রুমা পাল ও সমীরণ পাল, কলকাতা: করোনাকালে এবার আনন্দ উত্সব অন্যরকম। আগের চেনা ছন্দ অনেকটাই উধাও। বিধি মেনে আনন্দ-উদযাপন করলেন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা। 


দেখতে দেখতে পুজো শেষ। চার দিনের আনন্দ উত্সবের ইতি! কিন্তু এই কদিন, ব্যস্ততা ভুলে, উত্সব আনন্দে মেতে উঠেছেন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরাও। দশমীর সকাল, কুমোরটুলি সর্বজনীনের পুজোয় হাজির রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা। মাকে বরণ করেন তিনি। 


করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে, এবছর কুমোরটুলি সর্বজনীনে সিঁদূর খেলা বন্ধ রাখা হয়েছে।  নারী ও শিশু কল্যাণ দফতরের মন্ত্রী শশী পাঁজা জানিয়েছেন, ডবল ডোজ, সবাই মাস্ক পরে। কোনও খেলা হবে না। আমরা শুধু বরণ করব। মাকে বললাম। সারাবছর তোমার আশীর্বাদ সবাইকে দিও।


অন্যদিকে, দশমীর সকালে মধ্যমগ্রামের দিগবেড়িয়ায়, নিজের বাড়ির দুর্গাপুজোয় ধুনুচি নাচে মাতলেন তৃণমূল সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার। ধুনুচি নাচ করেন প্রাক্তন মন্ত্রী সুদর্শন ঘোষ দস্তিদারও। সিঁদুর খেললেন চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যও।


দশমীও চলে গিয়েছে। বেজেছে বিসর্জনের বাজনা৷ এবার উমার শ্বশুরবাড়ি ফেরার পালা। আনন্দে উচ্ছ্বাসে মিশেছে বিষণ্ণতার সুর। মণ্ডপে মণ্ডপে  দেবী-বরণের প্রস্তুতি শেষে মা পাড়ি দিলেন৷ আসছে বছর আবার আসার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আজ দেবী পাড়ি দিলেন কৈলাসে। হল সিঁদুর খেলা, কোলাকুলিতে শুভেচ্ছা বিনিময়, মিষ্টিমুখ৷ হাসি মুখে মাকে বিদায় জানিয়ে আরও একটা বছরের অপেক্ষা৷ বিসর্জনের জন্য গঙ্গার ঘাটে রয়েছে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা৷ এখন শুধু দু’চোখ ভরে মাকে দেখে নেওয়া আর ঢাকের তালে বলে ওঠা, আসছে বছর আবার এসো মা৷


উল্লেখ্য, করোনাকালে কোলাকুলি নেই। শুধুমাত্র হাতজোড় করে নমস্কার জানানোর পালা। তবে বিজয়া মানেই মিষ্টিমুখ। নোনতা হলেও আপত্তি নেই। তাই দশমীর সকাল থেকে উত্তর থেকে দক্ষিণ কলকাতার সর্বত্র সকাল থেকে মিষ্টির দোকানে লম্বা লাইন। চলল রকমারি মিষ্টি কেনা। 


দশমীর সকাল থেকেই গঙ্গার ঘাটে শুরু হয়েছিল বিসর্জন পর্ব। করোনা আবহে ছিল নিয়মের কড়াকড়ি। মণ্ডপ থেকে সরাসরি প্রতিমা আনা হবে গঙ্গার ঘাটে। শোভাযাত্রার অনুমতি দেওয়া হয়নি। শুধুমাত্র ৩ জনকে ঘট বিসর্জনের জন্য গঙ্গায় নামার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। নজরদারির দায়িত্বে ছিলেন ডেপুটি কমিশনার পদমর্যাদার অফিসাররা। বাবুঘাট, গোয়ালিয়র ঘাট, আহিরীটোলা ঘাট, সর্বমঙ্গলা ঘাট-সহ ২৪টি ঘাটে বিসর্জন হয় এদিন। ড্রোনের মাধ্যমে নজরদারি চালায় পুলিশ। রিভার ট্রাফিক পুলিশকেও সতর্ক করা হয়। বোট নিয়ে নদী পথে নজরদারি চালান তাঁরা। প্রতিটি ঘাটে মোতায়েন ছিল বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। ঘাটমুখী রাস্তায় নজরদারির দায়িত্বে ছিলেন ডেপুটি পদমর্যাদার অফিসাররা।