সঞ্চয়ন মিত্র, কলকাতা: আজ দশমী৷ বেজে গিয়েছে বিসর্জনের বাজনা৷ এবার উমার শ্বশুরবাড়ি ফেরার পালা৷ আনন্দে উচ্ছ্বাসে মিশেছে বিষণ্ণতার সুর৷ আর কিছুক্ষণ পরেই মণ্ডপে শুরু হবে দেবী-বরণের প্রস্তুতি৷ আসছে বছর আবার আসার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আজ দেবী পাড়ি দেবেন কৈলাসে৷ এরপর হবে সিঁদুর খেলা, কোলাকুলিতে শুভেচ্ছা বিনিময়, মিষ্টিমুখ৷ হাসি মুখে মাকে বিদায় জানিয়ে আরও একটা বছরের অপেক্ষা৷ বিসর্জনের জন্য গঙ্গার ঘাটে রয়েছে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা৷ এখন শুধু দু’চোখ ভরে মাকে দেখে নেওয়া আর ঢাকের তালে বলে ওঠা, আসছে বছর আবার এসো মা৷


প্রথা মেনে দশমীর সকাল থেকেই বেলুড় মঠে বিশেষ পুজো। সন্ধেয় বিসর্জন। বেলুড়ের মূল মন্দিরে আরতির পর শুরু হবে উমা বিদায়ের মাঙ্গলিক অনুষ্ঠান৷ এরপর প্রথা মেনে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হবে।ষষ্ঠী থেকে নবমী। করোনা আবহেও শোভাবাজার রাজবাড়ির সদস্যরা ব্যস্ত ছিলেন বাড়ির মেয়ে উমার খাতির-যত্নে। তবে দশমীর সকালে বিষাদের সুর। সকালে দশমী পুজোর পর রীতি মেনে প্রথমে দর্পণে প্রতিমা নিরঞ্জন। এরপর দেবীকে বরণ করবেন রাজবাড়ির মহিলা সদস্যরা। কনকাঞ্জলি দিয়ে শুরু হবে উমার বিদায় পর্ব। 


চারদিনের আনন্দের শেষ৷ বাপের বাড়িতে চার দিন কাটিয়ে আজ সন্তানদের নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে ফিরবেন উমা৷ আনন্দের উত্সবে বিষাদের সুর। দেবীকে বিদায় জানাতে গঙ্গার বিভিন্ন ঘাটে শুরু হয়েছে বিসর্জনের প্রস্তুতি। এদিকে, দূষণ রোধে তৎপর কলকাতা পুরসভা। কলকাতা পুরসভার তরফে কৃত্রিমভাবে জলাশয় তৈরি করে বিসর্জনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেখানে হোসপাইপ দিয়ে ধুয়ে ফেলা হবে প্রতিমার রং। এরপর ক্রেন দিয়ে গঙ্গা থেকে প্রতিমার কাঠামো তুলে নিয়ে যাওয়া হবে ধাপায়। বিসর্জন উপলক্ষে গঙ্গার ঘাটে রয়েছে পুলিশের কড়া নজরদারি। 


প্রসঙ্গত, অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে দুর্গার জয় কিংবা রাবণকে পরাস্ত করতে রামের বিজয়লাভের মধ্য দিয়েই দেশজুড়ে অঞ্চলভেদে পালিত হয় বিজয়া দশমী এবং দশেরা উৎসব। শ্রীশ্রীচণ্ডী কাহিনী অনুসারে, দেবীর আবির্ভাব হয় আশ্বিন মাসের কৃষ্ণা চতুর্দশীতে। শুক্লা দশমীতে মহিষাসুর বধ করেছিলেন তিনি। তাই বিজয়া দশমী এই বিজয়কেই চিহ্নিত করেন।