ঋত্বিক মণ্ডল, কলকাতা: প্রতি বছর ঘটা করে যেখানে মাতৃআরাধনা হয়, সেখানে চলছে ৯ শয্যার সেফ হোম। অক্সিজেন পরিষেবা থেকে চিকিৎসকের পরামর্শ, ২৪ ঘণ্টা সব ধরনের সুযোগ সুবিধা নিখরচায় মিলছে। এমনকি হাই-ফ্লো অক্সিজেনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে সেফহোমে। করোনা যুদ্ধে নিজেদের দুর্গামণ্ডপে সেফহোমের ব্যবস্থা করেছে দক্ষিণ কলকাতার আটলান্টা ক্লাব। নয় শয্যার সেফহোমে অক্সিজেন পরিষেবা থেকে চিকিৎসকের পরামর্শ, ২৪ ঘণ্টা মিলছে নিখরচায়। পাশাপাশি কমিউনিটি কিচেনেরও আয়োজন করেছে ওই ক্লাব।
সারা দেশের সঙ্গে এরাজ্যেও চলছে সর্বনাশা করোনার তাণ্ডব। বাংলায় কুড়ি হাজারের আশপাশে ঘোরাফেরা করছে দৈনিক সংক্রমণ। দেড়শোর ওপরে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা। সরকারি, বেসরকারি, সব হাসপাতালে করোনা ওয়ার্ড ভর্তি। এই পরিস্থিতিতে প্রশাসনের পাশাপাশি করোনা যুদ্ধে নেমেছে নাগরিক সমাজ। মারণ ভাইরাসে আক্রান্তরা যাতে চিকিৎসা পান, তার জন্য দুর্গামণ্ডপেই সেফহোম খুলে ফেলেছে দক্ষিণ কলকাতার আটলান্টা ক্লাব। বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারের পাশাপাশি স্বাস্থ্য দফতরের মাধ্যমে যে সেফ হোমের বেড পাওয়া যাবে বলেই জানিয়েছেন উদ্যোক্তরা।
তিরিশ বছর ধরে সঙ্কটে অক্সিজেন সরবরাহ করে আসছে ক্লাবটি। ২০টি অক্সিজেন সিলিন্ডার এবং একটি অক্সিজেন কনসেনট্রেটর রয়েছে তাঁদের হাতে। তাই নিয়ে কলকাতার উত্তর থেকে দক্ষিণ, যেখানে প্রয়োজন, সেখানে পৌঁছে যাচ্ছেন তাঁরা। পাশাপাশি চলছে কমিউনিটি কিচেন। ছিয়াশি বছর ধরে দুর্গাপুজো হয়ে আসছে গল্ফ ক্লাব রোড লাগোয়া আটলান্টা ক্লাবে। করোনাকালে একমাস ধরে ক্লাবের দেবাঙ্গন বদলে গিয়েছে আরোগ্য নিকেতনে।
করোনা অতিমারিতে যখন গোটা রাজ্যের আকাশে কালো মেঘ তখনই অবশ্য মানবিকতার খাতিরে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন অনেকেই। চিকিৎসক, নার্সদের মতো প্রথম সারির করোনা যোদ্ধাদেরকে যতটা সম্ভব সাহায্য করার চেষ্টায় বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন থেকে ক্লাব। কিছুদিন আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও রাজ্যের বিভিন্ন ক্লাবগুলিকে বার্তা দিয়েছিলেন কোভিড যুদ্ধে যথাসম্ভব এগিয়ে আসতে।
একাধিক সাংসদ, অভিনেতারাও নিজেদের সাধ্যমতো এগিয়ে এসেছেন কঠিন পরিস্থিতিতে অসম এই যুদ্ধে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করতে।