সঞ্চয়ন মিত্র, কলকাতা: গত ১৫ বছর ধরে কলকাতার বিভিন্ন প্রাসাদোপম বাড়ির ছবি তুলে চলেছেন চিত্রগ্রাহক অনির্বাণ মিত্র। এবার তাঁর সেই সমস্ত ছবি নিয়ে প্রকাশিত হয়েছে একটি বই। সেই বইয়ে ছবির নেপথ্য কাহিনি নিয়ে লিখেছেন পূর্বাঞ্চলীয় সংস্কৃতি কেন্দ্রের অধিকর্তা গৌরী বসু। বইয়ে ছবি ও লেখায় ধরা রয়েছে কলকাতার পুরনো বাড়ি ও বিভিন্ন প্রাসাদের ইতিহাস।
ব্রিটিশ আমল থেকেই কলকাতার বিভিন্ন অঞ্চলে প্রাসাদোপম বাড়ির ছড়াছড়ি। সেই যুগের ব্রিটিশ স্থাপত্যের নির্দশন ছড়িয়ে রয়েছে শহরের আনাচে কানাচে। এই সকল বাড়ির অন্দর ও বহিরঙ্গের নির্মাণ আজও রোমাঞ্চিত করে স্থাপত্যপ্রেমীদের। চিত্রগ্রাহক অনির্বাণ মিত্রকে ছোটবেলা থেকেই যেন হাতছানি দিয়ে ডাকত এই সব বাড়ির উঁচু উঁচু থাম, বিশাল জানালা, দরজা ও খিলান। তাই গত ১৫ বছর ধরে শহর ঘুরে একের পর এক এই সমস্ত বিশাল বাড়ির ছবি তুলে চলেছেন তিনি। ইতিমধ্যে কলকাতা ও লন্ডনে তাঁর দুটি চিত্রপ্রদর্শনীও হয়ে গেছে।
চিত্রগ্রাহক অনির্বাণ মিত্র বলেন,'পুরনো বাড়ির ভিতরে ঢুকলেই যেন একটা রহস্যাবৃত আবহাওয়া পেতাম। ঠাকুর দালান, পাখি ডাকছে, কোথাও গরু রয়েছে। যখন চিত্রগ্রাহক হিসেবে কাজ করতে শুরু করি তখন মনে হয়েছিল প্রথম উত্তর কলকাতার বাড়িগুলি ঘুরে দেখার কথা ভাবি। আমি গোটা কাজটাই করি নিজের ভাল লাগা, ভালবাসা থেকে। এই বাড়িগুলির অন্দরমহল কীরকম, যেখানে সবসময় ঢোকা যায়না। সেগুলি আবিষ্কার করে একজন শিল্পীর নিদর্শন হিসেবে ছবি তুলেছি।'
আরও পড়ুন: East Midnapur: রীতি মেনে চলছে ঐতিহ্যের রাস উৎসব, ময়না থেকে পটাশপুরে মাতোয়ারা বাসিন্দারা
অনির্বাণ মিত্রর এই সব ছবি নিয়ে সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে 'ক্যালকাটা স্টেটলি হোমস অ্যান্ড প্যালেসেস' নামের একটি বই।
ছবির নেপথ্য কাহিনি সেই বইয়ে লিখেছেন পূর্বাঞ্চলীয় সংস্কৃতি কেন্দ্রের অধিকর্তা গৌরী বসু।
পূর্বঞ্চলীয় সংস্কৃতি কেন্দ্রের অধিকর্তা গৌরী বসুর কথায়,'অনেক সময়েই এই বাড়িগুলির বাইরের ছবি হয়তো আমরা দেখতে পাই কিন্তু ভিতরের ছবি দেখি না। অনির্বাণ মিত্র বহু বছর ধরে এই বাড়িগুলিতে ঘুরেছেন, তাঁদের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং তাঁদের অনুমতি নিয়েই বাড়ির ভিতরের ছবি তুলেছেন। ছবিগুলি ভীষণ সুন্দর এবং কলকাতার একটি নির্দিষ্ট সময়ের পরিষ্কার চিত্র দেখা যায় এই ছবিগুলির মধ্য দিয়ে।'
কলকাতার ৪০টি বাড়িতে বিভিন্ন সময়ে গিয়ে ছবি তুলেছেন অনির্বাণ। ৪০০টি ছবি স্থান পেয়েছে দুই মলাটের মধ্যে।