কলকাতা: করোনা আবহে অগাস্টে মাধ্যমিক, জুলাইয়ে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা হবে। নবান্নে এদিন এই কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা। অগাস্টের দ্বিতীয় সপ্তাহে মাধ্যমিক পরীক্ষা।’
তিনি জানিয়ে দেন, দেড় ঘণ্টায় হবে মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা। বলেন, ‘উচ্চমাধ্যমিকে ১৫টি আবশ্যিক বিষয়ের পরীক্ষা হবে। বাকি বিষয়ের নম্বর স্কুলের পরীক্ষার ভিত্তিতে।’
মাধ্যমিক পরীক্ষা নিজের স্কুলে হবে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, ‘নিজের স্কুলেই মাধ্যমিক পরীক্ষা হবে। মাধ্যমিকে ৭টি মূল বিষয়ের পরীক্ষা নেওয়া হবে। বাকি বিষয়ে স্কুলের পরীক্ষার ভিত্তিতে পরীক্ষার্থীদের নম্বর দেওয়া হবে। ৩ ঘণ্টার আবশ্যিক বিষয়ের পরীক্ষা দেড় ঘণ্টায় হবে।’
গোটা দেশের সঙ্গে এরাজ্যেও করোনার দ্বিতীয় ঢেউ তাণ্ডব চালালেও মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক যে বাতিল হবে না, তা গত বৃহস্পতিবার একপ্রকার ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছিল রাজ্য। সংক্রমণ কমলে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।
গত ১৪ তারিখ দফতরের দায়িত্ব নেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। বৈঠক করেন মধ্যশিক্ষা পর্ষদ ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সঙ্গে। পরে জানান, জোড়া পরীক্ষা হবে করোনা কমলে। তিনি বলেছিলেন, করোনা নিয়ন্ত্রণে এলে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে, পরীক্ষার নির্ঘণ্ট ঠিক করবে পর্ষদ এবং সংসদ।
২০২১ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ১২ লক্ষ। উচ্চ মাধ্যমিকের পরীক্ষার্থী সাড়ে ৮ লক্ষ।
রাজ্যে মাধ্যমিক হয় ফেব্রুয়ারি মাসে। উচ্চমাধ্যমিক মার্চে। করোনার জন্য পিছিয়ে মাধ্যমিক হওয়ার কথা ছিল ১ থেকে ১০ জুন পর্যন্ত। উচ্চ মাধ্যমিক ১৫ জুন থেকে।
কিন্তু করোনার সেকেন্ড ওয়েভে মানুষ যখন ফের ঘরবন্দি, তখন ২০ লক্ষ পরীক্ষার্থী কী করে পরীক্ষাকেন্দ্রে গিয়ে পরীক্ষা দেবে? তা নিয়ে তৈরি হয় অনিশ্চয়তা।
পর্ষদ জানিয়ে দেয়, জুনে পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব নয়। সংসদ সভাপতি জানান, মাধ্যমিক পিছোলে উচ্চ মাধ্যমিকও পিছোবে। গত ১৫ তারিখ মুখ্যসচিব জানিয়ে দেন, জুনে প্রস্তাবিত মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক হচ্ছে না। গত বৃহস্পতিবার, অর্থাৎ, সরকার জানায়, করোনা কমলে হবে জোড়া পরীক্ষা।
সংসদ আগেই জানিয়ে দিয়েছে, নিজের স্কুলেই হবে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা। কিন্তু পর্ষদ সূত্রে খবর, পরিকাঠামোগত কারণে মাধ্যমিক নিজের স্কুলে নেওয়া সম্ভব নয়। তার ওপর বিভিন্ন স্কুলে তৈরি হচ্ছে সেফ হোম।
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের প্রশ্নের একটা বড় অংশ মাল্টিপল চয়েস, তাই বাড়িতে বসে পরীক্ষার ভাবনা প্রশ্নের মুখে। সূত্রের খবর, সম্ভব নয় প্রায় ২০ লক্ষ পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা অনলাইনে নেওয়া।