কলকাতা: রবীন্দ্রনাথের আবক্ষ মূর্তির ফলকে নেতা-মন্ত্রীদের সঙ্গে ভুয়ো আইএএস দেবাঞ্জন দেবের নাম থাকা নিয়ে বিতর্ক ওঠার পরই ভাঙা হল তালতলার সেই ফলক। 


বিতর্ক তুঙ্গে ওঠার পর অবশেষে শুক্রবার ভাঙা হল ফলক। তৃণমূলের হেভিওয়েটদের সঙ্গে থাকা দেবাঞ্জনের নাম কালি লেপে মোছা না গেলেও, প্রায় ৪ মাস বাদে তুমুল বিতর্কের পর হাতুড়ির ঘায়ে তা পাকাপাকি মিটিয়ে ফেলা হল। 


২৬ ফেব্রুয়ারি বীন্দ্রনাথের আবক্ষ মূর্তির ফলক প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। রবীন্দ্রনাথের মূর্তির নিচে তৃণমূলের মন্ত্রী থেকে শুরু করে সাংসদ, বিধায়কদের সঙ্গেই জ্বলজ্বল করছিল ভুয়ো আইএএস অফিসার দেবাঞ্জন দেবের নাম। 


বৃহস্পতিবার ভুয়ো ভ্যাকসিনকাণ্ডে এবিপি আনন্দ প্রথমবার এই ফলকের ছবি দেখায়। আর চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে ফলক নিয়ে দায় ঝাড়ার মরিয়া চেষ্টা করে কলকাতা পুরসভা।


এই ঘটনায় উত্তাল হয়ে ওঠে রাজ্য় রাজনীতি। আর গোটা ঘটনায় যে পুরসভা চরম অস্বস্তিতে তার প্রমাণ মিলল খোদ বিদায়ী ডেপুটি মেয়রের কথা থেকেই। 


এদিন পুর প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য অতীন ঘোষ বলেন, ‘যে ফলক বসানো হয়েছিল, তা কলকাতা পুরসভা বসায়নি। পুরসভার অনুমতি নিয়ে ফলক বসানো হয়নি। স্থানীয় কাউন্সিলর আপত্তি জানান। ফলক বসানোর সময় পুরসভার তরফে কেউ যাননি। 


তিনি দাবি করেন, ‘রবীন্দ্র ফলকে অনেকের নাম দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ফলকে নাম থাকলেও কেউ যাননি। স্থানীয় কাউন্সিলরও ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন না।’


অতীন আরও বলেন, ‘যে রবীন্দ্র ফলক তৈরি করা হয়েছিল, সেটি তৈরি করেছে আমাদের সংগঠনের কেউ। কিন্তু রবীন্দ্র ফলক উন্মোচন অনুষ্ঠানে স্থানীয় কাউন্সিলরকে ডাকা হয়নি। সেইজন্য সেই অনুষ্ঠান বয়কট করা হয়েছিল। সেইজন্য নাম থাকা কেউ সেই ফলক উন্মোচন অনুষ্ঠানে যায়নি।’


তিনি স্বীকার করেন, ‘ফলক যাঁরা লাগিয়েছে, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল। শোকজ করা উচিত ছিল। কিন্তু ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, সেটা আমাদের দুর্বলতা।’


তৃণমূল বিধায়ক নয়না বন্দ্যোপাধ্যায় তালতলা থানায় অভিযোগ জানান। নয়নার দাবি, ২৬ ফেব্রুয়ারি মূর্তি উন্মোচন অনুষ্ঠানে ছিলেন না তিনি ও সুদীপ। তাঁদের অনুমতি ছাড়া কীভাবে সুদীপ-নয়নার নাম এল ফলক, সেই প্রশ্ন তোলেন। 


যে গ্রন্থাগার আয়োজিত এই অনুষ্ঠান, তার সম্পাদক সহ সদস্যদের দীর্ঘক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ।