কলকাতা: আজকের দিনে মানুষ মারাত্মক রকমের টেক স্যাভি (Tech Savy) হয়ে গিয়েছে। যেকোনও কিছুই হচ্ছে প্রযুক্তির (Technology) মাধ্যমে। ব্যাঙ্ক অ্য়াকাউন্ট (Bank Account) খোলা থেকে তাতে টাকা জমা দেওয়া কিংবা কাউকে টাকা পাঠন, এক নিমেষে হয়ে যাচ্ছে প্রযুক্তির উন্নতির দৌলতে। আর সাইবার অপরাধীরাও ফাঁদ পাতছে সেখানেই। একটু অসতর্ক হলেই ফাঁকা হয়ে যেতে পারে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট। আজকের দিনে মোবাইল খুললে কিংবা মেল খুললেই ব্যাঙ্ক অ্য়াকাউন্ট খোলার নানা মেসেজ আসে কম-বেশি সকলেরই। অনেকেই ইন্টারনেটে ব্যাঙ্ক অ্য়াকাউন্ট খোলার বিজ্ঞাপন দেখে তার মাধ্য়মে অ্য়াকাউন্ট খোলেন। কিন্তু সেখানেই ফাঁদ পেতেছে প্রতারকরা। ইন্টারনেটে বিজ্ঞাপন (Advertisement) দেখে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলার সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে সচেতন করছে কলকাতা পুলিশ।


ইন্টারনেটে বিজ্ঞাপন দেখে ব্যাঙ্ক অ্য়াকাউন্ট খোলায় সতর্ক করছে কলকাতা পুলিশ-


এদিন নিজেদের সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডলে দীর্ঘ একটি পোস্ট করা হয়েছে কলকাতা পুলিশের (Kolkata Police) পক্ষ থেকে। তারা লিখেছেন, 'ধাঁধার থেকেও জটিল মনে হবে, অথচ ব্যাপারটা আসলে স্পষ্ট। এপ্রিল মাসের গোড়ার দিকে ইন্টারনেটে বিজ্ঞাপন দেখে একটি নামী বেসরকারি ব্যাঙ্কে ফিক্সড ডিপোজিট চালু করার সিদ্ধান্ত নেন কসবা থানা অঞ্চলের এক বাসিন্দা। সেইমতো বিজ্ঞাপনে দেওয়া আপাতদৃষ্টিতে সেই ব্যাঙ্কের ওয়েবসাইট লিঙ্কে ক্লিক করে নিজের রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট থেকে ৪ লক্ষ টাকা অনলাইন ট্রান্সফার করেন তিনি। টাকা ট্রান্সফার হয় 'বিলডেস্ক পেমেন্ট' (Billdesk Payment) নামক আর্থিক লেনদেন পরিষেবা অথবা 'পেমেন্ট গেটওয়ে'-র মাধ্যমে। তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা কেটে নেওয়া হলেও তা যে ফিক্সড ডিপোজিট অ্যাকাউন্টে জমা পড়েনি, সেকথা কিছুদিন পরেই টের পান আমানতকারী। নিজের ব্যাঙ্কে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, ৪ লক্ষ টাকা জমা পড়েছে সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি অ্যাকাউন্টে। যার মালিক 'বিলডেস্ক পেমেন্ট সার্ভিসেস' (Billdesk Payment Services) নামক সংস্থা। আমাদের সাউথ সাবার্বান ডিভিশনের (যাদবপুর ডিভিশন) সাইবার বিভাগে এবার অভিযোগ করেন আমানতকারী, এবং তদন্তে নেমে আমরা বুঝতে পারি, যে বিজ্ঞাপন দেখে ফিক্সড ডিপোজিট খোলার কথা ভেবেছিলেন তিনি, সেটি ভুয়ো। সুতরাং বিজ্ঞাপনে যে লিঙ্ক দেওয়া ছিল, তাতে ক্লিক করলে ফিক্সড ডিপোজিটের ফর্ম খোলেনি, খুলেছে  'বিলডেস্ক পেমেন্ট সার্ভিসেস'-এর পেজ। এবং গোটা লেনদেনের প্রক্রিয়াটিকে দেখানো হয়েছে বিল পেমেন্ট হিসেবে। আনন্দের কথা, পুরো টাকাটাই উদ্ধার করতে পেরেছি আমরা। '


আরও পড়ুন - New Emergency Number: জরুরি নম্বরে গুরুত্বপূর্ণ বদল, এবার এক ফোনেই পুলিশ-দমকল-হাসপাতাল


তারা আরও লিখছে, 'সব শেষে বলে রাখি, 'বিলডেস্ক' নামক টাকা লেনদেন পরিষেবা সংস্থা সত্যিই আছে, কিন্তু তাদের নাম শুধুই বিলডেস্ক, আগে পরে আর কিছু নেই। একথা বলার উদ্দেশ্য এই যে, কোনোরকম অনলাইন লেনদেন করা সময় প্রতিটি পদক্ষেপ নেওয়ার আগে যাচাই করে নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। তাহলে হয়তো স্পষ্ট হয়ে যাবে, 'বিলডেস্ক পেমেন্ট সার্ভিসেস' জাতীয় সংস্থার কোনও অস্তিত্ব নেই, থাকে না।
 কলকাতা পুলিশ সদাই সতর্ক, সজাগ, এবং দায়বদ্ধ।'- অপরিবর্তিত।