কলকাতা : বহু দিন পর, পুরনো ছন্দে ফিরল স্কুল। কোথাও ফুল, কোথাও পেন, কোথাও চকোলেট দিয়ে অভ্যর্থনা জানান হল পড়ুয়াদের। দীর্ঘদিন পর স্কুলে আসতে পেরে খুশি পড়ুয়ারাও। করোনা সংক্রমণ যাতে না ছড়ায়, সে জন্য প্রায় সব স্কুলই বেশ কিছু সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে। এ নিয়ে কথা বলতে স্টুডিওতে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। কথা বললেন এবিপি আনন্দ-র সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট সুমন দে । 




    • সুমন দে : নবম, দশম, একাদশ, দ্বাদশ তো স্কুলে ফিরল। ক্লাস এইট অবধি পড়ুয়ারাও কবে স্কুলে যেতে পারবে?
      ব্রাত্য বসু:  মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ অনুসারে করেছি। সেই অনুসারে ব্যবস্থাও নিয়েছি। স্বাস্থ্য দফতরের মাথার উপর বসে আছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি সেই অনুসারে ভাবনা-চিন্তাও করেছেন। দিনক্ষণ বলা তো সম্ভব নয়। আমরা প্রথম ধাপে সব ব্যবস্থা নিয়ে একটা বড় ঝুঁকি নিয়েছি। অনেক রাজ্যও স্কুল খুলে দিয়েছে। 


    • সুমন দে : সিনেমা হল, মল থেকে মিটিং-মিছিল, সবই হচ্ছে, তাহলে স্কুল নয় কেন? 
      ব্রাত্য বসু:  এই বছরের মধ্যে সম্ভাবনা আছে। সঠিক ভাবে দিন বলা যাচ্ছে না। তবে বাচ্চারা তো শহর থেকে গ্রামগঞ্জ সব জায়গায় ছড়িয়ে আছে। এ বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। জানতে হবে দিদি কী চাইছেন। 


    • সুমন দে : মফস্বলের বাচ্চারা তো অনলাইন ক্লাস তেমনভাবে পায়নি, এই যে একটা অফলাইন ক্লাসের ব্যবধান তৈরি হল. তাতে তো পড়াশোনার ক্ষতি হল ...
      ব্রাত্য বসু:  হ্যাঁ। তবে অফলাইন ক্লাস শুরু মানে তো অনলাইন ক্লাস বন্ধ হয়ে যাওয়া নয় !সমান্তরালে চলবেই। আর এই ২ বছরে বাচ্চারা স্কুল না গেলেও পড়াশোনা থেকে তো সম্পর্ক ছিন্ন করেনি। গ্রাম বা শহরের কয়েকটি পরিবারের শিশুদের ক্ষেত্রে যদি তেমন ঘটেও থাকে, সবার ক্ষেত্রে তা ঘটেনি। পড়াশোনার সঙ্গে যোগাযোগ তো ছিলই । 






  • সুমন দে :  কিছু বেসরকারি পরিসংখ্যান বলছে গোটা দেশে গ্রামীণ এলাকায় বহু পড়ুয়া স্কুলছুট হয়েছে যা প্রায় ৩৭ শতাংশ। বহু পড়ুয়ার পড়াশোনা চিরতরে বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ব্যাহত হয়েছে ভাষা শিক্ষা ও অঙ্ক করার দক্ষতা
    ব্রাত্য বসু:  এটা একটা সার্বিক স্থবিরতা। যতক্ষ না তারা সুস্থ অক্সিজেন পাচ্ছে ততক্ষণ তারা ছন্দে ফিরবে না। কিছু সময়কাল পরে আবার এই সমীক্ষা করলে নিশ্চিত ভাবেই পরিসংখ্যান পরিবর্তিত হবে। 


  • সুমন দে :  করোনাকালে অর্থনৈতিক ভাবেও তে বহু পরিবার মারাত্মক ধাক্কা খেয়েছে। নিঃসন্দেহে শিশু শ্রমিকের সংখ্যাও বেড়েছে
    ব্রাত্য বসু:আমাদের রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী চাল-ডাল-আটা পৌঁছে দিয়েছেন প্রতি পরিবারে। মিড ডে মিলেও ছেদ পড়েনি। 



  • সুমন দে :  ২৪ সেপ্টেম্বর ‘দ্য গার্ডিয়ান’ পত্রিকায় একটি রিপোর্ট প্রকাশিত হয়, যাতে বলা হয়েছে, ইংল্যান্ডে স্কুল খোলার পর থেকেই বাচ্চাদের মধ্যে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে। আমরা নিশ্চয়ই চাই না, এমনকিছু এখানে ঘটুক । আমাদের রাজ্যে যদি এরকম কোনও সমস্যা দেখা যায়, তাহলে তা মোকাবিলা করার জন্য আমাদের কোনও বিকল্প পরিকল্পনা রয়েছে কি?
    ব্রাত্য বসু: ডাটা কালেকশন হবে। প্রতি স্কুলে আইসোলেশন রুম রেখেছি। জ্বর এলে সেই বাচ্চাকে ওই রুমে রাখা হবে। আমরা শিক্ষক শিক্ষিকাদেরও সেভাবে প্রশিক্ষণ দিয়েছি। আর এখন যেহেতু চারটি ক্লাস খুলেছে, তাই ক্লাসরুমে সোশ্যাল ডিসট্যান্সিংয়েও অসুবিধে হবে না ।


  • সুমন দে : আজ রাজ্যের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি খুলল। দেখা গেল, স্কুলে উপস্থিতি  ৭২%, কলেজে   ৭৮%, বিশ্ববিদ্যালয়ে ৮৫%।  এতে হাসি ফোটার সঙ্গে সঙ্গে একটা উদ্বেগও আছে নিঃসন্দেহে। তারমধ্যে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম কলেজ খোলার দিনই দুই ছাত্র সংগঠনের মধ্যে ধুন্ধুমার অবস্থা ! কারও মুখে ঠিকমতো মাস্কও নেই !!
    ব্রাত্য বসু: প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলেছি। এই পরিস্থিতি না হওয়াই বাঞ্ছনীয়। প্রত্যেক পড়ুয়ারই দায়িত্ব আছে। আবীর খেলার মতো ঘটনা ঘটা এখন অন্তত না হলেই ভাল। কথা বলব ছাত্র পরিষদের সঙ্গে। 


  • সুমন দে : আপনি আজ বিধানসভায় এসএসসি মারফত শিক্ষক নিয়োগের বিষয়ে বড় ঘোষণা করেছেন ...
    ব্রাত্য বসু: বহু বহু চাকরি প্রার্থী এইদিকে তাকিয়ে। আমরাও চাইছি, মুখ্যমন্ত্রী চাইছেন, সব আইনি জট কেটে গেলে যেন স্বচ্ছ ভাবে, যোগ্যতাকে মান্যতা দিয়ে নিয়োগ করে পর্ষদ। 

    আরও পড়ুন:

    বিএসএফ ৫০ কিমি ভেতরে চলে এলে চোরাচালান আটকাবে কী করে, 'ঘণ্টাখানেক সঙ্গে সুমন' অনুষ্ঠানে প্রশ্ন অপর্ণা সেনের