কলকাতা: আলিপুর চিড়িয়াখানায় সিংহের আক্রমণে আহত ১ ব্যক্তি। সূত্রের খবর, এনক্লোজার টপকে খাঁচার মধ্যে ঢুকে পড়ে এক ব্যক্তি। তাঁর শরীরে সিংহের আঁচড় পাওয়া গিয়েছে। আহত ব্যক্তি আপাতত এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তবে নিরাপত্তা সত্ত্বেও কী করে ওই ব্যক্তি খাঁচার মধ্যে ঢুকে পড়ল তা এখনও জানা যায়নি।


আহত ওই ব্যক্তির নাম গৌতম গুছাইত। তিনি পটাশপুরের বাসিন্দা। জানা গিয়েছে টিকিট কেটে সাধুর বেশে চিড়িয়াখানায় ঢোকেন ওই ব্যক্তি। সিংহের থাবায় ওই ব্যক্তির পা ভেঙে গিয়েছে। আঘাত রয়েছে মাথাতেও। আহত ব্যক্তি মানসিক ভারসাম্যহীন বলে অনুমান। সম্প্রতি চিড়িয়াখানা থেকে চুরি হয়েছিল বেশ কয়েকটি দামি পাখি। আজ, শুক্রবার সিংহের খাঁচায় ওই ব্যক্তির প্রবেশ করার ঘটনায় প্রশ্ন উঠছে চিড়িয়াখানার নিরাপত্তা নিয়ে। চিড়িয়াখানার চারিদিকে কড়া নিরাপত্তা থাকতেও কী করে ওই ব্যক্তি খাঁচায় ঢুকে একেবারে সিংহের কাছে পৌঁছে গেলেন, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।


আলিপুর চিড়িয়াখানায় নিজের এনক্লোজারে খোশমেজাজেই ছিল ‘বিশ্বাস’ নামের সিংহটি। হঠাত্‍ই পাঁচিল টপকে সেই এনক্লোজারে ঢুকে পড়েন গৌতম গুছাইত নামের এই ব্যক্তি। পরনে গেরুয়া পোশাক। নির্বিকারভাবে তিনি চলে যান একেবারে সিংহের গুহার সামনে!


পশুরাজই বা নিজের এলাকায় বহিরাগতকে মেনে নেবে কেন! থাবা মেরে তাঁকে টেনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে সে। খাঁচার ভিতরে পড়ে ছটফট করতে থাকেন গৌতম গুছাইত। কাছেই ছিলেন সিংহের পালক। তিনিই ওই সময় নিরাপত্তাকর্মীদের ডাকেন। ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করে এসএসকেএমে নিয়ে যাওয়া হয়।হাসপাতাল সূত্রে খবর, পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুরের বাসিন্দা গৌতম চিকিত্‍সকদের জানিয়েছেন, তিনি নাকি সিংহটিকে খাঁচা বাইরে বের করতে চেয়েছিলেন! সিংহের আঁচড়ে তাঁর ডান কাঁধ ও ডান পায়ে গভীর ক্ষত তৈরি হয়েছে। সারা শরীরে রয়েছে আঁচড়ের দাগ! ১৯৯৬ সালে আলিপুর চিড়িয়াখানাতেই শিবা নামে একটি বাঘকে মালা পরাতে এনক্লোজারে ঢুকে পড়েন এক ব্যক্তি। 


বাঘের কামড়ে তাঁর মৃত্যু হয়। চারবছর বাদে, এনক্লোজারে ঢুকে বব নামের একটি বাঘের আক্রমণে মৃত্যু হয় আরও এক যুবকের! ২০১৪ সালে দিল্লির চিড়িয়াখানা থেকে সামনে এসেছিল এই ভয়াবহ ছবি। বাঘের এনক্লোজারে পড়ে যান এক যুবক। 


ঘাড়ে কামড়ে ধরে তাকে টেনে নিয়ে যায় বাঘ। ২০১৯-এ দিল্লি চিড়িয়াখানাতেই সিংহের খাঁচায় ঢুকে পড়েন আরেকজন! তবে বরাত জোরে বেঁচে যান তিনি! এবার কলকাতার এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠছে চিড়িয়াখানায় নজরদারি নিয়ে। আহত ব্যক্তির পরিবারের দাবি, তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন। আপাতত তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল। এসএসকেএমেই পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।