কলকাতা : রাজ্যে ভোট পরবর্তী অশান্তির অভিযোগ নিয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্ট ঘিরে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। রিপোর্টের কড়া সমালোচনা করে একাধিকবার মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেছেন, তাঁর সরকার শপথ নেওয়ার পর হিংসার ঘটনা ঘটেনি। বৃহস্পতিবারও একই দাবি করেন তিনি। 


ঘটনাচক্রে, বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টে এই মামলার শুনানিতে রিপোর্টকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে অভিযোগ করেন রাজ্যের আইনজীবী। পাল্টা মামলাকারীর আইনজীবীর অভিযোগ, রাজ্যে গুজরাত হিংসার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, এদিন ৫ বিচারপতির বেঞ্চে রাজ্যের তরফে সওয়াল করেন অভিষেক মনু সিংভি। মামলাকারীর পক্ষে অংশ সওয়াল করেন মহেশ জেঠমালানি। 


আদালত সূত্রে খবর, অভিষেক মনু সিংভি অভিযোগ করেন,  NHRC-র রিপোর্টে একাধিক অসঙ্গতি রয়েছে। ভোটের আগের ঘটনারও উল্লেখ রয়েছে। NHRC-র মতো নিরপেক্ষ সংস্থার কাছে এটা কাম্য নয়। এটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত রিপোর্ট। 
আদালত সূত্রে খবর, মহেশ জেঠমালানির পাল্টা দাবি,   রাজ্যে গুজরাত হিংসার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। অবিলম্বে নিরপেক্ষ সংস্থা দিয়ে তদন্ত প্রয়োজন। যে পুলিশ আক্রান্তদের ভয় দেখাচ্ছে, তারা তদন্ত করবে কেন? 

এই মামলায় ফের শুনানি হবে ২৮ জুলাই।  রাজ্য সহ কেউ এই মামলায় হলফনামা জমা দিতে চাইলে দিতে হবে ২৬ জুলাইয়ের মধ্যে।  গত ১৫ জুলাই হাইকোর্টে জমা পড়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্ট। 
আদালত সূত্রে খবর, সেই রিপোর্টে বলা হয়, পশ্চিমবঙ্গে আইনের শাসন বলে কিছু নেই। আছে শাসকের আইন। পাশাপাশি, ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনায় সিবিআই তদন্তের সুপারিশও করে কমিশন।


রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসার চূড়ান্ত রিপোর্ট  কলকাতা হাই কোর্টে জমা দেয় জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। বৃহস্পতিবার ওই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসে। রিপোর্ট অনুযায়ী, রাজ্যে বিভিন্ন জেলা মিলিয়ে ১৫ হাজারেরও বেশি মানুষ ভোট-পরবর্তী হিংসার শিকার হয়েছেন। এছাড়াও আরও কিছু চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তোলা হয় ওই রিপোর্টে। যেমন, খুন, ধর্ষণ, শ্লীলতাহানি, বাড়িঘর ভাঙচুর, অগ্নি সংযোগের মতো ঘটনা ঘটেছে ভোট পরবর্তীতে, অভিযোগ রয়েছে কমিশনের রিপোর্টে। ভর্তসনা করা হয় রাজ্য পুলিশকেও। শুধু তাই নয়, ওই রিপোর্ট তাবড় নেতাদের ‘দুষ্কৃতী’ হিসাবে উল্লেখ করা হয়। ' জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, পার্থ ভৌমিক, উদয়ন গুহরা কুখ্যাত দুষ্কৃতী। শওকত মোল্লা, শেখ সুফিয়ান, কেরিম খানরা গুন্ডা। ' ভোট পরবর্তী অশান্তি নিয়ে চূড়ান্ত রিপোর্টের সঙ্গে দেওয়া অ্যানেক্সচারে বিস্ফোরক দাবি করে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। 


'পশ্চিমবঙ্গে আইনের শাসন বলে কিছু নেই। আছে শাসকের আইন।' , ভোট পরবর্তী অশান্তির অভিযোগের প্রেক্ষিতে, ব্যাঙ্গাত্মকভঙ্গীতে এই ভাষাতেই রাজ্য সরকারের ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করা হয় জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্টে। 


Education Loan Information:

Calculate Education Loan EMI