কেরল সাহিত্য উৎসবে দেশপ্রেম বনাম যুদ্ধ জিগির বিষয়ে বক্তৃতা দিচ্ছিলেন গুহ। তাঁর মতে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কঠোর পরিশ্রমী, নিজে গড়েছেন নিজেকে। ভারতীয় রাজনীতিতে তাঁর সামনে রাহুল গাঁধীর টেকার সম্ভাবনাই নেই। যে কংগ্রেস স্বাধীনতার সময় অসাধারণ দল ছিল, তারা এখন স্রেফ ফ্যামিলি ফার্ম। এ কারণেও ভারতে হিন্দুত্ব ও যুদ্ধ যুদ্ধ জিগিরের উত্থান হয়েছে। তিনি আরও বলেছেন, ব্যক্তিগতভাবে তিনি রাহুলের বিরুদ্ধে নন, রাহুল অত্যন্ত ভদ্র, শিষ্ট আচার আচরণ। কিন্তু নতুন ভারত কোনও পঞ্চম প্রজন্মের রাজপুত্রকে চায় না। যদি মালয়ালিরা ২০২৪-এও রাহুলকে নির্বাচনের ভুল করেন, তবে তাঁরা নরেন্দ্র মোদীর সুবিধে করে দেবেন, আর কিছু নয়। রাহুল সরে গেলে মোদীকে তাঁর নীতি সম্পর্কে বলতেই হবে, ব্যাখ্যা দিতে হবে, কেন সেগুলো ব্যর্থ হল।
গুহ আরও বলেছেন, নরেন্দ্র মোদীর বিরাট সুবিধে হল, তিনি রাহুল গাঁধী নন। একটা রাজ্য ১৫ বছর চালিয়েছেন, প্রশাসন সংক্রান্ত অভিজ্ঞতা আছে। অস্বাভাবিক পরিশ্রমী তিনি, কোনওদিন ইউরোপে ছুটি কাটাতে যান না। কিন্তু রাহুল যদি আরও বেশি বুদ্ধিমান, পরিশ্রমী হতেন, ইউরোপে ছুটি কাটাতে না যেতেন, তা হলেও রাজবংশের পঞ্চম প্রজন্ম হিসেবে নিজেকে নিজে গড়ে তোলা কোনও ব্যক্তির সামনে তাঁর কোনও সুযোগ নেই। কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীকেও আক্রমণ করেন তিনি, বলেন, সনিয়াকে দেখে তাঁর মনে পড়ে মুঘল শাসনের শেষদিককার কথা, সাম্রাজ্যের প্রকৃত অবস্থা সম্পর্কে কোনও ধারণাই ছিল না মুঘল শাসকদের।
তাঁর কথায়, ভারত আরও বেশি করে গণতন্ত্রের পথে হাঁটছে, শেষ হচ্ছে সামন্ত্রতন্ত্র। এটা গাঁধীরা বোঝেন না। সনিয়াকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনি দিল্লিতে রয়েছেন, আপনার সাম্রাজ্য ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতর হচ্ছে, অথচ বশংবদরা আপনাকে বোঝাচ্ছেন, যে এখনও আপনিই বাদশাহ। বামেদের সম্পর্কে তিনি বলেন, তাদের ভণ্ডামি হল, ভারতের থেকে অন্যান্য দেশকে তারা বেশি ভালবেসেছে। বিশ্বজুড়ে আগ্রাসী জাতীয়তাবাদের উত্থান ও প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলিতে ইসলামীয় মৌলবাদের মাথাচাড়া দেওয়া ভারতে হিন্দুত্ববাদের উত্থানের বড় কারণ বলে গুহ মন্তব্য করেছেন।