বিটন চক্রবর্তী ও ঋত্বিক প্রধান, পূর্ব মেদিনীপুর: একদিকে ময়না। অন্য দিকে, পটাশপুর। রাস উপলক্ষ্যে জমজমাট পূর্ব মেদিনীপুরের দুই জায়গা। প্রাচীন রাস উৎসব ঘিরে উন্মাদনা রয়েছে বাসিন্দাদের মধ্যে। করোনা আবহে বিধি নিষেধ থাকলেও, ভাঁটা পড়েনি আনন্দে।
কার্তিক পূর্ণিমায় ঐতিহ্যের রাস। সেই উৎসবেই মাতোয়ারা পূর্ব মেদিনীপুর। ময়না থেকে পটাশপুর, রীতি মেনেই চলছে উৎসব। ময়নায় রয়েছে পরিখা ঘেরা ময়নাগড়। তার একদিকে শ্যামসুন্দরজিউয়ের মন্দির, আর অন্যদিকে, মাজার। লাউসেনের ধর্মমঙ্গলে উল্লেখ রয়েছে এই অঞ্চলের। জলে ঘেরা পরিখা। এই অঞ্চলের বৈশিষ্ট্য একদিকে শ্যামসুন্দরজিউয়ের মন্দির, আর অন্যদিকে রয়েছে মাজার। এখানে রাসের টানে ভিড় জমান বহু মানুষ। এছাড়া এখানকার অন্যতম আকর্ষণ হচ্ছে নৌকা বিহার।
জানা যায়, ১৫৬১ সালে পূর্ব মেদিনীপুরের ময়নার রাজা গোবর্ধনানন্দ বাহুবলিন্দ্র প্রচলন করেছিলেন এই রাস উৎসবের। স্থানীয় সূত্রে খবর, ৪৬০ বছর ধরে সম্প্রীতির ঐতিহ্য বহন করে চলেছে এখানকার রাস উৎসব।
আরও পড়ুন: কলকাতা মেডিক্যালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান হলেন নির্মল মাজি; কোথায় কে, রইল তালিকা
ময়নাগড়ের রাজপরিবারের সদস্য সিদ্ধার্থ বাহুবলিন্দ্র জানান, ১৮৭০ সাল থেকে এই উৎসব সর্বজনীন করা হয়। করোনা আবহে যদিও এখন মেলা বন্ধ। উৎসবের প্রত্যেকদিন পুজো হয়। এখানকার রাসের অন্যতম বৈশিষ্ট্যই হল রাসপূর্ণিমার দিন শ্যামসুন্দরজিউয়ের নৌকাবিহার।
প্রতিদিন সকালে ঠাকুরকে নৌকায় করে নিয়ে আসা হয় রাসমঞ্চে। সারাদিন পূজা অর্চনার পর ফের নৌকায় করে ঠাকুর চলে যান রাজবাড়ির মন্দিরে। মঙ্গলবার পর্যন্ত ময়নাগড়ে রাস উপলক্ষে চলবে উৎসব।
এই জেলারই অপর স্থান, পটাশপুর। সেখানে হয় পঁচেটগড় রাজ পরিবারের রাস।
পঁচেটগড় দেবোত্তর সেবায়েত বোর্ডের সম্পাদক সুব্রত নন্দন দাস মহাপাত্র জানান, এখানকার রাস উৎসব প্রায় ৫০০ বছরের পুরনো। পঁচেটগড়ের রাস উৎসব করোনা আবহে দু’বছর বন্ধ ছিল। এরপর ফের এই বছর থেকে মিলেছে মেলার অনুমতি। তাই বাড়তি আনন্দ ছড়িয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। এখানে রাসের মেলা চলবে ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত।