ্রায় যা প্রায় ৮ হাজার ৩০০ কোটি টাকা।



আরও পড়ুন: Chandrayaan 3: বিক্রমের 3D ছবি তুলল প্রজ্ঞান! কেমন দেখতে লাগছে ল্যান্ডারকে?


এর আগে, ২০২২ সালে দু’-দু’বার চন্দ্রাভিযানে হাত দেয় জাপান। কিন্তু দু’বারই ব্যর্থ হয় তারা। নভেম্বর মাসে অবতরণের আগে  OMOTENASHI ল্যান্ডারের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তার আগে, গতবছর এপ্রিল মাসে স্টার্টআপ সংস্থা ispace-এর তৈরি Hakuto-R Mission 1 ল্যান্ডারও চাঁদের মাটি ছুঁতে ব্যর্থ হয়।


এবার যে H-IIA মহাকাশযান পাঠানো হয়েছে, তাতে X-Ray ইমেজিং এবং স্পেকট্রোস্কোপি (XRISM) নামের একটি কৃত্রিম উপগ্রহ রয়েছে। আমেরিকার মহাকাশযান NASA, ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি এবং JAXA-র যৌথ অভিযান এটি। H-IIA মহাকাশযানটি তৈরি করেছে Mitsubishi Heavy Industries. সেটি পরিচালনাও করছে তারাই। এই নিয়ে ২০০১ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত ৪৭তম মহাকাশযান উৎক্ষেপণ করল জাপান। এই দশকের শেষ নাগাদ চাঁদে মানুষ পাঠানোরও পরিকল্পনা রয়েছে তাদের।


JAXA জানিয়েছে, অনুকুল পরিবেশ দেখে নয়, যেখানে ইচ্ছে, সেখানে অবতরণ করতে পারে ল্যান্ডার SLIM। পৃথিবী থেকে কালো দাগ হিসেবে দৃশ্যমান, চাঁদের Mare Nectaris সমুদ্রের পাড়েই আপাতত সেটিকে নামানোর লক্ষ্য রয়েছে। মহাকাশযানটিতে কোনও রোভার নেই। ল্যান্ডারই পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাবে। মাটির গঠন খতিয়ে দেখবে।