কলকাতা: নারদকাণ্ডে আজ ফের হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চে শুনানি। দুপুর ২টোয় পাঁচ বিচারপতির বৃহত্তর বেঞ্চে শুনানি শুরু হয়েছে। 


মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট থেকে মামলা প্রত্যাহার করে সিবিআই। কলকাতা হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চে ফেরে মামলা। ইয়াসের কারণে গতকাল হাইকোর্টে নারদ-মামলার শুনানি হয়নি। 


শুনানির শুরুতেই রাজ্যকে পার্টি করা হয়নি বলে আদালতে জানান অ্যাডভোক্যাট জেনারেল কিশোর দত্ত। পাল্টা আদালতে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা জানলেন ‘রাজ্যকে পার্টি করতে কোনও অসুবিধা নেই।’ এরপরই রাজ্যকে মামলায় পার্টি করার অনুমতি দিল হাইকোর্ট।


এরপর আদালতে সওয়াল করেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। তিনি বলেন, ‘জনগণকে দিয়ে বিচার ব্যবস্থার উপর চাপ তৈরির কৌশল। আদালত কড়া পদক্ষেপ না করলে একই জিনিস হবে। আগামী দিনে কোনও দুষ্কৃতী গ্রেফতার হলেও একই জিনিস হবে। বিচার ব্যবস্থার উপর আস্থা হারাবে জনগণ।’


তুষার মেহতা তাঁর সওয়ালে আরও বলেন, ‘যদি ধরেও নিই গ্রেফতার আইন মেনে হয়নি, যে হুমকির মধ্যে বিচারপ্রক্রিয়া চলেছে তা বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি করবে।’ 


এই প্রেক্ষিতে বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘বিচারকের প্রভাবিত হওয়ার প্রমাণ না থাকলে আমরা কী করতে পারি?’ বিচারপতি বলেন, ‘দেশে প্রচুর হাই প্রোফাইল গ্রেফতারির ঘটনা ঘটে। সেখানেও মানুষের আবেগ আছে, মানুষের কান্না থাকে। কিন্তু প্রমাণ করতে হবে যে বিচারক তার দ্বারা প্রভাবিত হয়েছেন। সেটা না হলে এই উদাহরণ আপনাদের বিপরীতে যেতে পারে।’


সিবিআইয়ের অভিযোগ নিয়ে বিচারপতি হরিশ টন্ডনের মন্তব্য, ‘আবেগের কারণে বিচারব্যবস্থা প্রভাবিত হয়ে পড়বে বলে মনে হয় না। অসন্তোষ থাকলে উচ্চতর আদালত আছে।’


এরপর হেভিওয়েটদের হয়ে সওয়াল করতে গিয়ে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘ইয়াস-এর মতো ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতে ফিরহাদ কাজ করতে পারেননি। তাঁর প্রশ্ন, মামলা চলতেই থাকবে আর রাজ্যের মন্ত্রীরা জেলে থাকবেন? তিনি বলেন, 'আমি ব্যথিত।'


বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘আজকে জামিন মঞ্জুর করলে, আজকেই গোটা মামলার নিষ্পত্তি হয়ে যাবে। কিন্তু এটা সাধারণ মামলা নয়।’ 


এরপর নারদ-মামলা অন্য রাজ্যে সরানোর আবেদন করে সিবিআই। বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় মন্তব্য, ‘আমাদের সামনে সম্পূর্ণ মামলা আছে, গ্রেফতারি আইনি না, বেআইনি এটাই দেখতে পারি। আমরা গোটা প্রক্রিয়াকে পূর্ববর্তী অবস্থায় নিয়ে যেতে পারি। কিন্তু তার জন্য প্রাথমিকভাবে কিছু তথ্য থাকা দরকার।’