কলকাতা : উৎসবের আবহে রাস্তাঘাটে দেখা যাচ্ছে থিক থিকে ভিড়। ঠাকুর দেখতে বেরিয়ে অনেকের মুখেই থাকছে না মাস্ক। দূরত্ব বিধি দূর অস্ত। শিশুদের নিয়েও বাড়ছে আশঙ্কা। এই অবস্থায় সাধারণ মানুষকে বারবার সতর্ক করছেন চিকিৎসকরা।


পুজো দেখার ধুম ! মণ্ডপের বাইরে, পাড়ার গলি , বড় রাস্তা..সর্বত্র উপচে পড়া ভিড়। শিশু হোক বা বৃদ্ধ - নজরে পড়ছে মাস্কহীন মুখের সারি। উধাও দূরত্ব বিধি। করোনার দাপটে গতবার পুজোর আনন্দ ফিকে হয়েছিল। কিন্তু, এবার যেন সব বাঁধন ছাড়া ! 


পুজোর পরে করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধির শঙ্কা। চিকিৎসক যোগীরাজ রায় বলেছেন, যেন হাফ ম্যারাথন চলছে, এত তাড়াতাড়ি ভুলে গেলে ভুল হবে, এই মিউটেন্ট স্ট্রেনও নতুন করে আবির্ভাব হতে পারে।


আশঙ্কা যে অমূলক নয়, তা রাজ্য সরকারের করোনা সংক্রান্ত বুলেটিনেই স্পষ্ট। প্রতিদিন যে সংখ্যক করোনা পরীক্ষা করা হয়, তারমধ্যে যত শতাংশের রিপোর্ট পজিটিভ আসে, তাকেই ‘পজিটিভিটি রেট’ বা সংক্রমণের হার বলা হয়। শনিবার, চতুর্থীর দিন রাজ্যে একদিনে করোনার এই পজিটিভিটি রেট ছিল ২.১৩%। পঞ্চমীতে তা বেড়ে হয় ২.১৫%। ষষ্ঠীর দিন পজিটিভিটি রেট আরও বেড়ে পৌঁছয় ২.৩২ শতাংশে। 


চিকিৎসক দীপ্তেন্দ্র সরকার বলেন, গত ৪ দিনে ১.২ শতাংশ থেকে বেড়েছে, এভাবে পজিটিভিটি রেট বাড়তে বাড়তে ৫-এ পৌঁছে গেলে তখন লকডাউনে যেতে হবে, সেক্ষেত্রে অর্থনীতির দোহাই দিলে হবে না, আশা করি সবাই এবারেও গতবারের মতো সংযম দেখাবেন।


এক দর্শনার্থী বলেন, আমাদের ডাবল ডোজ ভ্যাকসিন হয়ে গেছে। ভ্যাকসিনের দুটি ডোজ নেওয়া হয়ে গেলেই কি করোনার সঙ্কট থেকে মুক্তি? চিকিৎসক অভিজিৎ চৌধুরী বলেন, এটা একটা পাগলামি চলছে, গত বছর দুর্গাপুজোয় যেটা বাড়েনি, এবার আশঙ্কিত, তার ভ্যাকসিনের পরেও করোনা হবে না, এটা একদম নয়, ভুল থিওরি, মাথা গোনা বন্ধ করুন।


যাদের জন্য এখনও ভ্যাকসিনেশন শুরুই হয়নি, অর্থাত্‍ সেই শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের নিয়েও ক্রমশ বাড়ছে সংক্রমণের শঙ্কা। কারণ ভিড় ঠেলে মা-বাবার হাত ধরে ঠাকুর দেখতে বেরিয়ে পড়েছে কচিকাঁচারাও। শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ অগ্নিমিতা গিরি সরকার বলেন, টিকা বড়রা পেয়েছেন, শিশুদের হয়নি। সুতরাং আগুনের দিকে নিয়ে যাওয়া বন্ধ করতে হবে।


পুজোর ভিড় থেকে যাতে করোনা সংক্রমণ না ছড়ায়, তার জন্য পুজো কমিটিগুলিকে নানা রকম বিধি নিষেধে বেঁধে দিয়েছে আদালত ও প্রশাসন। কিন্তু সাধারণ দর্শনার্থীরা যদি সচেতন না হন, তাহলে? আশঙ্কা বাড়ছে বিভিন্ন মহলে।