ময়ূখ ঠাকুর চক্রবর্তী ও জয়দীপ হালদার, কলকাতা :  কাঁকুলিয়ায় জোড়া খুনে গ্রেফতার আরও ২ জন। এখনও অধরা মূল অভিযুক্ত ভিকি। ৫০ হাজার টাকায় ৩ জনকে এনেছিল মিঠু হালদার। ১ জনকে আনে ভিকি। উঠে আসছে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য।


গড়িয়াহাটের কাঁকুলিয়া রোডে জোড়া হত্যাকাণ্ডে, আরও দু-জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। আগেই মিঠু হালদার নামে এই মহিলাকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। এবার ধরা পড়ল বাপি মণ্ডল ও জাহির গাজি নামে আরও দু-জন। দু-জনেরই বাড়ি দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার ডায়মন্ড হারবারে। বাপি থাকতেন নাইয়াপাড়ায়। জাহিরের বাড়ি রামরামপুরে। 


লালবাজারের তরফে জানানো হয়েছে, মিঠু হালদারকে জেরা করে এদের নাম জানা যায়। টানা জিজ্ঞাসাবাদে খুনে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে তারা। ধৃত বাপি মণ্ডলের স্ত্রী জানান, জাহির ফোন করেছিল, মিঠু হালদার ডেকে নিয়ে গেছিল।


কাঁকুলিয়া রোডে জোড়া হত্যাকাণ্ডে এই নিয়ে মোট তিনজন গ্রেফতার হল। তবে এখনও অধরা মূল অভিযুক্ত ভিকি-সহ তিনজন। কারণ সূত্রের দাবি, গড়িয়াহাটের কাঁকুলিয়া রোডে জোড়া হত্যাকাণ্ডে সরাসরি যুক্ত ছিল ৫ জন। তিনজন আততায়ীকে মিঠু হালদার এবং একজনকে কাজে লাগিয়েছিল তার ছেলে ভিকি। খুন করার জন্য ৩ জনকে ৫০ হাজার টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল মিঠু। খুনের জন্য ধারালো অস্ত্র কিনেছিল ছেলে ভিকি।


সূত্রের খবর, মিঠু ৩ জনকে কাজে লাগায়। ট্রেনে যাতায়াতের সূত্রে পরিচয়। অপরাধমূলক কাজে যুক্ত ছিল। ৫০ হাজার টাকা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। বাকি ২জনের একজন ভিকি। ভিকি ফার্নরোডে কাজ করত। সেখান থেকে একজনকে জোগাড়। মোট ৫। গড়িয়াহাটের মতো ব্যস্ত এলাকা! সেখানে বিকেল বেলায় তিন তলা বাড়িতে ঢুকে কর্পোরেট কর্তা ও তাঁর গাড়ির চালককে কুপিয়ে খুন! এই কাজ যে এক-দু’জনের পক্ষে সম্ভব নয়, তা প্রথম থেকেই বুঝতে পারছিলেন তদন্তকারীরা। সেই অনুমানই সত্যি প্রমাণিত হতে চলেছে! সূত্রের খবর, রবিবার খুনের ঘটনার আগে, বিকেল ৪টে নাগাদ ট্রেন ধরে বালিগঞ্জ স্টেশনে এসেছিল মিঠু। পরের ট্রেনে আসে তিনজন আততায়ী। ভিকি নিয়ে আসে আরও একজনকে। সূত্রের খবর, বালিগঞ্জ স্টেশনেই অপেক্ষা করছিল মিঠু। বাকি পাঁচজন কাঁকুলিয়া রোডে সুবীর চাকীর বাড়িতে হানা দেয়। সূত্রের দাবি, খুনের পর আততায়ীরা ফোনে মিঠুর সঙ্গে যোগাযোগ করে।


জোড়া খুনে অন্যতম অভিযুক্ত মিঠু হালদার গ্রেফতার হলেও, এখনও অধরা তার বড় ছেলে ভিকি। কাঁকুলিয়া রোডের কাছেই ফার্ন রোর্ডে নির্মীয়মাণ বহুতলে সুপারভাইজারের কাজ করত সে। ভিকির সহকর্মী সুভাষ সরকার বলেন, ভিকি এখানে কাজ করত। ওর থেকে চাবি নিতাম। শেষ চার-পাঁচদিন ছিল, পুলিশ এসেছিল কি না জানি না। অনেকে এসে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল।


স্থানীয় সূত্রে খবর, খুনের পরও, ফার্ন রোডের এই নির্মীয়মাণ বহুতলে এসেছিল ভিকি। সেখানে রক্তমাখা জামাকাপড় ছেড়ে পালিয়ে যায়। সেই রক্তমাখা জামা কি মিঠু হালদার ডায়মন্ড হারবার নিয়ে গেছিল ? জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা।