শারদোৎসবের পর ফের উৎসবের আমেজ। আজ কালীপুজো। শুভ শক্তির হাতে অশুভ শক্তির পরাজয়৷ মঙ্গলারতি দিয়ে শ্যামার আরাধনা শুরু হয়েছে বিভিন্ন মন্দিরে। আলোর উৎসবে ভাসছে কলকাতা। করোনা আবহেও দীপাবলির আনন্দ শহর থেকে জেলায়। 

কালীঘাট ( Kalighat ):  
কলকাতার অভিভাবকরূপে কালীঘাটে বিরাজ করছেন মা দক্ষিণাকালী। সতীর একান্ন পীঠের অন্যতম। কবি ভারত চন্দ্রের লেখায় পাওয়া যায়, ‘কালীঘাটে চারিটি অঙ্গুলি, ডানি পার। নকুলেশ ভৈরব, কালিকা দেবী তাঁর।।’ কথিত আছে, কালীক্ষেত্রের ৩ কোণায় অবস্থান করছেন ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও মহেশ্বর। তাঁর মাঝেই মহাকালীর অবস্থান। এখানে ভৈরবী, বগলা, বিদ্যা, মাতঙ্গী, কমলা, ব্রাহ্মী, মহেশ্বরী ও চণ্ডী সর্বদা বিরাজ করছেন। তাই এই জায়গা কাশী বা  বারাণসীর মতোই মহা পূণ্যভূমি। কালীঘাটে আজ মহালক্ষ্মী রূপে শ্যামা মায়ের আরাধনা।  অলক্ষ্মী বিদায় করে বসা হয় দীপান্বিতা পুজোয়। 

দক্ষিণেশ্বর কালীবাড়ি ( Dakshineswar Kali Temple) : ১৮৫৫ সালে রানি রাসমনি এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। তারপর থেকে রামকৃষ্ণদেবের সাধনাস্থলে পরিণত হয় দক্ষিণেশ্বর মন্দির। কালীপুজোয় চার প্রহরে মা ভবতারিণীর পুজো হয়। এবার পুজো শুরু হবে রাত সাড়ে ১০টার পর। আজ ভোর পাঁচটায় মন্দির খোলে। এরপর মঙ্গলারতি ও ধূপারতি হয়। তবে দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে সাড়ে ৩টে পর্যন্ত বন্ধ থাকবে মন্দির। গতবারের মতো এবারও ফুল, ধূপকাঠি-সহ অন্যান্য সামগ্রী নিয়ে মন্দিরে ঢোকায় নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তবে মিষ্টি নিয়ে ঢুকতে পারবেন ভক্তরা।


ঠনঠনিয়া কালীবাড়ি (Thanthania) : ৩১৮ বছরের পুরনো ঠনঠনিয়া কালী মন্দিরের কালীপুজো। পঞ্চমুণ্ডির আসনের ওপর মাতৃমূর্তির প্রতিষ্ঠা করেন তান্ত্রিক উদয়নারায়ণ ব্রহ্মচারী। ১৭০৩ সালে এই মন্দিরে পুজো শুরু হয়। মাতৃসাধক শঙ্কর ঘোষ প্রতিষ্ঠা করেন আটচালা কালীমন্দির। কালীপুজো উপলক্ষে মন্দিরে ভক্তের ঢল। এখানে দেবীমূর্তি জাগ্রত বলে মনে করেন ভক্তরা। 

লেক কালীবাড়ি (Lake Kalibari) : দক্ষিণ কলকাতার লেক কালীবাড়িতে দক্ষিণাকালীর আরাধনা। সকালে মায়ের মঙ্গলারতির পর পুজো শুরু। ভক্তদের ভিড়। ১৯৪৯ সালে লেক কালীবাড়ি প্রতিষ্ঠিত হয়। মাটির প্রতিমা দিয়ে পুজো শুরু। বর্তমানে মায়ের পাথরের মূর্তি। পুজো হয় তন্ত্রমতে। প্রতিবছর পুরনো ঘট বিসর্জন দিয়ে নতুন করে ঘট প্রতিষ্ঠা হয়।লেক কালীবাড়ির পুজোর এটাই অন্যতম বৈশিষ্ট্য। 


আদ্যা পীঠ ( Adya Pith) : দক্ষিণেশ্বরের মন্দিরের কাছেই আদ্যাপীঠ। কালীপুজোর দিন এখানে পূজিতা হন ছোট মা। আদ্যা মা এখানে বড় মা। তিনি পূজিত হন রামনবমীর দিন। কথিত আছে, অন্নদা ঠাকুর আদ্যাপীঠের পুজোর প্রচলন করেন৷ এরপর থেকে শাস্ত্রীয় রীতি মেনে পূজিত হন শক্তির দেবী। আজ কালী পুজো উপলক্ষে নিয়ম করে দেবীর আরাধনা।সঙ্গে অন্নভোগ। করোনা আবহে এবার বেশ কিছু অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়েছে।