অনির্বাণ বিশ্বাস এবং দীপক ঘোষ, কলকাতা: ভয়ঙ্কর করোনা আবহের মধ্যেই দাপট দেখাচ্ছে ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়া। তুঙ্গে রাজনৈতিক তরজা। মশা বাহিত রোগে আক্রান্ত ও মৃতের পরিসংখ্যান চাপা দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। রাজ্য সরকারের সমালোচনা বিজেপির। ওদের কথায় মানুষ গুরুত্ব দেয় না। পাল্টা কটাক্ষ তৃণমূলের।


আগামী মাসেই কলকাতায় পুরভোট। তার আগে ডেঙ্গি নিয়ে চড়ছে রাজনৈতিক তরজার পারদ। এখনও রাজ্যে প্রতিদিন, ৮০০ জনের বেশি করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। দৈনিক মৃতের সংখ্যা রয়েছে ১০-এর ওপরে। তার মধ্যে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়ার মতো মশাবাহিত রোগও। সম্প্রতি ডেঙ্গি আক্রান্ত হয় মৃত্যু হয় বিধাননগর পুর-এলাকার বাসিন্দা, শতাব্দী সাহা নামে এক গৃহবধূর। ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়ার প্রকোপ ঠেকাতে পুরসভা এবং রাজ্য সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরগুলিকে সতর্ক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিধানসভায় দুই অসুখে আক্রান্তের পরিসংখ্যানও পেশ করেন তিনি। 


মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, "২০২০ সালে ৮৪ হাজার জনের ডেঙ্গি পরীক্ষা করা হয়েছিল। তাতে আক্রান্তের হার ছিল ২.৬%। এ বছর এক লক্ষ ৮৬ হাজার মানুষের ডেঙ্গি পরীক্ষা হয়েছে। এ বারে আক্রান্তের হার ১.৬%। গত বারে ৬ জন এবং এ বারে ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।" 


আরও পড়ুন, বাংলায় MA, TET পাস; সংসার চালাতে ভরসা আজ চপের দোকান


যদিও বিরোধীদের দাবি, রাজ্য সরকার ডেঙ্গি আক্রান্তের পরিসংখ্যান চাপার চেষ্টা করছে। রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, "যখন ডেঙ্গি ম্যালেরিয়া চাপার চেষ্টা করছেন। দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয় দিয়ে গোয়া ত্রিপুরায় যাচ্ছে। মানুষকেই রুখে দাঁড়াতে হবে। যদিও পাল্টা জবাব এসেছে তৃণমূলের তরফেও। তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, "বামেরা পুরসভায় বোর্ড চালিয়েছে আর বিজেপি তাদের তো কোন অভিজ্ঞতাই নেই আগে কলকাতা শহর অযত্নে থাকত এখন সফল অনেক বেশি যত্ন থাকে। এগুলো মরশুমি সমস্যা তার মধ্যে থেকেও এটা দেখতে হবে যে কোন কিছু ঘটলে প্রশাসন কতটা নমনীয় কতটা দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পারছে তাই বামেরা এবং বিজেপি তারা কি বলল এটা মানুষকে ব্যাটা গুরুত্ব দেয় না এখন।


তবে এই প্রেক্ষাপটে মানুষকেই সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন কলকাতার পুর প্রশাসক। কলকাতা পুরসভার বোর্ড অফ অ্যাডমিনিস্ট্রেটর্স-এর চেয়ারপার্সন ফিরহাদ হাকিম বলেন, "ডেঙ্গু পরিস্থিতি যাতে নিয়ন্ত্রণ থাকে আপ্রাণ চেষ্টা করছি। প্রচার চলছে। এখন নিয়ন্ত্রণে। সকলকে সচেতন হতে হবে। ময়লা যেখানে সেখানে ফেলা যাবে না। পরিষ্কার যাতে থাকে সেটা দেখা আমাদের কাজ। তাহলে অসুখ হবে না আমাদের।" 


প্রসঙ্গত, করোনা সংক্রমণের আতঙ্ক এখনও পিছু ছাড়েনি। তার মধ্যে ডেঙ্গির থাবা উদ্বেগ আরও বাড়াচ্ছে।