কলকাতা: রীতি মতো সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দিয়ে শহরে সক্রিয় কিডনি পাচার চক্র। পুলিশের কাছে এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ দায়ের করলেন বাঁশদ্রোণীর এক বাসিন্দা। টাকার বিনিময়ে কিডনি দিয়ে প্রতারিত হওয়ার পরই এই অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। অরূপ দে নামে ওই ব্যক্তির দাবি, ২০০১ সালে বিজ্ঞাপন দেখে তিনি একটি কিডনি দেন। টাকা দেওয়ার কথা থাকলেও প্রতারণা করে চক্রটি। তাঁর তিনি আরও দাবি করেন যে, ২০ বছর পর শহরে ফের সক্রিয় হয়েছে চক্রটি।
ঠিক কী অভিযোগ?
প্রতারিত ব্যক্তির দাবি, কিডনি পাচার চক্রের বিজ্ঞাপন দেখে যোগাযোগ করলে রণবীর রজক নামে এক ব্যক্তি তাঁকে রুবি মোড়ে দেখা করতে বলেন। এরপর তিনি কিডনি দিলেও তাঁকে টাকা দেওয়া হয়নি। পুলিশের কাছে অভিযোগ জানানোর পর যদিও ভবানীপুরের গোবিন্দ বোস লেনের বাসিন্দা অভিযুক্ত রণবীরের দাবি, ২০১৩ সালে তিনিও ওই চক্রের কাছে কিডনি বিক্রি করেছিলেন। লকডাউনে কাজ চলে যাওয়ায় ওই চক্রে যোগ দেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে এই চক্রের নেপথ্যে আরও অনেকেই থাকতে পারে। কিডনি দানের আড়ালে এই কারবার চলত বলেই মনে করা হচ্ছে। বাঁশদ্রোণীর জয়েন্ট সিপি ক্রাইমের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন অরূপ দে। তাঁর অভিযোগ, ২০০১ সালে বিজ্ঞাপন দেখে প্রথমে নীতীশ চৌহানের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তাঁর সঙ্গে রুবি মোড়ের কাছে দেখাও করেন। প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয় কিডনি দিলে তাঁকে ৩ লক্ষ টাকা দেওয়া হবে।
অরূপ দে-এর দাবি, প্রচুর ধারদেনা হয়ে যাওয়ায় কিডনি বিক্রি করতে বাধ্য হন তিনি। যদিও তিনি জানতেন না কিডনি পাচারের সঙ্গে তিনি এভাবে যুক্ত হয়ে যাবেন। এরপর তাঁর কিডনি নেয়া হয় এবং গাড়িতে করে সুভাষগ্রামের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয় ওই চক্রটি। কিন্তু এরপর আর তাঁকে টাকা দেওয়া হয় না।
তারপর ২০ বছর পার হয়েছে। সম্প্রতি দৈনিক সংবাদপত্রে তিনি কিডনি দানের একটি বিজ্ঞাপন দেখেন। সেই একই ফোন নম্বর দেওয়ায় চিনতে পারেন সেই চক্রটি। কিডনি দিতে চান বলে এরপর ফোন করেন। সেখানেই রণবীর রজক নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে দেখা করতে যান। রুবির মোড়ে একই জায়গায় ডাকা হয় তাঁকে। অবশ্য এবার এই কাজটি করার আগে তিনি আনন্দপুর থানায় জানান বিষয়টি।
এরপর পরিকল্পনা মাফিক রণবীর রজককে সেখান থেকে পাকরাও করে পুলিশকে ফোন করেন অরূপ। যদিও তাঁর দাবি পুলিশ আসেনি। এরপর জয়েন্ট সিপি ক্রাইমের কাছে অভিযোগ করেন অরূপ। প্রাথমিক জেরায় রণবীর জানান লকডাইনে কাজ হারিয়ে নীতিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন তিনি। এই চক্রে মিডলম্যানের কাজ করেন।