কলকাতা: মুর্শিদাবাদের নবগ্রামে বিক্ষোভের মুখে পড়লেন রাজ্য বিজেপির দায়িত্বপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয়। তাঁকে কালো পতাকা দেখানো হল, চলল গো-ব্যাক স্লোগান। বিক্ষোভ সরাতে নিজেই রাস্তায় নামলেন কৈলাস, পুলিশের সঙ্গেও দীর্ঘক্ষণ চলল বচসা।
বুধবার আক্রান্ত দলীয় কর্মীদের সঙ্গে দেখা করতে মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুরে যাওয়ার কথা ছিল বিজেপির সাধারণ সম্পাদক কৈলাসের। সঙ্গে ছিলেন বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। কিন্তু নবগ্রামে পৌঁছতেই দেখা যায় রাস্তা আটকে দাঁড়িয়ে গাড়ি-টোটো। কৈলাসের গাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখানো শুরু হয়। বিক্ষোভ সামলাতে এরপর নিজেই গাড়ি থেকে নামেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা। নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে নিয়ে রাস্তা আটকে থাকা টোটো সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। তখন উত্তেজনা আরও বাড়ে। এভাবে মিনিট পাঁচেক চলার পর গাড়ি ঘুরিয়ে অন্যপথে জঙ্গিপুরের দিকে রওনা দেয় বিজেপির প্রতিনিধি দল। কিন্তু মোড়গ্রামের কাছে রাস্তায় যানজট থাকায় ফের আটকে যায় কৈলাসের গাড়ি।
গাড়ি থেকে ফের নেমে আসেন তিনি। নিরাপত্তারক্ষীদের নিয়ে রাস্তায় সার দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকের পাশ দিয়ে এগোতে শুরু করেন তিনি। কিন্তু বাধা দেয় পুলিশ। তখনই বেধে যায় তুমুল বচসা। কৈলাসের অভিযোগ, ইচ্ছাকৃত ভাবে মমতার পুলিশ আটকাল। আগে বিক্ষোভ দেখিয়েছে। তরোয়াল দেখিয়েছে। ডিজি, এসপিকে বলে এসেছি। তাও এমনভাবে আটকে দিল! এরপর স্থানীয় একটি চায়ের দোকানে গিসে বসেন তিনি। বেশ কিছুক্ষণ সেখানে বসে থাকার পর কর্মসূচি বাতিল করে কলকাতার পথে রওনা দেন।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে রাজ্যের বিভিন্ন অংশে যে বিক্ষোভ অশান্তি শুরু হয়েছে সেজন্য সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীকে দায়ী করেন কৈলাস। বলেন, মমতার উস্কানিতেই হচ্ছে এসব। পুলিশ ও সরকার নিজের কাজ করছে না। যা হচ্ছে দেশের মানুষ দেখছে। ভিডিও দেখে অভিযুক্তদের এখনও গ্রেফতার করা উচিত।
গোটা ঘটনা ফেসবুকে ভিডিও পোস্ট করে কৈলাস অভিযোগ করেন, এসপি ও ডিজি-কে ফোন করলেও তাঁরা ফোন ধরেননি। পশ্চিমবঙ্গে অরাজকতা চলছে। এখানে কারও প্রাণই সুপরক্ষিত নয়।
এ ঘটনা নিয়ে মুখ খুলেছেন রাজ্যপালও।
বিজেপি নেতার সফর নিয়েই পাল্টা প্রশ্ন তুলে তৃণমূল নেত্রী তথা রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, কৈলাস ওখানে কী করতে গেছেন? ওনার তো আরও অনেক কাজ আছে, সেসব করুন, মালদা-মুর্শিদাবাদে কী করতে গেছেন এখন? সব মিলিয়ে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতার মুর্শিদাবাদ সফর ঘিরে দিনভর টানটান উত্তেজনা।