প্রকাশ সিনহা, কৃষ্ণেন্দু অধিকারী ও অর্ণব মুখোপাধ্যায়, কলকাতা: আইকোর চিটফান্ড মামলায় সোমবার মদন মিত্রকে জিজ্ঞাসাবাদ করল CBI। আর কয়লাকাণ্ডে আইনমন্ত্রী মলয় ঘটককে ED তলব করলেও, এদিন হাজির হলেন না তিনি। চিটফান্ড সংস্থা আইকোরের তদন্তে, সোমবার, কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্রকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই। 


CBI সূত্রে খবর, এদিন সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে প্রায় ২ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। করা হয় বয়ান রেকর্ড। মদন মিত্র জানিয়েছেন, যেখানে ডাকবে যাব। সহযোগিতা করব। তদন্তে সব সাহায্য করব।


CBI সূত্রে আরও জানানো হয়েছে, সম্প্রতি একটি ভিডিও তাদের হাতে এসেছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে, নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে, আইকোরের একটি অনুষ্ঠানে, বক্তব্য রাখছেন মদন মিত্র।


সূত্রের খবর, তারই প্রেক্ষিতে, কামারহাটির তৃণমূল বিধায়কের কাছে, CBI জানতে চায়, কেন তিনি ওই অনুষ্ঠানে গেছিলেন? কে তাঁকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল? তিনি কি আইকোরের কর্ণধার অনুকূল মাইতিকে চিনতেন? অনুকূল মাইতির সঙ্গে কি তাঁর কোনও বৈঠক হয়েছিল? 


একই মামলার তদন্তে, মঙ্গলবার, মদন মিত্রের ছেলে, স্বরূপ মিত্রকে তলব করেছে CBI। কিন্তু কেন তলব করা হল মদন-পুত্রকে? কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে দাবি, একসময় স্বরূপ মিত্র আইকোরের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি কী হিসেবে যুক্ত ছিলেন? সংস্থার কোনও পদে ছিলেন কিনা, এ নিয়ে তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হবে। এই নিয়ে আইকোর মামলায়, গত তিন সপ্তাহে রাজ্যের ২ মন্ত্রী ও এক বিধায়ককে তলব করল সিবিআই। 


গত সোমবার, নিউ মার্কেটে, খাদ্য ভবনে গিয়ে, জলসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী মানস ভুঁইয়াকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন সিবিআইয়ের আধিকারিকরা। প্রায় পৌনে ২ ঘণ্টা চলে জিজ্ঞাসাবাদ পর্ব। তার আগের সোমবার, এই মামলার তদন্তে, শিল্পসদনে, তৃণমূল মহাসচিব তথা শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে প্রায় ২ ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই। যদিও, সিবিআই তদন্তের গতিতে সন্তুষ্ট নয় রাজ্য বিজেপি। 


বিজেপি নেতা রাহুল সিনহার কথায়, সিবিআই একদমই তৎপর নয়। অনেক গাফিলতি আছে। সিবিআই তৎপর হলে অর্ধেক তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব এতদিনে জেলে থাকতো। কেন্দ্রীয় এজেন্সি বলে আমি কিছু বলব না এমন ভাবা ঠিক নয়। সুপ্রিম কোর্ট বলার পরেও সিবিআই তৎপরতা দেখায়নি।


ফিরহাদ হাকিম জানান, আমাদের জোর করে কেস দিয়ে ঢুকিয়ে দাও। আর ওরা ফাঁকা মাঠে খেলবে। আমাদের লাল কার্ড দেখিয়ে বের করে দিয়ে ওরা খেলবে। এটা হবে না। আগামী প্রজন্ম তৈরি আছে। আমাদের এতে কোনও অসুবিধা নেই।


অন্যদিকে, কয়লাকাণ্ডে আইনমন্ত্রী মলয় ঘটককে এদিনই ফের তলব করেছিল আরেক কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ED। সোমবারই তাঁকে দিল্লির সদর দফতরে হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, ED সূত্রে খবর, যেতে পারবেন না বলে জানিয়ে দেন, মলয় ঘটক। সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে চিঠিতে আইনমন্ত্রী জানিয়েছেন, তিনি প্রবীণ নাগরিক। বয়স ৬৫ বছরের বেশি। জনপ্রতিনিধি হওয়ায়, নির্বাচনকালে তিনি রাজ্য ছেড়ে যেতে পারবেন না। কয়লাকাণ্ডে এর আগে ২ বার মলয় ঘটককে তলব করে ইডি। কিন্তু দু’বারই ইডি দফতরে হাজির হননি তিনি।