নয়াদিল্লি: নোভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে চালু লকডাউনে পুরো বেতন পাননি বলে বেসরকারি কোম্পানির মালিকদের ওপর ক্ষুব্ধ বহু শ্রমিক, কর্মচারী। বিষয়টি গড়িয়েছে সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত। তখনই এমন এক কর্মচারী-বান্ধব মালিকের সন্ধান মিলল যিনি নিজের কোম্পানির ১২০ জন কর্মীকে ঘরে ফিরিয়েছেন।
ভদ্রলোকের নাম আর হরি কুমার। তিনি সংযুক্ত আরব আমিরশাহির শারজা শহরের এলিট শিল্পগোষ্ঠীর চেয়ারম্যান। সম্প্রতি তিনি এয়ার আরাবিয়া বিমানের একটি চার্টার্ড ফ্লাইট বুক করে নিজের সংস্থার ১২০ জনকে কোচিতে পাঠিয়েছেন। লকডাউনের ফলে তাঁরা সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে আটকে পড়েছিলেন। গতকাল রাতে সেই ফ্লাইট কোচি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। তাতে ছিলেন আরও ৫০ যাত্রী যাঁরা ইউএই-তে চাকরি খুইয়ে চরম বিপদে পড়েছেন।
এখানেই শেষ নয়, তিনি প্রস্তাব দিয়েছেন, যে কর্মীরা করোনাভাইরাস সঙ্কট কেটে গেলেও কোনওদিন আরব দুনিয়ায় ফিরে যেতে চাইবেন না, তাঁরা কোম্পানির কোয়েম্বাত্তুর ইউনিটে কাজ করতে পারেন। বিমান ছাড়ার আগে তাঁদের এক মাসের বাড়তি বেতন, গিফটও দিয়েছেন তিনি।
কেন এতটা কর্মচারীদের প্রতি তাঁর দায়িত্ববোধ? হরি কুমার জানিয়েছেন, এটা ওঁদের প্রতি তাঁর কৃতজ্ঞতার প্রকাশ। বলেছেন, আমি নিজের কাজটুকু করেছি মাত্র। সুখে-দুঃখে যে কর্মীরা আমার পাশে থাকেন, তাঁদের রক্ষা করা আমার কর্তব্য। আমার সফল যাত্রায় সাহায্য করেছেন যাঁরা, স্রেফ তাঁদের ধন্যবাদ জানাতেই চার্টার্ড ফ্লাইটের বন্দোবস্ত করেছি।
আদতে কেরলের আলাপুঝ্ঝার বাসিন্দা হরি কুমার ২০ বছর আগে সৌদি আরব চলে গিয়েছিলেন। সেখানে সফল শিল্পপতি হয়ে ওঠেন তিনি। শিল্পদুনিয়ার নানা সামগ্রী, অ্যালুমিনিয়ামজাত দ্রব্য তৈরি করে তাঁর কোম্পানি।
তিনি বলেছেন, একটা ভাল ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান মানে একটা পরিবার। সবাই সংস্থার উন্নতির শরিক। কর্মচারীরা সমস্যায় পড়লে কোম্পানির দায়িত্ব তাঁদের পাশে থাকা। আমি আরও আটকে পড়া লোকজনকে দেশে পাঠাব।
প্রসঙ্গত, বলিউড অভিনেতা সোনু সুদও সম্প্রতি দেশের নানা শহরে লকডাউনে আটকে পড়া পরিযায়ী শ্রমিকদের বাসে, প্লেনে নিজেদের রাজ্যে ফেরানোর ব্যবস্থা করেছেন। তিনি, হরি কুমারের মতো মানুষেরা উজ্জ্বল উদাহরণ তৈরি করেছেন সবার সামনে।