কলকাতা: ভ্যাকসিন পেতে সিরাম ইন্সটিটিউটকে মেল করার 'নাটক' করে দেবাঞ্জন দেব। প্রকাশ্যে এসেছিল এমন তথ্য, তবে কর্মীরা ভ্যাকসিন দেওয়ার জন্য চাপ দিলে মেল পাঠানোর এই অছিলা করে দেবাঞ্জন। আসলে ভ্যাকসিন পাবে না জেনেই মেলে পাঠানোর এই নাটক প্রতারকের। 


এরপরই ভুয়ো টিকা কেনে প্রতারক। পুলিশের জেরায় এমনই চাঞ্চল্যকর স্বীকারোক্তি ভুয়ো IAS অফিসারের। লালবাজার সূত্রে আরও খবর, পুরসভা ছাড়াও পূর্ত দফতর, রাজ্য নির্বাচন কমিশন ও তথ্য সংস্কৃতি দফতরের প্রচুর জাল স্ট্যাম্প উদ্ধার হয়েছে।


ভুয়ো ভ্যাকসিনকাণ্ডে তদন্ত যত এগোচ্ছে, ততই উঠে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। পরতে পরতে প্রতারণার সন্ধান পেয়ে রীতিমতো তাজ্জব বনে যাচ্ছেন লালবাজারের দুঁদে অফিসারররা।


এখনও পর্যন্ত দুটি শিবির খুলে ভুয়ো টিকাকরণ করে দেবাঞ্জন। কেএমসি-র ডেপুটি ম্যানেজারের নাম করে খোলা হয় ভুয়ো মেল আইডি। এখনও পর্যন্ত দেবাঞ্জনের ৮টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের হদিশ। ডব্লিউ বি ফিনকর্প থেকে যেত দেবাঞ্জনের কর্মীদের বেতন, রাজ্য সরকারের অধীনস্থ ফিনকর্পের সঙ্গে যাতে নামে মিল থেকে কর্মীদের সন্দেহ না হয়, তাই এই পদক্ষেপ। একাধিক জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে কেএমসি, পিডব্লুডি-র প্রচুর জাল স্ট্যাম্প উদ্ধার হয়েছে।  জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দেবাঞ্জনের সংস্থার কর্মী-সহ ১০ জনকে তলব করেছে পুলিশ। 


দেবাঞ্জনের প্রতারণার ফাঁদ থেকে বাদ যাননি পারিবারিক বন্ধুও। ভুয়ো ক্যাম্পে ভ্যাকসিন নিয়েছিলেন দেবাঞ্জনের বোনের বান্ধবী।  নথি পাইনি, আসেনি মেসেজও। দাবি স্নেহা সরকারের। 


পরিচিতদেরও প্রতারণার ফাঁদে ফেলেছিলেন দেবাঞ্জন দেব। স্নেহা সরকার। তিনি দেবাঞ্জনের বোনের স্কুলের বন্ধু। ওই তরুণীর দাবি, বন্ধুর দাদা দেবাঞ্জন কলকাতা পুরসভার জয়েন্ট কমিশনার। তাই বিশ্বাস করেই ভুয়ো ক্যাম্প থেকে সপরিবারে ভ্যাকসিন নেন ওই তরুণী ও অন্য বন্ধুরা। দেবাঞ্জনের প্রতারণা-কীর্তির পর্দাফাঁস হওয়ার পর হতবাক পরিচিতরা। 


ধৃত দেবাঞ্জনের বোনের বন্ধু স্নেহা সরকার বলছেন, যুগ্ম কমিশনার জানতাম, পুরসভা থেকে দিচ্ছে বলেছিল, ফলে সন্দেহ হয়নি, তাই ভ্যাকসিন নিই, আমার পরিবার নেয়, বন্ধু ও তাদের আত্মীয়রা নেন। নোটিফিকেশন না পেয়ে বললে চিন্তা করতে বারণ করে, বলেছিল আমি তো আছি চিন্তা করছিস কেন।


স্নেহা আরও জানিয়েছেন, বাবার কোভিশিল্ডের প্রথম ডোজের ২৮ দিনের মাথায় দিয়ে দেয়, দেবাঞ্জন জোর করে দেয়, আধার কার্ড না থাকলেও বলে কোনও অসুবিধা নেই।