মুম্বই: সুশান্ত সিংহ রাজপুতের মৃত্যুর পর বলিউডে ফের পুরোদমে চলছে স্বজনপোষণ বিতর্কে। কঙ্গনা রানাওয়াত প্রথম এই বিষয় থেকে পর্দা সরিয়েছিলেন। সুশান্তের আত্মহত্যার পর কঙ্গনা বলেছেন, তাঁকেও আত্মহত্যায় প্ররোচিত করার চেষ্টা করেন বলিউডের প্রভাবশালীরা।
মহেশ ভট্টর কাছে কিছুদিন আগে কাজ চাইতে যান সুশান্ত। মহেশ কাজ তো দেনইনি, উল্টে তাঁকে পরভিন ববির সঙ্গে তুলনা করেন। এ নিয়ে মহেশকে তুলোধোনা করেছেন কঙ্গনা। এবার তিনি অভিযোগ করেছেন জাভেদ আখতারের প্রতি। কঙ্গনা বলেছেন, হৃতিক রোশনের সঙ্গে তাঁর ঝামেলা যখন তুঙ্গে, তখন তাঁকে বাড়িতে ডাকেন জাভেদ। বলেন, রাকেশ রোশন আর তাঁর পরিবার অত্যন্ত প্রভাবশালী। যদি ওদের কাছে ক্ষমা না চাও, তোমার কোথাও যাওয়ার থাকবে না। তোমাকে ওরা জেলে পুরে দেবে, এক সময় নিজেকে শেষ করে দেবে তুমি.. আত্মহত্যা করবে। কঙ্গনার প্রশ্ন, কেন জাভেদের মনে হয়েছিল, হৃতিকের কাছে ক্ষমা না চাইলে তাঁকে আত্মহত্যা করতে হবে? এ সব বলার সময় তাঁর ওপর বিশ্রীভাবে চেঁচামেচি করেছিলেন জাভেদ, ভয়ে তিনি কাঁপছিলেন। অভিযোগ করেছেন কঙ্গনা।
কঙ্গনার প্রশ্ন, একই পরিস্থিতি দিয়ে কি সুশান্তকেও যেতে হয়েছিল? তাঁর মাথায় কি ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছিল আত্মহত্যার চিন্তা? তিনি জানেন না, তবে নিশ্চয়ই সুশান্তও এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছিলেন। এক সাক্ষাৎকারে সুশান্ত বলেন, প্রতিভা আর স্বজনপোষণ এক সঙ্গে থাকতে পারে না কারণ স্বজনপোষণ কখনও প্রকৃত প্রতিভাকে মাথা তুলতে দেয় না। এই উপলব্ধি তাঁর চেনা কারণ এমন অবস্থা দিয়ে তিনি নিজে গিয়েছেন। তাঁর প্রশ্ন, সুশান্তের ঘটনায় অনুঘটকের ভূমিকা নিল কে?
কীভাবে বলিউডে কোণঠাসা করা হয় তার আরও ব্যাখ্যা দিয়েছেন কঙ্গনা। বলেছেন, তিনি জানেন, সুশান্তের সঙ্গে আদিত্য চোপড়ার বিরাট অশান্তি হয়েছিল। কঙ্গনা নিজে যখন সুলতান ছবিটি প্রত্যাখ্যান করেন, আদিত্য তাঁকে হুমকি দেন, আর কখনও তাঁর সঙ্গে কাজ করবেন না। তখন থেকে তাঁর বিরুদ্ধে এককাট্টা হয় গোটা ইন্ডাস্ট্রি। বহুবার নিজেকে সম্পূর্ণ একা বোধ হয়েছে তাঁর, ভেবেছেন, তাঁর কী হবে.. । তাঁর প্রশ্ন, ‘এই সব ক্ষমতাশালীরা কী করে ঘোষণা করতে পারেন, কার সঙ্গে তাঁরা আর কাজ করবেন না? তুমি কার সঙ্গে কাজ করতে চাও বা না চাও, সেটা তোমার খুশি কিন্তু গোটা বিশ্বের সামনে তা ঘোষণা করে, অপছন্দের লোকের বিরুদ্ধে ঘোঁট পাকানোর দরকার কী। এদের প্রশ্ন করা উচিত, এদের হাতে রক্ত রয়েছে’। এঁদের মুখোশ খুলতে তিনি যত দূর সম্ভব যাবেন, কঙ্গনা জানিয়েছেন।
তাঁর ব্যক্তিগত জীবনেও এই প্রভাবশালীদের ছায়া পড়েছে বলে কঙ্গনা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, একজন তাঁকে বিয়ে করতে চাইত। কিন্তু এই সব লোকেরা তাকে সরে যেতে বাধ্য করে তাঁর জীবন থেকে। এখন তাঁর কেরিয়ারের কোনও নিশ্চয়তা নেই, তাঁর প্রেম পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গিয়েছে, তাঁর বিরুদ্ধে আদালতে ৬টা মামলা চলছে। এখনও সকলে চেষ্টা করছে, যাতে তাঁকে জেলে পোরা যায়।
সুশান্তের সঙ্গে নিজের চরিত্রের পার্থক্য ব্যাখ্যা করে কঙ্গনা বলেছেন, সুশান্ত সব কিছু নিজের মধ্যে রেখে দিতেন, সহ্য করতেন। কিন্তু তিনি পুরোপুরি আলাদা, তাঁর সঙ্গে যা যা হয়েছে কখনও গোপন করেননি। এম এস ধোনি সুপারহিট হওয়া সত্ত্বেও সলমন খান প্রশ্ন করেছিলেন, সুশান্ত কে? অথচ তখন, গোটা দেশ জানে, কে সুশান্ত। তাঁর ছবি গালি বয়-এর থেকে অনেক বেশি ব্যবসা করেছে অথচ চার আনার শো-তে তাঁকে দেখানো হয়েছে অপদার্থ হিসেবে। সংবাদ মাধ্যমও সুশান্তের ইমেজ খারাপ করে দেয়, তাঁর সম্পর্কে নিয়মিত আজেবাজে কথা প্রচার করে। অথচ সকলেই জানে, তিনি ছিলেন অত্যন্ত নরম ও আবেগপ্রবণ মানুষ। একটা সময়ের পর আর হয়তো এই চাপ তিনি নিতে পারেননি। তিনি সেটা বুঝতে পারেন, তাঁকেও ডাইনী হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে। কঙ্গনা বলেছেন।
জাভেদ আখতার হুমকি দেন, রোশনদের কাছে ক্ষমা চাও, নয়তো আত্মহত্যা করতে বাধ্য হবে, অভিযোগ কঙ্গনার
ওয়েব ডেস্ক, এবিপি আনন্দ
Updated at:
19 Jun 2020 02:46 PM (IST)
কঙ্গনা নিজে যখন সুলতান ছবিটি প্রত্যাখ্যান করেন, আদিত্য তাঁকে হুমকি দেন, আর কখনও তাঁর সঙ্গে কাজ করবেন না। তখন থেকে তাঁর বিরুদ্ধে এককাট্টা হয় গোটা ইন্ডাস্ট্রি।
NEXT
PREV
খবর (news) লেটেস্ট খবর এবং আপডেট জানার জন্য দেখুন এবিপি লাইভ। ব্রেকিং নিউজ এবং ডেইলি শিরোনাম দেখতে চোখ রাখুন এবিপি আনন্দ লাইভ টিভিতে ।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -