ঋত্বিক মণ্ডল, পার্থপ্রতিম ঘোষ ও সমীরণ পাল, কলকাতা: কামারহাটির মেঘনাদ মাঠে প্রোমোটিংয়ের চক্রান্তের অভিযোগ তুলে ফেসবুক লাইভ মদন মিত্রের। অন্যদিকে, মদন মিত্রের অনুগামীদের বিরুদ্ধেই ক্লাবে তালা লাগানোর পাল্টা অভিযোগ তুলেছে মেঘনাদ স্পোর্টিং ক্লাব কর্তৃপক্ষ। যদিও সব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক।


খেলার মাঠে প্রোমোটিংয়ের চক্রান্ত। ঘটনাস্থল, কামারহাটির মেঘনাদ স্পোর্টিং ক্লাবের মাঠ, এলাকায় যা মেঘনাদ মাঠ বলেই পরিচিত। শনিবার ফেসবুক লাইভে মদন মিত্রের এই বিস্ফোরক অভিযোগ ঘিরে শুরু হয়েছে বিতর্ক। 


কিন্তু সত্যিই কি খেলার মাঠে প্রোমোটারির চক্রান্ত হচ্ছে? চক্রান্ত হলে তার নেপথ্যে কে? এসব প্রশ্নের উত্তর পেতে, ঘটনাস্থলে যেতেই চক্ষুচড়কগাছ। যে মদন মিত্র মেঘনাদ মাঠে প্রোমোটারির চক্রান্তের অভিযোগ তুলেছেন, তাঁর বিরুদ্ধেই পাল্টা অভিযোগ তুলল স্থানীয় ক্লাব কর্তৃপক্ষ।


মেঘনাদ স্পোর্টিং ক্লাবের সভাপতি বিশ্বজিত্‍ চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, এখানে কোনও প্রোমোটিংয়ের বিষয় নেই। যদি হয় তাহলে উনিই করছেন। প্রায় তিন বিঘা জমির ওপরে কামারহাটির মেঘনাদ মাঠ। ফুটবল খেলার এই মাঠ চারদিক থেকে ঘেরা। ১৯৫৫ সালে তৈরি ‘মেঘনাদ স্পোর্টিং ক্লাবে’র সদস্যরাই এই মাঠ দেখভাল করেন। কর্তৃপক্ষের দাবি, গত ৭ অক্টোবর মদন মিত্রের অনুগামীরা এই মাঠে ইলিশ উত্‍সব করার কথা বলেন। ক্লাব কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, এই বিষয়ে তাদের একটি চিঠি দেওয়ার কথা বললেও, সেই চিঠি দেওয়া হয়নি। 


আরও অভিযোগ, সেই ইলিশ উত্‍সবের পরেই ক্লাবের গেট, এমনকি মাঠে প্রবেশের গেটেও তালা লাগিয়ে দিয়েছে মদন মিত্রের লোকজন। 


মেঘনাদ স্পোর্টিং ক্লাবের সভাপতি বিশ্বজিত্‍ চট্টোপাধ্যায় এ প্রসঙ্গে বলছেন, মদন মিত্রর লোকজন গেটে তালা দিয়ে চলে গিয়েছে। ক্লাবে তালা দিয়েছে। মদনের অনুগামী বুম্বা বলছে, মদন বললে ফেরত দেব। প্রোমোটিংয়ের কোনও গল্পই নেই এখানে। এখন তো মনে হচ্ছে, উনিই দখল করতে চাইছেন। এখানে কোনও প্রোমোটিংয়ের বিষয় নেই। হলে উনিই করছেন। মদন কাল যা বলেছে তা সত্যি নয়।


যদিও এদিন সকালে ক্লাব কর্তৃপক্ষের অভিযোগ পত্রপাঠ খারিজ করে দেন মদন মিত্র। তাঁর কথায়, দুষ্কৃতীরাজ তো এখনও আছে ওখানে। আমার কাছে চাবি নেই। যার কাছে চাবি আছে ফেরত দিয়ে দেব। মদন মিত্রকে প্রোমোটিং করতে লাগে না। দেখিয়ে দেব ক্লাবে কত অনুদান পেয়েছেন, কত টাকা খরচ করেছেন।


সন্ধেয় কামারহাটি যান মদন মিত্র। মেঘনাদ ক্লাব চত্বরে গিয়ে ক্লাব কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এরপর মদন মিত্র বলেন, আমার কাছে খবর এসেছিল একটা প্রোমোটার চক্রান্ত করছে। তাই বলেছিলাম। নিজের হাতের পাঞ্জা কেটে নেওয়ার কথা বলেছিলাম। মাঠকে রক্ষা করব। এই ক্লাবের অবস্থা খারাপ। সব মিলিয়ে ফেসবুক লাইভে তোলা মদন মিত্রের অভিযোগ ঘিরে তুঙ্গে উঠেছে তরজা।